শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৩৬ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনামঃ
ভারতীয় ৪৪০ বোতল মদসহ পিকআপ ভ্যান আটক শ্রীবরদীতে তালা ভেঙ্গে পরীক্ষা নিলেন ইউএনও মাভাবিপ্রবিতে অপ্রীতিকর অবস্থায় পরকীয়া প্রেমিকের সাথে আটক দুই সন্তানের মা প্রার্থিতা স্থগিতের পর নতুন চমক, নাদিরা মিঠু বিএনপির মনোনীত প্রার্থী কাস্তের আঘাতে কলেজছাত্রী জখম, অভিযুক্ত সজীব জনতার হাতে আটক ডিমলায় কৃষকদের মাঝে সার ও ধান বীজ বিতরণ দোয়ারাবাজার সীমান্তে চেলা নদীতে বালু উত্তোলনকালে মাটি চাপায় যুবক আহত মাদারীপুরে ২৪ ঘন্টার আলটিমেটাম দিয়ে অবরোধ তুলে নিলেন শিক্ষার্থী চারঘাটে পৌরসভা মাস্টার প্ল্যান সংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শকরণ সভা চারঘাটে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তির কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত লালপুরে ছেলের প্রতি অভিমান, মায়ের মর্মান্তিক আত্মহত্যা ঝিনাইদহে ৩ বছরের সাবার লাশ মিলল প্রতিবেশীর ঘরে সলিয়াবাকপুরে শ্রমিকদলের আয়োজনে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া মোনাজাত কমলনগরে চকলেট ও টাকার লোভ দেখিয়ে শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা বাউফলে মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলের আগুনে পুড়ে গেল ঘর খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় পবিপ্রবি জিয়া পরিষদের মিলাদ ও দোয়া মাহফিল শিবচরে বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘Career Path and Higher Education Expo-2025’ অনুষ্ঠিত শেরপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আমিনুল ইসলামের নির্বাচনী আলোচনা সভা নাসির নগরে ০৮ বছরের এক শিশুকে ধর্ষনের পর হত্যার অভিযোগ

ছাদ ধসের কারণ জানতে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউজিসির পরিদর্শন

 

আবু তাহের, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিঃ

ময়মনসিংহের ত্রিশালে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ১০ তলা ছাত্র হল ভবনের ছাদ ধসের ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি।

রবিবার (৩ আগস্ট) দুপুরে তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন ইউজিসির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান ভূঁইয়া। তার সঙ্গে ছিলেন কমিটির সদস্য সচিব, সহকারী পরিচালক প্রকৌশলী তানভির মোরশেদ, অতিরিক্ত পরিচালক সুরাইয়া ফারহানা এবং সিনিয়র সহকারী পরিচালক প্রকৌশলী মোশারফ হোসেন।

তারা পরিদর্শনের সময় বেইজে খুঁটির সংখ্যা, খুঁটির মাঝের দূরত্ব, নকশার সঙ্গে কাজের সামঞ্জস্যতা, স্টিলের খুঁটির পরিবর্তে বাঁশের ব্যবহার, স্টেজিং, সেন্টারিং, সাটারিং এবং ব্যবহৃত মালামাল ইত্যাদি পর্যবেক্ষণ করেন। তদন্ত চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তর এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলীদের মধ্যে একে অপরের ওপর দায় চাপানোর প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী রাহাত হোসেন দিদার বলেন, “আমি সাইট ইঞ্জিনিয়ারকে ভবনে কিছু ত্রুটির বিষয় জানাই। এসব কাজ ঠিক করার পর অনুমতি সাপেক্ষে ঢালাই শুরুর কথা ছিল। কিন্তু সেদিন এসে দেখি, তারা অনুমতি ছাড়াই ঢালাই শুরু করে দিয়েছে।”

অন্যদিকে, ভবনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নিয়োগকৃত সাইট ইঞ্জিনিয়ার দাবি করেন, “আমরা অনুমতি ছাড়া কোনো কাজ করি না। ঢালাই শুরুর সময় ইঞ্জিনিয়ার উপস্থিত ছিলেন এবং তার সম্মতিতেই কাজ শুরু হয়। এ বিষয়ে আমাদের ছবিও রয়েছে। অনুমতি না থাকলে তিনি বাধা দিতেন।” তবে তিনি এ বিষয়ে কোনো লিখিত অনুমতির কাগজ দেখাতে পারেননি।

এছাড়া, ঢালাই শুরুর সময় প্রকল্প পরিচালক মো. মোফাছিরুল ইসলাম উপস্থিত না থাকার কারণ হিসেবে ‘ব্যস্ততা’র কথা জানান।

ঘটনাস্থলে কর্মরত কিছু শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ছাদ ধসের উৎপত্তিস্থল ছিল ভবনের করিডোরের দেয়াল। সেখানে বিমের সঙ্গে কলামের পর্যাপ্ত সংযোগ ছিল না বলেও অভিযোগ ওঠে। তবে প্রকল্প পরিচালক বলেন, “এই নকশায় আগেও ছাত্রী হলের কাজ হয়েছে, তাই এখানে সমস্যা হওয়ার কথা নয়।”

তিনি আরও জানান, “১০ তলা ভবনের কলামের মাঝে ছিদ্র করে বিমের রড ঢোকানো হয়—এটা নকশা অনুযায়ী করা হয়েছে। এখন তদন্তেই জানা যাবে নকশায় কোনো ত্রুটি ছিল কিনা বা অন্য কোনো গাফিলতি ছিল কিনা। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

পরিদর্শন শেষে সিনিয়র সহকারী পরিচালক প্রকৌশলী মোশারফ হোসেন বলেন, “ধ্বংসস্তূপ পরিদর্শনে দেখা গেছে, রডগুলো নকশা অনুযায়ী ছিল। তবে প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে খুঁটির স্থাপন, খুঁটির মাঝখানের দূরত্ব ও স্ক্যাফোল্ডিং নকশা অনুযায়ী হয়নি। স্ট্রাকচারাল বিষয়গুলোতেও অসঙ্গতি রয়েছে। ঢালাইয়ের আগে কনসালটিং ইঞ্জিনিয়ার, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ার ও সাইট ইঞ্জিনিয়ারের সম্মিলিত চেকলিস্ট থাকা উচিত ছিল, কিন্তু তা পাওয়া যায়নি। সবচেয়ে বিস্ময়কর বিষয় হলো, সিডিউলে বাঁশ ব্যবহারের কোনো নির্দেশনা না থাকলেও এখানে বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছে। তাছাড়া ভবনের উচ্চতার অনুপাতে পর্যাপ্ত ‘ডেসিং’ (সমর্থন কাঠামো) ছিল না।”

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, “তদন্ত কমিটি সরেজমিনে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট পর্যবেক্ষণ ও চিত্র ধারণ করেছে। ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস চাওয়া হয়েছে। সেগুলো পাওয়ার পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সম্ভব হবে।তদন্ত শেষে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।”

উল্লেখ্য, গত ৩১ জুলাই বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্রোহী হলের পাশে নির্মাণাধীন ১০ তলা ছাত্রাবাসের দ্বিতীয় তলার সঙ্গে সংযুক্ত এক্সটেনশন (পার্কিং) ভবনের ছাদ ধসে পড়ে। এতে অন্তত ১১ জন নির্মাণ শ্রমিক আহত হন। পরবর্তীতে, ১ আগস্ট এ ঘটনার তদন্তে চার সদস্যের কমিটি গঠন করে ইউজিসি।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩