রবিবার, ২০ Jul ২০২৫, ০৬:৫৭ অপরাহ্ন
কুয়েট প্রতিনিধিঃ
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ছাত্ররাজনীতি কেন্দ্রিক সহিংসতার পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো অচলাবস্থা কাটেনি। আজ রবিবার (২০ জুলাই) দীর্ঘদিন পর শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে ফিরে এলেও অনুপস্থিত ছিলেন শিক্ষকরা। উপাচার্য না থাকায় প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারায় সংকট আরও দীর্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
প্রায় সাড়ে সাত হাজার শিক্ষার্থী বর্তমানে সেশনজটে পড়েছেন। তাদের মধ্যে বিশেষ করে ২১-২২ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা আগের ঘোষণা অনুযায়ী আজ ক্লাসে ফিরে আসেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘রক্তাক্ত কুয়েট’ নামের একটি পেজ থেকে শনিবার (১৯ জুলাই) এক পোস্টে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে আসার আহ্বান জানানো হয়। পোস্টে লেখা হয়, “সকল জরা-জীর্ণতা ঝেড়ে ফেলে নেতিবাচকতাকে রেড কার্ড দেখিয়ে আমরা সবাই আগামীকাল ক্লাসে ফিরি।”
ক্লাসে ফিরে শিক্ষার্থীরা সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। এক শিক্ষার্থী জানান, শিক্ষকরা ক্লাস শুরুর বিষয়ে আন্তরিকতা প্রকাশ করেছেন এবং বলেছেন, একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি হলে ক্লাস ও পরীক্ষা শুরু হবে। শিক্ষকদের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের ইতিবাচক অবস্থানের প্রশংসাও করা হয়।
অন্যদিকে শিক্ষকদের ক্লাসে ফিরে আসার আহ্বানে আজ সকালে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা। গত ১৭ জুলাই ‘গার্ডিয়ান ফোরাম’ ঢাকা থেকে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান বরাবর ক্লাস চালুর দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করে।
২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী আরিফ আলমাস রহমান তার ফেসবুক প্রোফাইলে লিখেন “আমি আরিফ আলমাস রহমান, ডিপার্টমেন্ট অফ ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যাচ- ২ কে ২১আমরা আজ ক্লাসে ফিরেছি এবং শিক্ষকরাও আমাদের ক্লাসে ফেরাকে স্বাগত জানিয়ে কিছু প্রাতিষ্ঠানিক জটিলতা কাটিয়ে এর মধ্যেই ক্লাসে ফেরার পূর্ণ চেষ্টার আশ্বাস জানিয়েছেন-যারা এখনো ক্যাম্পাসে এসে পৌছাও নি তোমরা ক্লাসে ফিরছো তো?”
এ বিষয়ে কুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক আবদুল্লাহ ইলিয়াস আক্তার বলেন, “আমাদের অভিভাবক উপাচার্য ছাড়া কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না। ক্লাস নেওয়া সম্ভব, কিন্তু পরে কোনো বিশৃঙ্খলা হলে সেটি কে সামলাবে?”
উল্লেখ্য, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। আন্দোলনের জেরে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যকে অপসারণ করে সরকার। ১ মে চুয়েটের অধ্যাপক হজরত আলীকে কুয়েটের অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলেও শিক্ষক সমাজের বিরোধিতার মুখে ২২ মে তিনি পদত্যাগ করেন।
পরবর্তী সময়ে, ১০ জুন উপাচার্য নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলেও এখন পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতন-ভাতা কার্যক্রম চালাতে ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ জামিনুর রহমানকে সাময়িক আর্থিক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
কবে নাগাদ কুয়েটে পূর্ণাঙ্গ প্রশাসনিক কাঠামো গড়ে উঠবে এবং শিক্ষাকার্যক্রম স্বাভাবিক হবে, সে প্রশ্নের কোনো সুস্পষ্ট উত্তর নেই এখনো।
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩