শনিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৫, ০৪:১৮ অপরাহ্ন
আবদুল্লাহ আল শাহিদ খান, ববি প্রতিনিধিঃ
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ ও রেজিস্ট্রার—এই তিনটি শীর্ষ পদ গত তিন মাস ধরে শূন্য পড়ে আছে।
এর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য থাকায় মূল নির্বাহী পদটিও কার্যত শূন্য অবস্থায় রয়েছে। এতে প্রশাসনিক কাজে অনাস্থা ও স্থবিরতা তৈরি হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলেও এখনো নিয়োগ দেওয়া হয়নি। গত ১৩ মে শিক্ষার্থীদের ২৯ দিনের আন্দোলনের পর বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। একই দিনে প্রথম উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মামুন আর রশিদকেও অব্যাহতি দেয় মন্ত্রণালয়। এর আগে ৩ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৮তম সিন্ডিকেট সভায় রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলামকে অবসরে পাঠানো হয়।
১৩ মে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৌফিক আলমকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে স্থায়ী নিয়োগ না হওয়ায় প্রশাসনের ভেতরে অনাস্থা দেখা দিয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য সাধারণত দীর্ঘমেয়াদি বা বড় ধরনের সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় অনেক কাজ ঝুলে আছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপ-উপাচার্য হিসেবে অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী ৩০ অক্টোবর ২০১৯-এ দায়িত্ব নেন। তবে গত ১৩ মে থেকে পদটি শূন্য রয়েছে, ফলে উপাচার্যের ওপর কাজের চাপ বেড়েছে। দীর্ঘদিন এ পদ শূন্য থাকলে প্রশাসনিক ও একাডেমিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে জটিলতা দেখা দিতে পারে।
বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী কোষাধ্যক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অপরিহার্য পদ। তিনি আর্থিক নীতি, বাজেট, সম্পত্তি ও বিনিয়োগ তদারকি করেন। গত বছর ১৯ ডিসেম্বর অধ্যাপক ড. মামুন আর রশিদ এই পদে নিয়োগ পান, কিন্তু ১৩ মে থেকে পদটি শূন্য। এতে বাজেট অনুমোদন, আর্থিক চুক্তি ও বিনিয়োগ পরিচালনায় জটিলতা তৈরি হয়েছে। বর্তমানে রেজিস্ট্রার বা উপাচার্যকে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে।
৩ মে থেকে রেজিস্ট্রার পদও শূন্য। যদিও ইউজিসির নির্দেশনা অনুযায়ী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে পদ পূরণের কথা, বর্তমানে অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছেন ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক মো. মুহসিন উদ্দীন। অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকার কারণে প্রশাসনিক ও একাডেমিক কাজের ভারসাম্য রক্ষা কঠিন হয়ে পড়েছে।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, দীর্ঘদিন পদগুলো শূন্য থাকায় প্রশাসনিক কাজ স্থবির হয়ে পড়েছে। একজনের ওপর একাধিক দায়িত্ব দেওয়ায় কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তারা দ্রুত পদগুলোতে নিয়োগ দিয়ে সংকট নিরসনের দাবি জানিয়েছেন।
জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. হাফিজ আশরাফুল বলেন, ‘সাধারণত একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি, প্রো-ভিসি ও ট্রেজারার—এই তিনজনের কাজ একজন মানুষের জন্য চাপ হয়ে যায়, এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। যদি প্রো-ভিসি ও ট্রেজারার থাকতো, তাহলে ভিসি স্যার কাজ ভাগ করে দিতে পারতেন, এতে বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে যেত। সরকারের সদিচ্ছা থাকলে বিষয়টি দ্রুত সমাধান সম্ভব। ট্রেজারার থাকলে আর্থিক বিষয় এবং প্রো-ভিসি থাকলে নিয়োগ সংক্রান্ত কাজ দেখতেন, এতে ভিসি স্যারের কাজ অনেক সহজ হয়ে যেত।’
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩