মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৫, ১০:০২ অপরাহ্ন
আবু বকর সুজন, চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় গবাদিপশুর মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে লাম্পি স্কিন রোগ (এলএসডি)। উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ভাইরাসজনিত এই রোগে আক্রান্ত হয়ে গত দুই সপ্তাহে অন্তত ১৫টি গরু মারা যাওয়ার কথা জানিয়েছেন কৃষক, খামারী ও গৃহস্থরা। শীতের শুরুতে গবাদিপশুতে এই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় ও এই রোগের ভ্যাকসিন না পাওয়ায় দুশ্চিন্তায় আছেন তারা।
মঙ্গলবার (২৫নভেম্বর) উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
উপজেলার বাতিসা ইউনিয়নের পাটানন্দী গ্রামের মো: আবু হানিফের একটি ষাঁড় গরু ও মো: বেলাল হোসেনের একটি গরু ল্যাম্পি স্ক্রিন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। একই গ্রামের গৃহস্থ আনোয়ার হোসেন বলেন, তার ৮টি গরুর মধ্যে ছোট বাছুরটি ল্যাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এই রোগে গরু আক্রান্ত হওয়ার আগে পরে এক মাসে বেশ কয়েকবার উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিসে গিয়েও এই রোগের ভ্যাকসিন পাওয়া যায়নি। অফিস থেকে প্রতিবারই বলা হয় ভ্যাকসিন আসেনি। গত এক সপ্তাহ ধরে আক্রান্ত বাছুরটির চিকিৎসা চলছে কিন্তু কোনো উন্নতি দেখা যাচ্ছেনা। এই চিকিৎসাও অনেক ব্যয়বহুল।
তাদের মতো অনেকেরই এমন অভিযোগ। চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার উত্তর ফালগুনকরা গ্রামে গত এক সপ্তাহে ফরিদ ভুঁইয়া, মিনার ভুঁইয়া, আবদুর রশিদ ও দক্ষিণ ফালগুনকরা গ্রামের মকবুল হোসেন, বাচ্চু মিয়ার একটি করে গরু মারা যায়। মারা যাওয়া গরুর অধিকাংশই বাছুর।
মঙ্গলবার মারা যাওয়া গরুর মালিক ফরিদ ভুঁইয়া বলেন, আমার দুটি গরু এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে। সরকারিভাবে প্রাণীসম্পদ হাসপাতালে ভ্যাকসিন পাওয়া যায়নি। বাইরে ভ্যালসিন কিনতে গেলে একসাথে দশ গরুর জন্য ২৭শ টাকা দাম চায় দোকানিরা। তিনি জানান, গতকাল সোমবার প্রানীসম্পদ হাসপাতালে আক্রান্ত বাছুরটি নিয়ে গেলে সেখানে ডাক্তার পাওয়া যায়নি। কিন্তু কম্পাউন্ডারের মাধ্যমে ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা নির্দিষ্ট ঔষধ লিখে দিতে বলেন। আজ (মঙ্গলবার) বাছুরটি মারা যায়।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, গত কয়েক মাস ধরে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের খামারে এবং গৃহস্থদের গরু-বাছুরের মধ্যে ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজ ছড়িয়ে পড়েছে। ভাইরাসজনিত কারণে গরু-বাছুরের মধ্যে রোগটি ছড়িয়ে পড়ায় ও সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা না থাকায় প্রতিনিয়ত মারা যাচ্ছে গরু-বাছুর। গত কয়েক মাসের ব্যবধানে ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজে অর্ধশতাধিক গরু-বাছর মারা গেছে বলে ভুক্তভোগীদের নিকট থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল-মামুন সাগর বলেন, ভাইরাসজনিত কারণে ও মশা-মাছি থেকে ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজ গরু-বাছুরের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। সরকারিভাবে পরীক্ষামূলক ৮৬ ভ্যাকসিন দেয়া হলেও তা অতি সামান্য। আমরা উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে পুরো উপজেলায় সমন্বিতভাবে এই রোগের ভ্যাকসিন দেয়ার প্রকল্প হাতে নিয়েছি। অতি শিগ্রই এই প্রকল্পের আওতায় প্রতিটি ইউনিয়নে পৃথকভাবে গরু বাছুরকে ভ্যাকসিন দেয়া হবে।
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩