বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:২৭ পূর্বাহ্ন
সানজানা তালুকদার, কুবি প্রতিনিধি:
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) লোক প্রশাসন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী সুমাইয়া আফরিন ও তার মায়ের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ ও ন্যায় বিচার নিশ্চিতের দাবিতে মুখে কালো কাপড় বেঁধে মৌন মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বর থেকে প্রধান ফটক হয়ে ঘুরে কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশ দিয়ে মিছিল নিয়ে গোল চত্বরে এসে শেষ হয়।
এ সময় লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অন্য বিভাগের শিক্ষার্থীরাও এই মিছিলে অংশ নেয়। এছাড়াও লোক প্রশাসন বিভাগের একজন শিক্ষক এই মিছিলে উপস্থিত ছিলেন।
মিছিল শেষে শিক্ষার্থীরা সুমাইয়া হত্যার ন্যায় বিচারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি করে। এ সময় বিভাগের শিক্ষকদের অনুপস্থিতির জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করে শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে সুমাইয়ার সহপাঠী লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী নূর মোহাম্মদ সোহান বলেন, ‘গত ৮ তারিখ সুমাইয়া এবং তার মাকে নিজ বাড়িতে হত্যার প্রতিবাদে আজকে আমাদের এই মৌন মিছিল। আমরা গতকাল সিদ্ধান্ত নিই যে আজকে এই প্রতীকী মানববন্ধন করবো। আমাদের বিভাগের বাহিরে থেকেও আজকে যারা উপস্থিত হয়েছে সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজকে এখানে আসার জন্য আমরা কোনো শিক্ষককে দাওয়াত দিই নাই আর এটা দাওয়াত দেওয়ার বিষয়ও না। তাঁরা যদি মনে করেন তাদের শিক্ষার্থী হত্যার সুষ্ঠু বিচার হোক তাহলে তাঁরা স্বেচ্ছায় এসে দাঁড়াবেন। আজকে একজন শিক্ষক ছাড়া কেউ উপস্থিত হয়নি এবং সুমাইয়ার জানাজায়ও কেউ অংশগ্রহণ করেনি এটা আমাদের জন্য লজ্জাজনক। হয়তো তাদের মধ্যে মানবিকতার অভাব। আমরা সুমাইয়া ও তার মা হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাই।’
সুমাইয়ার আরেক সহপাঠী মুনিয়া আফরোজ বলেন, ‘আমরা আজকে এখানে দাঁড়ানোর মূল কারণ হচ্ছে পুলিশ প্রশাসন আমাদের গতকাল কোন আশ্বাস দেয়নি যে ঠিক কতটা সময় লাগবে পূর্ণ তদন্ত করতে। সুমাইয়া এবং তার মায়ের হত্যার আসামি পাওয়া গেছে কিন্তু আমরা এখনো হত্যার কারণ সম্পর্কে অবগত নই, এটা প্রশাসনের ব্যর্থতা। আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে সুষ্ঠু তদন্ত করে সুমাইয়া ও তার মায়ের হত্যাকাণ্ডের ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা হোক।’
লোক প্রশাসন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আল আরাফাত আমিন রাফি বলেন, ‘স্টুডেন্ট লাইফে আমাদের কোন জুনিয়র মারা গেছে, তাকে হত্যা করা হয়েছে এর থেকে খারাপ কিছু কল্পনাও করা যায় না। যেখানে আমাদের একজন শিক্ষার্থীকে খুন করা হয়েছে সেখানে একজন শিক্ষকও তার জানাজায় আসে না, আজকে এখানেও আমাদের সাথে আসে নাই এটা খুবই হতাশাজনক। কিন্তু আমরা আশা করব সামনে থেকে উনারা থাকবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এখানে আসার কারণ হচ্ছে পুলিশের যেই স্টেটমেন্ট এবং নিহতের ভাইদের যে স্টেটমেন্ট তাতে অসংগতি আছে। এখনো হত্যার কারণ ক্লিয়ার হয়নি এটা আসলেই হতাশাজনক। এত বড় একটা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী তার হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত এজন্যই আজকে আমাদের অবস্থান।’
উল্লেখ্য, গত ৮ সেপ্টেম্বর সকালে কুমিল্লার কালিয়াজুরী এলাকায় নিজ ভাড়া বাসা থেকে সুমাইয়া ও তার মায়ের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরইমধ্যে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবি গ্রেফতারকৃত আসামি মোবারক হোসেনই উক্ত হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা।
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩