শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:০৩ অপরাহ্ন
আমির ফয়সাল, জাবি প্রতিনিধিঃ
আসন্ন জাকসু নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও দীর্ঘদিন ধরে সাহিত্যচর্চায় যুক্ত এস আই শিমুল এক সংবাদ সম্মেলনে তার নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন। জাকসুতে তিনি সাহিত্য ও সম্পাদক পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী।
শুক্রবার (৫ ই সেপ্টেম্বর ) বিকাল ৪টার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ নং ছাত্রহলের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি তার ইশতেহার তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “৩৩ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জাকসু নির্বাচন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে নতুন উদ্দীপনা ও সম্ভাবনার দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছে। এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে এবং ক্যাম্পাসের সাহিত্য-সংস্কৃতির ঐতিহ্যকে পুনরুজ্জীবিত করতে আমি প্রার্থী হয়েছি।”
এস আই শিমুল জানান, প্রতিবছর শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে একটি বৃহৎ সাহিত্য উৎসব আয়োজন করা হবে, যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ কবি, লেখক এবং পাঠকরা একসাথে সাহিত্যচর্চায় যুক্ত হতে পারেন। এর পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব একটি প্রেস প্রতিষ্ঠা করার পরিকল্পনার কথাও তিনি ঘোষণা করেন। এই প্রেস থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের লেখা গ্রন্থাকারে প্রকাশ করা যাবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহিত্যপত্রিকাসহ অন্যান্য প্রকাশনা সহজে ছাপানো সম্ভব হবে।
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ঢাবি, জবি ও অন্যান্য কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় একুশে বইমেলায় নিয়মিত স্টল দিলেও জাহাঙ্গীরনগর কখনোই নিজস্ব স্টল দেয়নি। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহিত্য ও সংস্কৃতির ঐতিহ্য তুলে ধরতে একুশে বইমেলায় জাবির নিজস্ব স্টল চালু করা হবে, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশনা ছাড়াও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের লেখা বই প্রদর্শন ও বিক্রি করা হবে।
এছাড়া জাকসুর নির্বাহী পরিষদের তত্ত্বাবধানে একটি কেন্দ্রীয় প্রকাশনা বিভাগ গঠন করা হবে। এই বিভাগের উদ্যোগে নিয়মিত সাহিত্যপত্রিকা ও বার্ষিক সাহিত্য সংখ্যা প্রকাশের ব্যবস্থা থাকবে। তিনি আরও প্রতিশ্রুতি দেন, অতীতে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রচলিত থাকলেও বর্তমানে বন্ধ হয়ে যাওয়া সাহিত্যপত্রিকাগুলো পুনরায় সচল করা হবে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তিনি ঘোষণা করেন, আগামী এক বছরে অন্তত ২০টি নতুন সাহিত্যপত্রিকা প্রকাশ করা হবে জাকসুর উদ্যোগে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে কেন্দ্র করে একটি নিয়মিত পত্রিকা চালু করা হবে, যা দৈনিক, সাপ্তাহিক বা মাসিক আকারে হতে পারে।
প্রার্থীর ইশতেহারে আরও উল্লেখ করা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহিত্য-সংস্কৃতির ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও গবেষণার জন্য একটি আর্কাইভ গড়ে তোলা হবে। সেখানে পুরনো জাকসু সাহিত্যপত্র, দেয়ালপত্র, ছবি ও নথি সংরক্ষণ করা হবে। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি ‘ক্যাম্পাস রাইটার্স রেসিডেন্সি’ প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনার কথাও তিনি জানান।
সবশেষে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ কবি ও লেখকদের জন্য নিয়মিত লেখালেখি ও সম্পাদনা বিষয়ক কর্মশালা আয়োজন করা হবে, যাতে নতুন প্রজন্মের সাহিত্যচর্চা আরও সমৃদ্ধ হয়।
এছাড়াও তিনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ঘোষণা দেন, “জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে নবজাগরণের পথে নিয়ে যাওয়া আমার প্রধান লক্ষ্য। শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা ও সমর্থন পেলে আমি এই লক্ষ্য পূরণ করতে পারব।”
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩