শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:৪৩ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনামঃ
কুবিতে নিম্নমানের খোয়া ব্যবহারের অভিযোগে নির্মাণ কাজ বন্ধ কুবির ক্যাফেটেরিয়ার খাবারে তেলাপোকা পাওয়ার অভিযোগ বাঘাইছড়িতে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত ইন্দোনেশিয়ার পাপুয়ায় ৬.৫ মাত্রার ভূমিকম্প মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় দিবস-২০২৫ উদযাপিত এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাসের হার ৫৮.৮৩ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের উদ্যোগে ছাত্রীদের হলে ফার্স্ট এইড সামগ্রী বিতরণ কালাইয়ে বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস পালিত নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন ও বিচার বিভাগের নতুন বিভাগীয় প্রধান বরিশাল নগরে ববি শিক্ষার্থী ছিনতাইয়ের শিকার ও মারধর আজ এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ জয়পুরহাটের কালাইয়ে ইউএনও কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন রংপুরে অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধে ছাড়পত্র ছাড়া পশু জবাইয়ে নিষেধাজ্ঞা চৌদ্দগ্রামে গোপালনগর মহিলা মাদ্রাসার নবীন বরণ ও মা সমাবেশে অনুষ্ঠিত ছাতিমের বুনো সৌরভে মুখরিত ববি ক্যম্পাস মাঠে গড়াল কুবি আন্তঃবিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০২৫ কুড়িগ্রামে একসাথে ২২ জন শিক্ষককে বিদায় সংবর্ধনা প্রদান ইলিশর রক্ষায় ১৫ জেলের কারাদন্ড ও জাল জব্দ শিক্ষক-কর্মচারীদের উপর হামলার প্রতিবাদে কালাইয়ে মানববন্ধন খুবি ক্যারিয়ার ক্লাবের সাত বছরে পদার্পণ

কুবিতে র‍্যাগিংয়ের দায়ে বহিষ্কার ও শোকজ আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন

সানজানা তালুকদার, কুবি প্রতিনিধি:

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) লোক প্রশাসন বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের দুই শিক্ষার্থী ও ১৭ জনকে শোকজের আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিভাগটির শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সকাল ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বরে এই মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।

এসময় শিক্ষার্থীরা ‘বহিষ্কার কেন হলো, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘ভিত্তিহীন বহিষ্কার, মানি না মানব না’, ‘লঘু দোষে গুরুদণ্ড, মানি না মানব না’, ‘অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত, মানি না মানব না’ বলে স্লোগান দেন।

মানববন্ধনে লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত একপাক্ষিক ও ভিত্তিহীন। ভুক্তভোগী ও জুনিয়ররা জানিয়েছে, কোনো র‍্যাগিং হয়নি। তারা আগামী রবিবার (২৪ আগস্ট) পর্যন্ত বহিষ্কার ও শোকজ আদেশ প্রত্যাহারে আল্টিমেটাম দিয়েছে। এরমধ্যে প্রত্যাহার না করলে কঠোর আন্দোলনে নামার হুশিয়ারি দেন।

মানববন্ধনে বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মাহমুদুর রহমান সিফাত বলেন, ‘সেদিন আমরা জুনিয়রদের ক্লাসে শুধু খেলার ব্যাপারে কথা বলতে গিয়েছিলাম। স্যাররা সেটিকে র‍্যাগিং ভেবে ভুল করেছেন। কিন্তু, জুনিয়ররা নিজেরাও স্বীকার করেছে যে তারা কোনো র‍্যাগিং শিকার হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভিক্টিম নিজে, তার অভিভাবক ও গণমাধ্যমে স্পষ্ট জানানো হয়েছে যে র‍্যাগিং হয়নি। এরপরও যে অভিযোগের ভিত্তিতে বহিষ্কার করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, অযৌক্তিক ও মিথ্যা। আমরা এমন অন্যায় বহিষ্কার মেনে নেব না।’

২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. রাসেল মিয়া মানববন্ধনে বলেন, ‘১৮তম আবর্তনের একজন ছেলে ও একজন মেয়েকে ভিত্তিহীন অভিযোগের ভিত্তিতে বহিষ্কার করা হয়েছে। অভিযোগ আনা হয়েছিল যে, তারা ১৯তম ব্যাচের একজন শিক্ষার্থীকে নাচতে বাধ্য করেছে। অথচ বিষয়টি ছিল সম্পূর্ণ স্বেচ্ছায়, কারণ তাদের একটি নাচের প্রোগ্রাম ছিল। একজন শিক্ষার্থী ব্যক্তিগত কারণে বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে গেছে এবং তার বাবাও বিষয়টি স্বীকার করেছেন। এরপরও প্রশাসন এমন অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা প্রশাসনের কাছে জবাব চাই, কেন তাদের বহিষ্কার করা হলো? আমরা প্রমাণ দিয়েছি যে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে, তারা কাউকে নাচতে বাধ্য করেনি, বরং যারা নেচেছে তারা নিজেরাই স্বেচ্ছায় নেচেছে। তাছাড়া সালাম না দেওয়ার কারণে র‍্যাগ দেওয়ার যে অভিযোগ আনা হয়েছে, সেটিও সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’

তিনি আরও বলেন, ‘বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা কখনোই ১৯তম ব্যাচের ক্লাসে যায়নি, শুধু অরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে উপস্থিত ছিল। এ অবস্থায় ‘তারা কেন ১৯তম ব্যাচের ক্লাসে গেল’, এই প্রশ্নে প্রশাসনের আগে জাস্টিফিকেশন দেওয়া উচিত ছিল। যদি তদন্ত হয়, তবে পুরো বিষয়টি নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করতে হবে। একপাক্ষিক অভিযোগের ভিত্তিতে বহিষ্কারাদেশ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’

২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রাশিদুল ইসলাম শুভ বলেন, ‘১৯তম ব্যাচ লিখিতভাবে জানিয়েছে তাদের ১৮তম ব্যাচের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই এবং কারও বহিষ্কারেরও দাবি করেনি। তারপরও প্রশাসনের শাস্তি অযৌক্তিক। কারণ ১৮তম ব্যাচের প্রমাণ উপেক্ষা করে জুনিয়রদের রিপোর্টকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আমাদের প্রশ্ন, কেন ১৮তম ব্যাচের প্রমাণ দেখা হলো না? আমরা নিরপেক্ষ তদন্ত এবং উভয় পক্ষের প্রমাণ, বক্তব্য সমানভাবে বিবেচনা করার দাবি জানাই।’

২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আল আরফাত রাফি বলেন, ‘প্রশাসন মূলত নিজেদের দায় এড়ানোর চেষ্টা করছে। তারা যখন ডিপার্টমেন্টে যায়, তখন জানানো হয় এটি এককভাবে প্রশাসনের সিদ্ধান্ত। আবার প্রশাসন জানায় ডিপার্টমেন্টের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই তারা পদক্ষেপ নিয়েছে। এভাবে বিষয়টি জলঘোলা করার চেষ্টা চলছে। বহিষ্কার হওয়ার মতো কোনো কারণ এখানে নেই। শুধু একটি ব্যক্তিগত মেসেজ আদান-প্রদানের মাধ্যমে কি বহিষ্কার করা যায়? এখানে তো র‍্যাগিংয়ের মতো কোনো বিষয়ই পাওয়া যায়নি। তাহলে বহিষ্কারের মতো এত বড় সিদ্ধান্ত কেন নেওয়া হলো?’

উল্লেখ্য, গত ২ জুলাই থেকে ১৬ জুলাই পর্যন্ত লোক প্রশাসন বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের দ্বারা ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থীরা নিয়মিত র‍্যাগিংয়ের শিকার হয় বলে অভিযোগ উঠে। পরে ১৬ জুলাই গোপন সংবাদের ভিত্তিতে প্রক্টরিয়াল বডি র‍্যাগিং চলাকালীন অবস্থায় হাতেনাতে অভিযুক্তদের আটক করে। এরই প্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এরপর গত ১৪ আগস্ট শৃঙ্খলা কমিটির সদস্যসচিব ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল হাকিম বহিষ্কার ও শোকজের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩