বুধবার, ০২ Jul ২০২৫, ০৭:৪৩ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনামঃ
বর্তমান জাবি প্রশাসন ফ্যাসিবাদী হয়ে উঠেছে: অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রায় গাইবান্ধায় এনসিপির নেতৃবৃন্দ নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণের প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন ও অবস্থান কর্মসূচি ‎চালের অস্বাভাবিক মূল্য বাড়ায় বরিশালে মানববন্ধন শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে গ্রেপ্তার ২ মুরাদনগরে ধর্ষণের ঘটনায় সংখ্যালঘু নারীর বাড়িতে ছুটে গেলেন সাবেক এমপি “কায়কোবাদ” কুড়িগ্রামে জাতীয় নাগরিক পার্টির প্রেস ব্রিফিং দুমকীতে বীর মুক্তিযোদ্ধার বাসায় দুর্ধর্ষ ডাকাতি বেরোবিতে হঠাৎ বাড়ল সেমিস্টার ফি, শিক্ষার্থীদের তীব্র ক্ষোভ ও স্মারকলিপি প্রদান বাজেট ঘাটতির অজুহাতে আটকে আছে ঢাকাগামী বাস মাভাবিপ্রবি’র ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে জামায়াতে ইসলাম জুলাই অভ্যুত্থান স্মরণে মাসব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন প্রধান উপদেষ্টার শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মধ্য দিয়ে এনসিপির ‘জুলাই পদযাত্রা’ শুরু সৈয়দপুর ইউনিয়ন ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে ফলচক্র অনুষ্ঠিত মাভাবিপ্রবি’র ক্যাফেটেরিয়ায় পর্দাব্যবস্থা দাবি করে প্রশাসনের দ্বারে নারী শিক্ষার্থীরা

মাভাবিপ্রবি’র ক্যাফেটেরিয়ায় পর্দাব্যবস্থা দাবি করে প্রশাসনের দ্বারে নারী শিক্ষার্থীরা

 

মোঃ জিসান রহমান, ‎মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ

‎মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) নারী শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় একটি পৃথক, নিরাপদ ও পর্দাবেষ্টিত কর্ণার স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন। ধর্মীয় বিশ্বাস ও সামাজিক মূল্যবোধ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তারা ‘আল আসলামিয়া পর্দা কর্নার’ নামে একটি নির্ধারিত জায়গা বরাদ্দের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।

‎সোমবার (৩০ জুন) ২০২৫ ইং তারিখে শিক্ষার্থী কল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্রের পরিচালক এবং এস্টেট অফিসের পরিচালকের কাছে জমা দেওয়া স্মারকলিপিতে তারা উল্লেখ করেন, এই অঞ্চলের সংস্কৃতি ও ধর্মীয় ঐতিহ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে অনেক নারী শিক্ষার্থী পর্দা মেনে চলেন। নিয়মিত ক্লাস, ল্যাব ও অন্যান্য একাডেমিক ব্যস্ততার কারণে অনেক সময় হলে কিংবা মেসে গিয়ে খাওয়ার সুযোগ থাকে না। ফলে ক্যাফেটেরিয়াই হয়ে ওঠে তাদের প্রধান ভরসা। কিন্তু সেখানে পর্দাব্যবস্থা না থাকায় অনেক শিক্ষার্থী স্বাচ্ছন্দ্যে খাবার গ্রহণ করতে পারেন না, যা তাদের একধরনের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে।

‎স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা ‎তাদের প্রস্তাবিত দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ

‎১. বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় নারী শিক্ষার্থীদের জন্য একটি পৃথক, নিরাপদ ও পর্দাবেষ্টিত ‘আল আসলামিয়া পর্দা কর্নার’ স্থাপন।
‎২. ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী নারী শিক্ষার্থীদের জন্য সম্মানজনক পরিবেশে খাবার গ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত করা।
‎৩. শিক্ষার্থীদের মৌলিক অধিকার ও মর্যাদা রক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ে মানবিক ও বৈষম্যহীন পরিবেশ গড়ে তোলা।

গণিত বিভাগের ২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী আমিনা সুলতানা মুনা জানান, “বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মমাফিক ফর্মালিটিজ রক্ষা করে, আমরা নারী শিক্ষার্থীরা ৬ মাস আগে এস্টেট পরিচালক স্যার বরাবর এপ্লিকেশন দিয়েছিলাম, যার ফাইনাল অফিশিয়াল নোটিশ আনতে ২ থেকে ৩ বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছে, কিন্তু আমরা কোন অফিসিয়াল বিবৃতি পাইনি তখন। এভাবে কালক্ষেপণ এরকম একটা বেসিক রাইটস বিষয়ে, এরজন্য আমরা ভিসি স্যার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করতে গিয়েছিলাম, স্যার আমাদের স্মারকলিপি গ্রহণ করেননি, এবং আবারও এস্টেট পরিচালক বরাবর এবং শিক্ষার্থী কল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্রের পরিচালক বরাবর স্মারকলিপি দিতে বলেন। আমরা ৬ মাস আগে দিয়ে এখনও অফিশিয়াল বিবৃতি পাইনি বললে, স্যার বলেন, সিন্ডিকেট সভায় উত্থাপনের পর বাতিল হয়েছে। এই স্মারকলিপি উনি গ্রহণ করতে পারবেন না আবারও এস্টেট হয়ে আসতে হবে । স্যার বলেছেন, বিষয়টা উনি পরবর্তীতে দেখবেন ।

তিনি আরও জানান, আমরা এরপর শিক্ষার্থী কল্যাণ ও পরামর্শ কেন্দ্রের পরিচালক স্যার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করতে গেলে, স্যার রিসিভ করেন স্মারকলিপি এবং এটা এস্টেট পরিচালক বরাবর স্মারকলিপি ফরোয়ার্ড করেন। পরবর্তীতে আমরা এস্টেট পরিচালক স্যার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করি,স্যার বিষয় টা নিয়ে ভিসি স্যার এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে আলোচনা করবেন বলে আশ্বাস দেন এবং আমরা সময় জানতে চাইলে,৮-৯ জুলাই পরবর্তী আপডেট স্যার থেকে নিতে বলেন। আমরা জানি না পরবর্তীতে আমরা আমাদের বেসিক হিউম্যান রাইটস এর জন্য কতখানি সহযোগিতা পাবো।যেখানে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্দা কর্ণার খুব সুন্দরভাবেই মেইনটেনেন্স হচ্ছে, সেখানে কেন কালক্ষেপণ হচ্ছে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে তা আমার বোধগম্য নয়।”

২০১৮-১৯ সেশনের আরেক শিক্ষার্থী আবিদা সুলতানা নূপুর জানান, “আমরা অযৌক্তিক এবং অসম্ভব কোনো দাবী করিনি। আমরা বলিনি ক্যাফেটেরিয়া আলাদা হোক, শুধু একটি ছোট জায়গা পর্দা দিয়ে ঢেকে দেওয়ার মতো সরল ও যৌক্তিক সমাধান চেয়েছি যা খুবই সহজ এবং এতে বাড়তি খরচ বা কাঠামো পরিবর্তনেরও প্রয়োজন হবে না। ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মকে অবহেলা নয়। এই কর্নার প্রতিষ্ঠা কোনো অতিরিক্ত সুবিধা নয় বরং আমাদের মৌলিক অধিকার। আমরা বিশ্বাস করি, শিক্ষার্থীদের ধর্মীয় চেতনা, মুসলিম নারী শিক্ষার্থীদের মর্যাদা এবং মৌলিক অধিকারকে সম্মান জানিয়ে এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে এস্টেট অফিসের পরিচালক ড. মো. আশারাফ আলী জানান, “আমার কাছে স্মারকলিপি এসেছে আমি গ্রহণ করেছি। এবং পরবর্তী সিদ্ধান্তের জন্য এটি আলোচনা সভায় পাঠাবো। এর বেশি আমি মন্তব্য করতে পারবো না।”

‎‎শিক্ষার্থী কল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. ফজলুল করিম বলেন,
“আমার কাছে ছাত্রীরা একটি স্মারকলিপি জমা দিয়েছে। আমি সেটি এস্টেট অফিসে ফরওয়ার্ড করে দিচ্ছি। এ বিষয়ে এস্টেট অফিস থেকেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। অতএব, এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে ইচ্ছুক নই।”

‎নারী শিক্ষার্থীরা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করবে এবং ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধের প্রতি সম্মান জানিয়ে ক্যাম্পাসে একটি সমতা ও মর্যাদাভিত্তিক পরিবেশ প্রতিষ্ঠায় কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩