বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:৩৭ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনামঃ
কুড়িগ্রামে প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ ও প্রদর্শনী-২০২৫ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠিত মধ্যনগরে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ মাদারীপুরে নতুন পুলিশ সুপার হিসেবে যোগ দিচ্ছেন এহতেশামুল হক রাজাপুরে জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহে শোভাযাত্রা ও প্রদর্শনী গোয়াইনঘাটে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন ও প্রদর্শনী মেলা অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে দুর্নীতি ও কালো টাকার বিরুদ্ধে সিপিবির বিক্ষোভ সমাবেশ ত্রিশালে সড়ক উদ্বোধন করেন ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান ঈদগাঁওয়ে পানিতে পড়ে ১৪ মাসের শিশুর মৃত্যু নলছিটিতে ফুটপাত দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান কোম্পানীগঞ্জে এড. আব্দুল্লাহ আল হেলালের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার নাসির নগরে জাতীয় প্রাণীসম্পদ সপ্তাহ ও প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত ১৫ মাস জেলে থেকেও এতটা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হইনি: জিএসপ্রার্থী খাদিজা ‌কোস্ট গার্ডের অভিযানে বিরল প্রজাতির তক্ষকসহ ১ পাচারকারী আটক পঞ্চমবারের মতো কুবিতে আয়োজিত হতে যাচ্ছে ছায়া জাতিসংঘ সম্মেলন জামার্নির কেম্পটেন ইউনিভার্সিটি অফ অ্যাপ্লায়েড সায়েন্সস-এ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে-সুমন চাকমা কুয়েটে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়েছে চা-কফি ভেন্ডিং সেবা কুবি ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, থাকছে সেকেন্ড টাইম পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ বাস্ত্রহীন বিদ্যাকে হারাটি ইউনিয়ন ছাত্রদলের পক্ষ থেকে একটি ঘর উপহার দিলেন সুগন্ধা নদী থেকে নারীর মৃতদেহ উদ্ধার বিরামপুরে রোড ডিভাইডারে নতুন স্ট্রিট লাইট, নিরাপদ সড়কে খুশি স্থানীয়রা

মধ্যনগরে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ

জয়নাল আবেদীন জহিরুল, মধ্যনগর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি:

একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় সুনামগঞ্জ জেলার মধ্যনগর উপজেলার জনপদ মহিষখলা জায়গাটি ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের অন্যতম শক্ত ঘাঁটি। ভারতের সীমান্তঘেঁষা ও চারদিকে হাওরবেষ্টিত দুর্গম এলাকা হওয়ায় এটি ছিল শত্রুপক্ষের জন্য প্রায় অপ্রবেশ্য অঞ্চল। ফলে মহিষখলা পরিণত হয়েছিল মুক্তিযোদ্ধাদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল ও কৌশলগত পরিকল্পনার কেন্দ্রে।

তৎকালীন সময়ে মহিষখলা ছিল ১১ নম্বর সেক্টরের ১ নম্বর সাব-সেক্টরের আওতাধীন এলাকা। এখান থেকেই মুক্তিযোদ্ধারা মধ্যনগর, ধর্মপাশা, নেত্রকোণা ও হালুয়াঘাট অঞ্চলে একাধিক সফল অভিযান পরিচালনা করেন। স্থানীয় জনগণ খাদ্য, আশ্রয় ও তথ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করেন, যা মুক্তিযুদ্ধের আন্দোলনকে আরও বেগবান করে তোলে।

মুক্তিযুদ্ধের সেই গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ধরে রাখতে মহিষখলায় গড়ে তোলা হয়েছে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ—মহিষখলা স্মৃতিসৌধ।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গীতিকার নজরুল ইসলাম বাবু-র বিখ্যাত গান ‘সব কটা জানালা খুলে দাও না’–এর ভাবধারায় স্মৃতিসৌধটির নকশা করা হয়। স্থপতি রাজন দাসের নকশায় ২০১২ সালে মহিষখলা নদীর পূর্ব তীরে প্রায় ১৮ হাজার ৭০০ বর্গফুট জায়গাজুড়ে স্মৃতিসৌধটি নির্মাণ করে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন।

সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের অর্থায়নে, প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে, ২০১২-১৩ অর্থবছরে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়। স্থাপত্যশৈলীর অনন্য নিদর্শন হিসেবে স্মৃতিসৌধটি এখন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এক উজ্জ্বল সংযোজন।

২০১৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবসে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রথমবারের মতো শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয় এই স্মৃতিসৌধে। এরপর থেকে প্রতিবছর বিজয় দিবস ও স্বাধীনতা দিবসে এখানে শহীদদের স্মরণে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

মধ্যনগরের স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও সচেতন মহল মনে করেন, মহিষখলা শুধু একটি জনপদ নয়; এটি বীরত্ব, ত্যাগ ও স্বাধীনতার প্রতীক। মহিষখলা স্মৃতিসৌধকে কেন্দ্র করে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক পর্যটন, গবেষণা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে। তারা স্মৃতিসৌধটির যথাযথ সংরক্ষণ ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা জোরদারের আহ্বান জানিয়েছেন।

এই প্রসঙ্গে মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উজ্জ্বল রায় বলেন, মহিষখলা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এক গৌরবময় স্থান। এখানে নির্মিত দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্মৃতিসৌধটি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগের সাক্ষী। উপজেলা প্রশাসন এই ঐতিহাসিক স্থাপনাটির সংরক্ষণ ও সৌন্দর্যবর্ধনে কাজ করছে, যাতে আগত দর্শনার্থীরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কাছ থেকে অনুভব করতে পারেন।

মহিষখলার এই স্মৃতিসৌধ আজ স্বাধীন বাংলাদেশের বীর সন্তানদের ত্যাগ ও সাহসিকতার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে—মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের এক অমলিন সাক্ষী হিসেবে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩