বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:৩৬ পূর্বাহ্ন
আবু তাহের, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:
জ্ঞানের আলো, ভরসার প্রতীক, আদর্শ এবং অনুপ্রেরণার বাতিঘর হয়ে যে মানুষ গুলো আমাদের জীবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তারা আমাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষক। একজন শিক্ষক কেবল পুঁথিগত বিদ্যার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেন না। তাঁরা হলেন আলোকবর্তিকা, যাঁরা শিক্ষার্থীদের মনের অন্ধকার দূর করে জ্ঞানের আলো জ্বালান।
ক্লাসরুমের বাইরেও তাঁদের শিক্ষা আমাদের জীবনের কঠিন পরিস্থিতিতে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে। তাঁরা শেখান নৈতিকতা, শৃঙ্খলা, সহিষ্ণুতা এবং দায়িত্ববোধ। একজন ভালো শিক্ষক তাঁর ছাত্রদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলেন এবং সন্দেহকে স্পষ্টতায় পরিণত করেন। তাই বলা হয়, শিক্ষক শুধু ছাত্র তৈরি করেন না, তিনি সমাজ গড়ে তোলেন।
শিক্ষক দিবস আমাদের শেখায়, আমাদের জীবনে যাঁরা জ্ঞান ও প্রজ্ঞা দিয়ে সাহায্য করেছেন, তাঁদের ধন্যবাদ জানানো উচিত। আজ আমরা জীবনে যে স্থানেই থাকি না কেন, প্রত্যেকের সফলতার পেছনে কোনো না কোনো শিক্ষকের অনুপ্রেরণা লুকিয়ে আছে। এই বিশেষ দিনে সবার উচিত শিক্ষকের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা প্রকাশ করা। কারণ, আমরা যা কিছু শিখেছি, তার পেছনে তাঁদের অবদান অমূল্য।
ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী সাজিয়া শেখ বলেন, ‘শিক্ষকতা একটি মহৎ পেশা, যেখানে শিক্ষক শুধু পাঠ্যজ্ঞান দেন না, মানুষ গড়ে তোলেন। তাঁর আদর্শ, নীতি ও শৃঙ্খলা ছাত্রের জীবনের ভিত্তি গড়ে দেয়। আমার জীবনের প্রিয় শিক্ষক আমাকে শুধু পাঠ্যবই নয়, জীবনের পাঠও শিখিয়েছেন—আত্মবিশ্বাস, পরিশ্রম ও সততার শিক্ষা দিয়েছেন। তাঁর ধৈর্য, স্নেহ ও দিকনির্দেশনা আমার জীবনের অমূল্য প্রেরণা। শিক্ষক ছাড়া আমি আজকের “আমি” হইতাম না।’
ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘শিক্ষকতা কেবল পেশা নয়; এটি মানবজীবনের আলোকবর্তিকা। শিক্ষকরা জ্ঞানের আলো দিয়ে অজ্ঞতার অন্ধকার দূর করেন এবং নৈতিকতা, আদর্শ ও জীবনবোধ শেখান। আমার জীবনের পথপ্রদর্শক ছিলেন মো: মিরাস উদ্দিন স্যার ও আলামিন স্যার, যাঁদের প্রেরণা ও সহানুভূতি আমাকে শিক্ষাজীবনে আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকরা আমাদের জ্ঞান ও মানবিক মূল্যবোধ গড়ে তুলছেন। তাই শিক্ষক দিবস আমার কাছে কৃতজ্ঞতার প্রতীক, যেদিন আমি আমার সকল শিক্ষকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি।’
হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের শিক্ষার্থী ফারজানা হক ফিমা বলেন, ‘শিক্ষকতা এক মহান পেশা, যেখানে জ্ঞানের আলোয় প্রজন্মকে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করা হয়। শিক্ষক শুধু পাঠ্য জ্ঞান নয়, জীবনবোধ ও মানবিক মূল্যবোধও শেখান। আমার রাহাত স্যার এমনই একজন, যিনি ইংরেজি শেখার পাশাপাশি আত্মবিশ্বাস, ন্যায়নিষ্ঠা ও মানবতার শিক্ষা দিয়েছেন। শিক্ষকরা আমাদের জীবনের আলোকবর্তিকা—তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মানই আমাদের কর্তব্য।’
ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া ইসলাম তুলি বলেন, ‘শিক্ষকতা শুধু একটি পেশা নয়, এটি একটি মহৎ দায়িত্ব ও সেবার নাম। আর শিক্ষকই জাতি গঠনের ভিত্তি। আমার জীবনের প্রথম শিক্ষক বজলুর রহমান রশীদ স্যার—গণিতে ছিলেন পটু, হাতে ছিল অসাধারণ লিখা, স্বভাবে ছিলেন সৎ, সরল ও নীতিতে অটল। তাঁর কাছ থেকেই আমি শিখেছি সততা, শৃঙ্খলা আর আলোর পথে চলার শিক্ষা। পিতা-মাতার পর শিক্ষকের স্থান সবচেয়ে উচ্চে, কারণ আজকের আমি তাঁদেরই অবদানের ফল।’
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩