সোমবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ১১:২৮ অপরাহ্ন
আমির ফয়সাল, জাবি প্রতিনিধি:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বৈরাচার সরকার পতনের পর গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দায়িত্বপ্রাপ্ত বর্তমান প্রশাসন দেড় বছর পার হলেও জুলাইয়ের কোনো আকাঙ্ক্ষাই বাস্তবায়ন করতে পারেনি এবং তারা পুর্ববর্তী প্রশাসন ফারজানা নুরুল এরই কার্বন কবি—এমন অভিযোগ তুলেছে সদয আত্নপ্রকাশ পাওয়া স্টুডেন্টস ফর জাস্টিস প্লাটফর্ম ।
সোমবার (২৪ শে নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত সংগঠনটির আত্নপ্রকাশকালে করা এক সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেন।
সংগঠনটির দাবি, মৌলিক নীতিগত সংস্কার, শিক্ষার্থীদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট উন্নয়ন, প্রশাসনিক স্বচ্ছতা—কোনো ক্ষেত্রেই দৃশ্যমান পরিবর্তন আনতে ব্যর্থ হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বরং পূর্ববর্তী আওয়ামী দোসর ফারজানা-নুরুল প্রশাসনের মতোই এই প্রশাসনও একদম “কার্বন কপি” হিসেবে আচরণ করছে।
সংগঠনটির অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তরে এখনও দুর্নীতিগ্রস্ত ও আগের ফ্যাসিবাদী প্রশাসনের সহযোগিরা বহাল তবিয়তে রয়েছে। একাডেমিক নিপীড়ন, গবেষণা ও ফলাফল জালিয়াতি, যৌন নিপীড়নসহ শিক্ষার্থীদের গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগগুলো মাসের পর মাস বিচারহীন পড়ে থাকা—মূলত স্বৈরাচারী মানসিকতারই বহিঃপ্রকাশ। তারা আরও দাবি করে, প্রশাসন নিজের গদি রক্ষায় জাকসুকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে, অথচ শিক্ষার্থীদের স্বার্থরক্ষায় জাকসুর দৃঢ় অবস্থান চোখে পড়ে না।
এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও একাডেমিক নিপীড়ন প্রতিরোধে “স্টুডেন্টস ফর জাস্টিস” প্লাটফর্মটি কাজ করার ঘোষণা দিয়েছে। তারা জানায়, ছাত্র-শিক্ষকের মধ্যে সহযোগিতামূলক একাডেমিক পরিবেশ তৈরি, সুনির্দিষ্ট দাবি বাস্তবায়ন এবং মতবিনিময়ের মঞ্চ হিসেবে প্লাটফর্মটি কার্যক্রম পরিচালনা করবে। দল-মত নির্বিশেষে শিক্ষার্থীদের প্লাটফর্মে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
তাদের দাবিগুলো হলো,জুলাই ’২৪ গণঅভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় মদদদাতা শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে প্রাতিষ্ঠানিক ও রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ,গবেষণা ও ফলাফল জালিয়াতিতে জড়িতদের দ্রুততম সময়ে আইনি ও প্রশাসনিক ব্যবস্থায় আনা এবং যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা এবং কঠোর শাস্তির বিধান নিশ্চিত।
সংগঠনটি আরও দাবি করেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, হত্যাচেষ্টা, গবেষণা–ফলাফল জালিয়াতি, যৌন নিপীড়নসহ নানা অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের কাছে লিখিতভাবে জমা রয়েছে। তবুও তদন্তের নামে কৃত্রিম দীর্ঘসূত্রিতা তৈরি করে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে প্রহসন করা হচ্ছে।
প্রেস রিলিজে বলা হয়,অভিযোগগুলো দ্রুত আমলে নিয়ে সময়মতো তদন্ত শেষ করে বিচারিক সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে হবে। অন্যথায় বর্তমান প্রশাসন ব্যর্থ হিসেবে প্রমাণিত হবে, এবং এমন ব্যর্থ ও দায়িত্বে অবহেলাকারী প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার যোগ্য নয় বলে শিক্ষার্থীরা মনে করে।
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩