বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:৫১ অপরাহ্ন
আমির ফায়সাল, জাবি প্রতিনিধি:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়(জাবি) মেডিকেল সেন্টারে জাকসুর উদ্যোগে ঔষধের ধরণ ২০ থেকে বৃদ্ধি করে ৮৫ তে উন্নীতসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পথ্য, উপকরণ ও ভ্যাক্সিন সরবরাহ করা হয়েছে।
জানা যায়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে ঔষধের ধরণ ও চিকিৎসাব্যবস্থা ছিল খুবই সীমিত। প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে একমাত্র পথ্য ছিল ‘নাপা’। সর্বসাকুল্যে পাওয়া যেত ২০ থেকে ২৫ ধরণের ঔষধ। যার ফলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে ‘নাপা সেন্টার’ নামে পরিচিত ছিল মেডিকেল সেন্টারটি।সেই তকমা থেকে মুক্তি দিতে জাকসুর উদ্যোগে ঔষধের ধরণ ২০ থেকে বৃদ্ধি করে ৮৫তে উন্নীত করা হয়েছে।
সরেজমিনে জানা যায়, প্রতিবছর ঔষধ ক্রয়ের জন্য মোট ২৪ লক্ষ টাকা বাজেট থাকে, যা চার ধাপে প্রতি ধাপে ৬ লক্ষ টাকা করে ব্যয় করা হয়। আগে এই ঔষধ ক্রয়ের দায়িত্ব ছিল CMO (Chief Medical Officer)-এর হাতে, এবং সেই বাজেটে মাত্র ২০ থেকে ৩০ ধরনের ওষুধ কেনা হতো।
বর্তমানে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড.সোহেল আহমেদ-এর নেতৃত্বে একটি ঔষধ ক্রয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। উক্ত কমিটি ও জাকসুর যৌথ উদ্যোগে নতুন করে ভালো কোম্পানির ঔষধ, উন্নত মানের অ্যান্টিবায়োটিক, ইনজেকশন, রেসপিরেটরি ওষুধ, ডায়রিয়ার স্যালাইনসহ ওষুধের বৈচিত্র্য বাড়ানো হয়েছে।
যার মাধ্যমে ঔষধের ধরণ বৃদ্ধি, গুরুত্বপূর্ণ এন্টিবায়োটিক, ব্যাথার ঔষধ, ফুসফুসজনিত রোগের ঔষধ, স্টেরয়েড, আইভি ফ্লুইড, খিচুনি প্রতিরোধী ঔষধ, মানসিক রোগের ঔষধ,ORS, ইনহেলার, নেবুলাইজার সলিউশন, কৃমিনাশক, অ্যান্টিসেপটিক, মাল্টিভিটামিন ও অ্যান্টিফাঙ্গাল জাতীয় মেডিসিন যুক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও অতি প্রয়োজনীয় টিটিনাস ও রযাবিস ভ্যাক্সিন সরবরাহ করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আল মোতাসিম বিল্লাহ বলেন, আগে মেডিকেল সেন্টারে গুরুত্বপূর্ণ কোনো ঔষধ পাওয়া যেতোনা। দরকারে-অদরকারে নাপা ধরিয়ে দেওয়া হত। জাকসুর উদ্যোগে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ঔষধের সংযোজন ঘটেছে যা আশা করি মেডিকেল সেন্টারকে ‘নাপা সেন্টার’ নামের তকমা থেকে মুক্তি দিবে এবং শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসেবার মান অনেকগুনে বৃদ্ধি করবে।
জাকসুর স্বাস্থ্য ও খাদ্যনিরাপত্তা সম্পাদক হুসনী মোবারক বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার অনেকদিন ধরে শুধু ‘নাপা সেন্টার’ নামেই সীমাবদ্ধ ছিল-যেখানে শিক্ষার্থীরা প্রকৃত চিকিৎসা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতো। এখন সেই পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করেছে। আমরা চেয়েছি যেন মেডিকেল সেন্টার সত্যিকারের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠে, যেখানে সাধারণ জ্বর থেকে শুরু করে মানসিক স্বাস্থ্য, ইনজেকশন, ভ্যাকসিন-সবকিছু পাওয়া যায়।
একই বাজেটে এত বৈচিত্র্যময় ওষুধ যুক্ত হওয়া মানে, ইচ্ছা থাকলে পরিবর্তন সম্ভব। এখন প্রয়োজন এই পরিবর্তনের ধারাবাহিকতা ও পূর্ণ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩