বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:৫১ অপরাহ্ন
আবু তাহের, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৯ বছর পেরিয়ে গেলেও শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি শারীরিক সুস্থতা ও মানসিক বিকাশের জন্য এখনো স্থায়ী কোনো জিমনেসিয়াম স্থাপন করা হয়নি।
বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় সাড়ে ১১ হাজার শিক্ষার্থী, ২২০ জন শিক্ষক ও দুই শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। এই বিপুল সংখ্যক মানুষের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য কোনো জিমনেসিয়াম না থাকায় শিক্ষার্থীরা হতাশ। শারীরিক শিক্ষা বিভাগের কার্যক্রম মূলত খেলাধুলা আয়োজন পর্যন্ত সীমাবদ্ধ। বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারপ্ল্যান ও উন্নয়ন প্রকল্পে ভবন নির্মাণ ও সৌন্দর্যবর্ধনের পরিকল্পনা থাকলেও কেন্দ্রীয় জিমনেসিয়াম স্থাপনের বিষয়ে কোনো স্পষ্ট উল্লেখ পাওয়া যায়নি।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের খোলা মাঠ ও সীমিত পরিসরে ইনডোর স্পোর্টসের ব্যবস্থা থাকলেও তা আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে প্রয়োজনীয় নিয়মিত ব্যায়াম ও ফিটনেস চর্চার সুযোগ পূরণ করতে পারছে না। এরই মধ্যে সংস্কারের নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠটি গত এক বছর ধরে খেলাধুলার অনুপযোগী অবস্থায় রয়েছে।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি আবাসিক হলের মধ্যে তিনটিতেই নেই অনুশীলন কক্ষ। ছাত্রদের একমাত্র আবাসিক ‘বিদ্রোহী’ হলের চতুর্থ তলায় ছোট পরিসরে একটি অনুশীলন কক্ষ থাকলেও সেখানে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নেই। ফলে অনেক স্বাস্থ্য সচেতন শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়ে অর্থ খরচ করে জিম করতে হচ্ছে।
মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী তাহমিদ হীরা বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি আবাসিক হলে প্রায় তিন হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী থাকলেও এখানে কোনো জিমনেসিয়াম নেই। সমসাময়িক অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে আধুনিক জিমনেসিয়াম থাকলেও আমরা সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত। ত্রিশাল এলাকাতেও বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় শিক্ষার্থীদের শারীরিক বিকাশ ব্যাহত হচ্ছে। তাই দ্রুত একটি আধুনিক জিমনেসিয়াম স্থাপন করা জরুরি।”
আইন ও বিচার বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি আধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জিমনেসিয়াম অপরিহার্য। এটি শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি খেলাধুলার সঙ্গে যুক্তদের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের বিদ্রোহী হলে একটি অনুশীলন কক্ষ থাকলেও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম না থাকায় সেখানে ব্যায়াম করা সম্ভব নয়। আশা করি, প্রশাসন দ্রুত একটি স্থায়ী জিমনেসিয়াম স্থাপনে উদ্যোগ নেবে।”
শারীরিক শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক নাজমুল হাসান বলেন, “জিমনেসিয়াম মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও পরিকল্পনা দপ্তরের আওতাধীন। একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে জিমনেসিয়াম থাকা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এটি শুধু শিক্ষার্থীদের জন্য নয়, বরং খেলাধুলার সঙ্গে যুক্ত ও স্বাস্থ্য সচেতন সবারই দাবি। আমরা বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনকে একাধিকবার জানিয়েছি। আশা করি, শিগগিরই ছোট পরিসরে হলেও একটি জিমনেসিয়াম স্থাপন করা হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান বলেন, “ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএসসি ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। সেখানে ইনডোর স্পোর্টসের পাশাপাশি একটি জিমনেসিয়ামের স্থান বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এছাড়া নবনির্মিত বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের পাশেও একটি ব্যায়ামাগার স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, এসব কাজ সম্পন্ন হলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা আধুনিক জিমনেসিয়ামের সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।”
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩