বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:৪২ পূর্বাহ্ন
সানজানা তালুকদার, কুবি প্রতিনিধি:
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ছাত্রদের প্রকৃত অধিকার ও গণতান্ত্রিক প্রতিনিধিত্ব প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে’ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (কুকসু) নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে ‘কুকসু প্রতিষ্ঠা আন্দোলন’ ব্যানারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
এসময় তারা ‘কুকসু আমার অধিকার রুখে দেওয়ার সাধ্য কার’, ‘কুকসু নিয়ে তালবাহানা চলবে না চলবে না’, ‘ডিসেম্বর নির্বাচন দিতে হবে, দিতে হবে’, ‘নভেম্বরে তফসিল দিতে হবে দিতে হবে’, ‘প্রশাসনের দ্বিচারিতা মানি না মানব না’, ইত্যাদি বলে স্লোগান দেন। অবস্থান কর্মসূচি শেষে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সাথে সাক্ষাৎ করতে যান।
অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেয়া আইন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী বায়েজিদ হোসেন বলেন, ‘আমরা ভেবে ছিলাম কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অন্যতম নিরপেক্ষ একটি প্রশাসন। যে প্রশাসন এখনো আমাদের রক্তের উপর দাড়িয়ে আছে। ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও একটি দল ক্যাম্পাসের ভিতরে সদস্য ফরম বিতরণ করছে। এই বিষয়ে প্রশাসনকে প্রশ্ন করা হলে তারা বলেন সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের বাইরে আমরা কিছু বলতে পারবো না। প্রসাশনের এই ব্যর্থতাকে গুছিয়ে দিতে পারবে একমাত্র কুকসু নির্বাচন।’
প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ২০২২ -২০২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সৈয়দা নাজিফা নাফিল বলেন, ‘জুলাইয়ে আগে আমরা ছাত্রলীগের রাজনীতি দেখেছি। আমরা ভেবেছিলাম জুলাই পরবর্তী এই পরিবেশ বদলাবে। কিন্তু বর্তমানে ছাত্র রাজনীতি ওই ধারায় প্রবাহিত হচ্ছে যা আমাদের কাছে এখন হতাশা ও উদ্বেগের বিষয়। আমি একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে চাই না ক্যাম্পাসে দলীয় রাজনীতির কারণে পরিবেশটা আতংকিত থাকুক। তাই খুব দ্রুত কুকসু নির্বাচন চাই।’
ফার্মেসী বিভাগের ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাইম ভূঁইয়া বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ১০০তম সিন্ডিকেটে ক্যাম্পাস রাজনীতি নিষিদ্ধ করা সত্ত্বেও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন তাদের রাজনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। কুকসু নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা এই লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখাবো। কুকসু নির্বাচন এই লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতিকে বন্ধ করার অন্যতম মাধ্যম।’
অবস্থান কর্মসূচি শেষে উপাচার্যের সাথে সাক্ষাৎ করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের ফরম বিতরণ ও নানা কার্যক্রমের বিষয়ে শিক্ষার্থীরা জিজ্ঞেসা করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হায়দার আলী বলেন, ‘আমরা ছাত্র রাজনীতির বন্ধ করিনি। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশই ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ রয়েছে। আমরা সবসময় বলেছি যে আমরা এই ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি চাই না। আমরা তো পুলিশ না যে লাঠি নিয়ে যাব আর বলব এই কার্যক্রম বন্ধ করো। আমার কোনভাবেই এর আইনত বৈধতা দিতে পারব না। যদি এর বিরুদ্ধে কোন আইনত ব্যবস্থা নেওয়ার থাকে তাহলে তা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট নিবে। আমরা মনে করি বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতি নির্ধারণে নির্বাচিত ছাত্র প্রতিনিধিরা অংশ নিক। ’
ছাত্র সংসদের রোডম্যাপ প্রদানে দেরির বিষয়ে জিজ্ঞেসা করলে তিনি বলেন, ‘সিন্ডিকেট চাইলে রোডম্যাপ দিয়ে দিতে পারে। কিন্তু নির্বাচনের জন্য রাষ্ট্র থেকে ঐ চিঠিটা আসতেই হবে। আগামী সিন্ডিকেট মিটিং এ কুকসুর তফসিল ও নির্বাচনের বিষয়ে হয়তো কোন সিদ্ধান্ত আসতে পারে।’
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩