মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:২২ অপরাহ্ন
 মো: সিয়াম আবু রাফি, জবি প্রতিনিধিঃ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগের মেধাবী ১ম, ২য় ও ৩য় স্থান অধিকারী শিক্ষার্থীদের ছাত্রশিবির কর্তৃক ‘কবি মতিউর রহমান মল্লিক মেরিট অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করা হলেও বিশ্ববিদ্যালয়টির সংগীত, নাট্যকলা, ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন এই তিন বিভাগের কোন মেধাবী এ মেরিট অ্যাওয়ার্ডে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। সংস্কৃতিঅঙ্গনের এ তিন বিভাগকে বাদ দেওয়ায় সমালোচনায় পড়ছেন সংগঠনটি।
জানা যায়, গত ২৮ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদ মাঠে বিশ্ববিদ্যালয়টির ২০১৮-১৯ এবং ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে প্রতি বিভাগে প্রথম তিনজনকে কবি মতিউর রহমান মল্লিক মেরিট অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কিন্তু এই তিন বিভাগের কোন শিক্ষার্থী এ তালিকায় ছিলো না।
আক্ষেপ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের ১৪ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী মো. ইমাম হোসেন বলেন, “ছাত্রশিবির কাকে বৃত্তি দিবে বা না দিবে সেটা তাদের ব্যক্তিগত ইচ্ছা। কিন্তু পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগ থেকে কলা অনুষদের বিভাগগুলোকে তালিকার অন্তর্ভুক্ত না করাটা নিন্দনীয় এবং তা প্রকাশ্যে বৈষম্যতা এবং স্বল্পজ্ঞানের প্রকাশ্য-প্রমান। নাট্যকলা, সংগীত ও ফিল্ম এ্যান্ড মিডিয়া বিভাগ গুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের বাহিরে নয়। এসব কাজ করে এসব সাংস্কৃতিক বিভাগগুলো সমাজ থেকে আলাদা করে দেয়ার প্রয়াসমাত্র। অথচ কবি মতিউর রহমান একজন কবি, সংস্কৃতিমনা। যার গজল ও গান বিভিন্ন রাগ ব্যবহার করে গাওয়া হয়”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংগীত বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, ” যদি মেধার ভিত্তিতে কোনো অনুদান বা বৃত্তির উদ্যোগ প্রকৃত অর্থেই নেওয়া হয়, তাহলে সেটা সব বিভাগের শিক্ষার্থীদেরই প্রাপ্য। এই তিন বিভাগ কেনো এর আওতাভুক্ত হলোনা সেটা জানার আগ্রহ প্রকাশ করছি। সেইসাথে আশা করছি বিভাগীয় চেয়ারম্যানসহ অন্যসব শিক্ষকরাও এই ব্যাপারে সোচ্চার হবেন যে কেনো তাদের শিক্ষার্থীরা প্রাপ্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত হলো”
নাট্যকলা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জেরিন চাকমা বলেন, “নাট্যকলা বিভাগের ১৫তম আবর্তন এখনো স্নাতক সম্মান পরীক্ষা শেষ করেনি।ফলে তাদের কে এই তালিকায় না রাখাটা এক দিক থেকে যৌক্তিক হলেও। এই বিষয়ে তারা কি আদ্যোও বিভাগের সাথে যোগাযোগ করেছে কিনা জানি না। যদি যোগাযোগ না করে থাকে তাহলে বিষয়টা এককেন্দ্রিক একটা সিদ্ধান্ত বলে আমার মনে হয়। একই সাথে অন্যান্য বিশেষায়িত যে বিভাগগুলো আছে যতদূর জানি ওদের স্নাতক শেষ হয়েছে এবং পরীক্ষার ফলও পেয়েছে সে ক্ষেত্রে উক্ত অনুষ্ঠানে তাদের আহ্বান করাটা উদারতার পরিচয় দিতো।’
তিনি আরোও বলেন, ‘যদি তাদের আহ্বান না করা হয়ে থাকে তাহলে বিষয়টা দুঃখজনক। যদি আহ্বান করার পর কেউ অংশগ্রহণ না করতো সেচ্ছায় এতে উক্ত সংগঠনের কোনো দায় থাকতো না। কিন্তু,বিষয়টা যদি এমন হয় বিশেষায়িত বিভাগ গুলোকে ইচ্ছাকৃত ভাবে এই অনুষ্ঠানের বহির্ভূত রাখা হয়েছে এটা অবশ্যই বৈষম্য মূলক একটা আচরণ এবং এর দায় উক্ত সংগঠনের উপর বর্তায়”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফিল্ম এন্ড মিডিয়া বিভাগের ১৫ তম আবর্তনের এক শিক্ষার্থী বলেন “আমি ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন বিভাগের ১৫তম আবর্তনের শিক্ষার্থী। আমার বিভাগের সর্বশেষ রেজাল্ট (৭ম সেমিস্টার) অনুযায়ী আমি প্রথম। বর্তমানে মাস্টার্সের ক্লাস শুরু না হওয়ায় আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে বেশি আসা হয়নি। এই বৃত্তির কথা আমি দূর্ভাগ্যবশত নির্ধারিত তারিখের পরে জানতে পারি ক্যাম্পাসের ব্যানারের মাধ্যমে। আর এছাড়া আমার সাথে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি। যতদূর জানি আমার বিভাগের অন্য কারো সাথেই করা হয়নি। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে একটু আক্ষেপ হয়েছে”
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলীম আরিফ বলেন, “আমরা খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে আয়োজনটা করেছি, কন্ট্রোলারের কাছ থেকে আমরা যে সকল তথ্য পেয়েছিলাম তার মাঝে প্রায় ৪০ টিরও বেশি তথ্য ছিল ভুল। তবুও আমরা রেজিষ্ট্রেশন পদ্ধতি চালু রেখেছিলাম এবং বিভাগগুলোতে যোগাযোগের চেস্টা করেছি।’
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘দুই একটি বিভাগের শিক্ষার্থীদের সাথে চেস্টা করেও হয়তো আমরা যোগাযোগ করে উঠতে পারিনি এজন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। তবে যারা রেজিষ্ট্রেশন করেছে সবাইকে আমরা সম্মাননা প্রদান করেছি এমনকি শেষ মুহুর্তেও যারা রেজিষ্ট্রেশন করেছে আমরা তাদের কেও মেরিট অ্যাওয়ার্ড প্রদান করি। তবে যোগ্য এখনো যারা এই মেরিট অ্যাওয়ার্ড পায়নি তারা যদি রেজিষ্ট্রেশন করে বা আমাদের সাথে যোগাযোগ করে আমরা তাদের কে সম্মাননা প্রদান করব’
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩