মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:১৯ পূর্বাহ্ন
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কেশবপুর ইউনিয়নের চর ঈশানের ভূমিহীনদের নামে দেয়া প্রায় পাঁচশ একর জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় ভূমিহীন পরিবারের সদস্যরা এ ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচিসহ বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার কেশবপুর ইউনিয়নের তালতলি বাজার এলাকায় ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
মানববন্ধনে ভুক্তভোগীরা জানান, গত সোমবার (২০ অক্টোবর) রাতে একদল লোক তাদের জমির মাটি কাটতে শুরু করে। খবর পেয়ে ভুক্তভোগী কয়েকজন সেখানে ছুটে গেলে, সেখানে ৩০-৪০ জনের একটি দল মানুষ দেখতে পান। যারা দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা হাতে পাহারায় থেকে মাটি কাটার কাজ করছিলেন।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, পাশের নাজিরপুর ইউনিয়নের ভূমিহীন কৃষক সমবায় সমিতির নামে তাদের জমি দখলের চেষ্টা চলছিল। দখলকারীরা পৌর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজী মোহাম্মদ পলাশের লোক দাবি করে তাদের ভয়ভীতি দেখান। পরদিন মঙ্গলবার পুনরায় মাটি কাটতে নিষেধ করেন ভুক্তভোগীরা। কিন্তু দখলকারীরা তা শোনেনি। এরপর বুধবার সকালে ভূমিহীন কৃষকেরা ঐক্যবদ্ধভাবে ওই চরে গিয়ে ১৩ জনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন।
জমি বন্দোবস্ত পাওয়া ভূমিহীন কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চর ঈশানের প্রায় পাঁচশ একর জমি ১৪১ জন ভূমিহীনদের বন্দোবস্ত দেয়া হয়েছে। ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তারা চাষাবাদ করে আসছিলেন। তিন-চার মাস ধরে ভূমিহীন কৃষক সমবায় সমিতির নামে কিছু ভূমিদস্যু ওই জমি দখলের চেষ্টা করছে। তাদের সমর্থন দেন বিএনপির একজন নেতা। অভিযুক্ত দখলকারীরা কেউ ভূমিহীন না বলেও জানান তারা।
১৯৫৪ সালে বন্দোবস্ত পাওয়া কৃষক মো. মোসারেফ হোসেন বলেন, চর ঈশানের জেএল নম্বর ৬৬ এবং ৪৮ নম্বর খতিয়ানের ৩৫ ও ৩৬ দাগের ৫ একর জমি তিনি বন্দোবস্ত পেয়ে চাষাবাদ করে আসছেন। সম্প্রতি সেই জমি ভূমিদস্যুদের নজরে পড়েছে। তারা জোরপূর্বক তা দখল করার পাঁয়তারা করছে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে বিএনপি নেতা হাজী মোহাম্মদ পলাশ বলেন, আমি কিংবা আমার কোনো লোক চর ঈশানের জমি দখল করতে যাননি। যতটুকু জেনেছি, নাজিরপুর ইউনিয়ন ভূমিহীন কৃষক সমবায় সমিতির লোকজন আদালতের ডিক্রি বলে ওই জমি দখলে নেয়ার জন্য গিয়েছিলেন।
এ বিষয়ে বাউফল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আকতারুজ্জামান সরকার বলেন, সেদিন (২২ অক্টোবর) দুই পক্ষের মধ্যে ঝামেলার সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে এক পক্ষের হাতে আটকৃতদের নিয়ে আসে। তবে লিখিত কোনো অভিযোগ না পাওয়ায়, তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
বাউফলের উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আমিনুল ইসলাম বলেন, যেসব ভূমিহীনদের নামে জমি বন্দোবস্ত রয়েছে, তারাই জমি ভোগ দখল করবেন। তবে যেহেতু ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছে, তাই কাগজপত্রের সঠিকতা নিরূপণ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হবে বলে জানান তিনি।
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩