রবিবার, ২৭ Jul ২০২৫, ০৭:১১ অপরাহ্ন
সাইফুর রহমান লিওন, শরীয়তপুর প্রতিনিধি:
শরীয়তপুরের নড়িয়ায় বিএনপির ক্লাবে বসে নেতাদের সঙ্গে ছবি তুলেছেন নড়িয়া থানার এক সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই)। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ওই ছবি ঘিরে স্থানীয়দের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
জেলার নড়িয়া উপজেলার চামটা ইউনিয়নের গুলমাইজ গ্রামে অবস্থিত ইউনিয়ন বিএনপির ক্লাবে নেতাদের মাঝখানে বসে ছবি তোলেন নড়িয়া থানার এএসআই (উপ-সহকারী পরিদর্শক) সোহেল রানা। ছবিতে তার ডান পাশে বসা দেখা যায় চামটা ইউনিয়ন বিএনপির প্রস্তাবিত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ আলী খান ও কনস্টেবল সুলতানকে। আর তার বামে বসা যুবদল নেতা আল আমিন ছৈয়াল ও দ্বিন ইসলাম ছৈয়াল।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, ছবিটি গত ২৫ এপ্রিল তোলা হয় এবং পরে ‘আল আমিন ছৈয়াল’ নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করা হয়। প্রথমে বিষয়টি নজরে না আসলেও গত ১৩ জুলাই একই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সুরুজ উদ্দিন আহম্মেদ উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মাসুদুর রহমান রিপনের গলায় নিজ হাতে ফুলের মালা পরিয়ে দেন। সেই মুহূর্তের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে ১৬ জুলাই তাকে গোপালগঞ্জ পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়। এরপরই এএসআই সোহেল রানার ছবিটিও স্থানীয়রা নতুন করে শেয়ার দিতে শুরু করেন।
বিষয়টি নিয়ে কথা হলে অভিযুক্ত এএসআই সোহেল রানা বলেন, আমি ওই দিন একটি অভিযোগের তদন্তে গুলমাইজ যাই। সেখানে গেলে উভয় পক্ষ কথা বলার জন্য আমাকে ওই বিএনপির ক্লাবে নিয়ে যায়৷ তখন আমি ওই ক্লাবে বসি। ছবিটি কখন কে তুলেছে আমি জানি না।
এ বিষয়ে চামটা ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব আমিনুল ইসলাম বলেন, নড়িয়া থানার এএসআই (উপ-সহকারী পরিদর্শক) সোহেল রানা চামটা ইউনিয়নের গুলমাইজ গ্রামের বিএনপির প্রস্তাবিত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ আলী খানের ভাইয়ের ছেলে চামটা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি রফিক খানকে গ্রেপ্তার করার জন্য আসে। তখন সম্ভবত এই পুলিশের টিম ক্লাবে বসে মোহাম্মদ আলীর সাথে সমঝোতা করে। পরবর্তীতে ওই ছাত্রলীগ নেতা আর গ্রেপ্তার হয়নি।
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে শরীয়তপুর জেলার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ইমরান আল নাজির বলেন, ২৪-পরবর্তী অভ্যুত্থানের পর নতুন বাংলাদেশে আমরা দলীয় লেজুড়বৃত্তি, দলের দাস, এমনকি কোনো দলের আধিপত্য বা তেলবাজি করবে এমন পুলিশ সদস্য চাই না। পুলিশকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থাকতে হবে। আমরা সবসময় চাই পুলিশের স্বাধীন কমিশন থাকবে। পুলিশ শুধুমাত্র জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ থাকবে এবং তাদের সেবা দিবে।
এ বিষয়ে শরীয়তপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নড়িয়া সার্কেল) ড. আশিক মাহমুদ বলেন, পুলিশ সদস্যদের এরকম আচরন প্রত্যাশিত নয়। ইতিমধ্যে বিতর্কে জড়ানো নড়িয়া থানার এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এএসআই সোহেলের বিতর্কিত বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলমান। সে দোষী হলে অবশ্যই বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩