বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:১১ অপরাহ্ন
মো সিয়াম আবু রাফি, জবি প্রতিনিধি:
প্রাথমিক শিক্ষায় সংগীত ও শারীরিক শিক্ষার পদ পুনর্বহালের দাবিতে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা গান গেয়ে এক ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ জানান।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর)বিশ্ববিদ্যালয়ের ভার্স্কয চত্ত্বরে একটি প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়।
সমাবেশকারীরা গানে গানে পুরো ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ রযালি করেন। এসময় তাদের সাথে সংহতি জানিয়ে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন প্রতিনিধি এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরাও প্রতিবাদ রযালিতে অংশ নেয় এবং সংহতি জানান।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির সংগীত বিভাগের ১৫ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী পারমিতা সাহা বলেন, “প্রাথমিকে সংগীত এবং শারীরিক শিক্ষা শিক্ষক পদ পুনর্বহালের দাবিতে বাংলাদেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের ন্যায় আমরা আজকের এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। আজকের এই কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সংগীত বিভাগ আমাদের অবস্থান জানান দিচ্ছি। এ দুটি পদ পুনর্বহাল না করলে আমরা আরও কঠোর আন্দোলনে যাব।’
একই বিভাগের শিক্ষার্থী ফয়সাল কবির বলেন, ” আমরা আমাদের বিভাগ সহ বেশ কিছু বিভাগের শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগ করেছি, আজ প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে। এখন অবধি উনারা নির্দিষ্ট করেও কিন্তু বলেনি যে কেনো কি কারণে এই দুটি পদ বাতিল করেছে এটি আমাদের কে নির্দিষ্ট করেই জানাতে হবে। আগামী রবিবার প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগ একত্রে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কাছে স্মারক লিপি জমা দিবে। আমরা এটি পুনর্বহাল চাই এরপরও যদি আমাদের দাবি মানা না হয় তাহলে আমরা আরও কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দিব ”
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জবি শাখার সভাপতি ইভান তাহসীব বলেন, “আমি সাংগঠনিক ভাবে এবং ব্যাক্তিগত ভাবেও মনে করি প্রাথমিক পর্যায়ে অবশ্যই সংগীত এবং শারীরিক শিক্ষা শিক্ষক পদ থাকা উচিত। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো যেখানে এ বিষয় গুলো তে সর্বোচ্চ জোর দিচ্ছে সেখানে বাংলাদেশে এভাবে এতটা অগুরুত্বপূর্ণ করে দেখছে যে এই পদগুলোই বাতিল হলো। আমরা আজকের এই আন্দোলনে সম্পূর্ণ ভাবে সংহতি প্রকাশ করছি। আজকের এই আন্দোলন রাষ্ট্রের কাছে একটা বার্তা, এরপরও তারা যদি পুনর্বহাল না রাখে তাহলে আমরা আরও বৃহৎ আকারে কঠোর আন্দোলনে যাব ”
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সংগীত বিভাগের চেয়ারম্যান ড. অণিমা রায় বলেন : “সংগীতের জন্য বাঙালি কে দাঁড়াতে হবে এমনটা কখনো কল্পনাও করতে পাচ্ছিলাম না। মুক্তিযুদ্ধ ত ধর্মের জন্য ছিল না ছিল সংস্কৃতির আন্দোলন। ভাষা আন্দোলন কেনো হয়েছিল আমাদের বাংলা ভাষা কেড়ে নিতে চাচ্ছিল অর্থাৎ আমাদের নিজস্বতা কেড়ে নিতে চাচ্ছিলো যাতে আমরা সংস্কৃতি ভুলে যাই। এটা প্রক্রিয়াটি সূদুর প্রসার চক্রান্ত। প্রাথমিকে অবশ্যই সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা শিক্ষক পদ পুনর্বহাল করতে হবে , যতদিন না পর্যন্ত এটা কার্যকর হয় ততদিন পর্যন্ত আমরা আমাদের কার্যক্রম বহাল রাখবো।
এর আগে গত ২৮ অগাস্ট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন নিয়োগ বিধিমালার প্রজ্ঞাপন জারি হয়। নতুন বিধিমালায় সংগীত ও শরীরচর্চা বিষয়ের সহকারী শিক্ষকের দুটি পদ নতুন করে সৃষ্টি করা হয়েছিল। কিন্তু এরপর থেকে ধর্মভিত্তিক সংগঠনগুলো সংগীত বিষয়ের সহকারী শিক্ষক পদটি সৃষ্টি নিয়ে সমালোচনা শুরু করে। এই প্রেক্ষাপটে রোববার সংগীত শিক্ষক ও শরীরচর্চা শিক্ষকের পদ বাতিল করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩