বুধবার, ০৬ অগাস্ট ২০২৫, ১১:০৫ অপরাহ্ন
মিয়া মোহাম্মদ ছিদ্দিক, কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার লতিবাবাদ ইউনিয়নের সাদুল্লারচর এলাকায় একটি বসতবাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) দিবাগত রাত ২টার দিকে আবুল হাশেম মাস্টারের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয়রা ধাওয়া দিয়ে পাঁচ ডাকাতকে ধরে পিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
গণপিটুনির শিকার ব্যক্তিরা হলেন কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার বৌলাই পাটধা কাঠালিয়া গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে মো. সেলিম মিয়া, করিমগঞ্জ উপজেলার চরকুরুমসি গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে আব্দুর রহমান, নরসিংদীর মাধবদী উপজেলার বালাপুর গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে মো. আসলাম, একই উপজেলার পাইকারচর ইউনিয়নের সাগরদী গ্রামের বাছেরের ছেলে সবুজ ও শিবপুর উপজেলার দক্ষিণ সাদারচর গ্রামের দিরুল ইসলামের ছেলে আল আমিন মিয়া।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, ঘটনার আগের দিন বিকেলে সবুজ নামের এক ব্যক্তি বাড়ির নিচতলা ভাড়া নিতে আসেন। তিনি বাড়ি দেখে যাওয়ার পর রাতে ফোন করে বলেন, বাসা ভাড়া নিতে প্রস্তুত এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করে এনেছেন। তখন পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁকে পরদিন সকালে আসতে বলা হয়।
সেদিন রাত ১১টার দিকে পরিবারের সদস্যরা খাওয়া-দাওয়া শেষ করে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ২টার দিকে নিচতলার কেচিগেটের তালা ভেঙে এবং দোতলার দরজার লক ভেঙে ৮-১০ জনের ডাকাতদল বাড়িতে ঢুকে পড়ে। তারা অস্ত্রের মুখে বাসার সবাইকে জিম্মি করে।
ডাকাতেরা প্রথমেই গলায় থাকা দেড় ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেয়। এরপর পরিবারের সদস্যদের অস্ত্র ঠেকিয়ে আরও দেড় ভরি স্বর্ণালংকার, নগদ ৪২ হাজার টাকা এবং ১৫ হাজার টাকা দামের একটি অ্যান্ড্রয়েড ফোন লুট নেয়।
আবুল হাশেম মাস্টারের ছেলে মিজানুর রহমান বলেন, ‘সবুজ নামের লোকটা আমার এলাকায় জাহিদ চাচার পরিচয় দিয়ে এসেছিল। বাসাভাড়া দেখতে এলে গোটা বাসার খুঁটিনাটি দেখে নেয়। রাতে তারা যেভাবে হিংস্রভাবে আচরণ করেছে, তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।’
ডাকাতের দল বাসা থেকে বেরিয়ে গেলে মিজানুর রহমান চিৎকার করে ‘ডাকাত ডাকাত’ বলে আশপাশের লোকজনকে ডাকেন। স্থানীয়রা ছুটে এসে ধাওয়া দিলে ডাকাতের দল দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পালাতে চেষ্টা করে। এ সময় পাঁচজন ধরা পড়ে এবং গণপিটুনির শিকার হয়।
মিজানুর বলেন, ‘আমার ছেলে নিজেই বলেছে আব্বা, এই লোকটাই বিকেলে বাসা ভাড়া নিতে এসেছিল।’আহত ডাকাতদের কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক মফিজুর রহমান বলেন, ‘একজনকে রিলিজ দেওয়া হয়েছে, একজন অবজারভেশনে আছে এবং বাকিদের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।’
কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘ডাকাতির ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩