বৃহস্পতিবার, ১৭ Jul ২০২৫, ০৮:৩৩ অপরাহ্ন
মিয়া মোাহাম্মদ ছিদ্দিক, কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ের বিশাল পতিত জমিতে প্রথমবারের মতো তিল চাষে সাফল্য লাভ করেছেন কৃষক আলফাজ উদ্দিন মানিক। চরের ৩৫ বিঘা জমিতে তিনি বিনা তিল-২ জাতের আবাদ করেছেন। এতে প্রথমবারেই বাম্পার ফলন পেয়েছেন। খরচ মিটিয়ে কয়েকগুণ লাভের আশা করছেন এ কৃষক। তার এ সফলতা দেখে অন্য কৃষকেরাও পতিত জমিতে তিল চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
জানা গেছে, পাকন্দিয়া উপজেলার জাঙালিয়া ইউনিয়নের চরকাওনা এলাকা সংলগ্ন ব্রহ্মপুত্র নদেরপাড়ের লক্ষীরচরে ছয় বছরের জন্য ৩৫ বিঘা জমি ইজারা নেন ওই গ্রামেরই আলফাজ উদ্দিন মানিক। এরপর পতিত জমির আগাছা পরিস্কার করে সেখানে তিনি কৃষি বিভাগের পরামর্শে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা কার্যক্রম শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের আওতায় বিনাতিল-২ এর আবাদ করেন। এতে তার বিঘা প্রতি সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে চার হাজার টাকা। যে ফলন এসেছে তাতে বিঘা প্রতি ৪-৫মণ করে ফলন পাওয়ার আশা করছেন। বর্তমান বাজারে প্রতিমণ তিল ৫২০০-৫৫০০টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সে হিসেবে তিনি খরচ মিটিয়ে কয়েকগুণ বেশি লাভের আশা করছেন।
উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, বিনার গবেষণা কার্যক্রম শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের আওতায় চরকাওনা লক্ষীরচরে ৩৫ বিঘা জমিতে প্রথমবারের মতো বিনা উদ্ভাবিত উন্নতজাত বিনা তিল-২ এর আবাদ করা হয়েছে। এতে প্রথমবারেই ব্যাপক ফলন এসেছে। খরচ মিটিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হবেন চাষিরা। তাছাড়া তিলের বাজার দরও ভালো। ওই পাঁচজনের সফলতা দেখে অন্য কৃষকেরাও তিল চাষে ঝুঁকছেন। আগামিতে এ উপজেলায় তিলের আবাদ আরো বাড়বে।
তিল চাষি আলফাজ উদ্দিন মানিক বলেন, ছয় বছরের জন্য ব্রহ্মপুত্র চরের ৩৫ বিঘা জমি ইজারা নিই। এরপর সেখানে পরপর দুইবছর আলুর চাষ করেছি। বছরে একটি ফলনই হতো। পরবর্তীতে কৃষি বিভাগের পরামর্শে বিনার সহযোগিতায় আরো চারজনকে নিয়ে পুরো জমিতে বিনাতিল-২ এর আবাদ করি। চলতি বছরের এপ্রিল মাসের মাঝামাঝিতে জমিতে বীজ বপন করি। বর্তমানে প্রতিটি তিলগাছে ফলন এসেছে।আগামি এক সপ্তাহের মধ্যে কর্তন শুরু হবে।তিনি আরো জানান, তিল চাষে প্রথমবারেই এমন বাম্পার ফলনে আমরা খুবই খুশি। আশা করছি খরচ মিটিয়ে কয়েকগুণ লাভ হবে।
স্থানীয় আরেক কৃষক শহীদুল ইসলাম বলেন, চরের পতিত জমিতে তিল চাষে এমন ফলন আসে তা আগে দেখিনি। আমরাও পতিত জমিতে তিল চাষ করব বলে ঠিক করেছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নুর-ই-আলম বলেন, আমাদের উদ্দেশ্যে হচ্ছে এক ফসলি জমিকে দুই ফসলি জমিতে এবং পতিত জমিগুলোকে আবাদের আওতায় নিয়ে আসা। সেজন্য বিনার সহযোগিতায় ওই এলাকায় এক সঙ্গে ৩৫ বিঘা পতিত জমিতে বিনাতিল-২ এর আবাদ করানো হয়েছে। এতে বাম্পার ফলন এসেছে। আগামিতে পাশের পতিত জমিগুলোও আবাদের আওতায় চলে আসবে।
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩