মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:০৫ অপরাহ্ন
বিদ্রোহীরা রাজধানী দামেস্ক দখল করেছে। পালিয়ে গেছেন প্রেসিডেন্ট বাসার আল আসাদ। এ খবর শোনার পর সিরিয়া থেকে পালিয়ে লেবাননে আশ্রয় নেয়া সিরিয়ারা নিজ দেশে প্রবেশ শুরু করেছে ৮ ডিসেম্বর ২০২৪।
মাত্র ১২ দিনে অপ্রতিরোধ্য গতিকে এগিয়ে গেলেন বিদ্রোহীরা যার মাধ্যমে দামেসকে পতন হলো বাসার আল আসাদের। এত কম সময়ে এই পতন কে নিয়ে ওই অঞ্চলে নজরদারি করা বিভিন্ন সংস্থা আঞ্চলিক প্রভাবশালীরা ও মেলাতে পারেনি।
গত ২৭ নভেম্বর নতুন করে আক্রমণ শুরু করার পর সিরিয়া বিদ্রোহীরা এগিয়ে এসেছেন অপ্রতিরোধ্য গতিতে। অভিযান শুরু করার মাত্র চার দিনের মাথায় তারা এই দেশটির দ্বিতীয় বৃহৎ নগরী আলিপুর দখল নিয়ে নেন সেখান থেকে তারা রওনা দেন আরেক বড় শহর আমার দিকে আলেপ দখলের সময় বিদ্রোহীরা তেমন কোন প্রতিরোধের মুখে পড়েনি বলে জানান সিরিয়া অবজাভেটরি ফর হিউম্যান রাইট। যুক্তরাজ্যভিত্তিক এই সংস্থাটি সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের ওপর নজর রেখে থাকে।
হামা দখলের পথে বিভিন্ন সড়কে বিদ্রোহীদের সাথে আসাদ বাহিনীর লড়াই হয়েছিল।
কিন্তু আসাদ বাহিনী সেখানেও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম হয়নি। বিদ্রোহীরা কয়েক দিন থেকে হামা শহরে হামলা চালান বলে জানায় অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস।
সিরিয়ায় এবারে বিরোধী অভিযানে বিদ্রোহীদের নেতৃত্ব দিয়েছে হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)।
তাদের মিত্রগোষ্ঠীর যোদ্ধারা মূলত পিকআপ ভ্যান ও মোটর বাইকে করে সামনে অগ্রসর হয়েছেন, এটিও তাদের দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাওয়ার একটি কারণ বলে বিবেচনা করেন বিশ্লেষকরা।
হামা দখলের পর বিদ্রোহীরা রওনা হন হোমসের পথে কারণ রাজধানী দামেসকে পৌঁছাতে ভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহর হিসেবে করেছেন তারা। কেননা হোমস থেকে সিরিয়ার রাজধানী দূরত্ব মাত্র ১০০ মাইল (১৬০ কিলোমিটার)।
গত ৬ ডিসেম্বর বিদ্রোহীরা প্রায় বিনা বাধায় হোমসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যান। তখনই যেন মনে হচ্ছিল আসাদ সরকারের পতন আসন্ন।
এত কম সময়ে বিদ্রোহীদের দামেস্ক দখলের কারণ ব্যাখ্যা করেছেন সিএনএন।
তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে এইচটিএসের হামলার বিরুদ্ধে তেমন কোন প্রতিরোধ করে তুলতে পারেনি। সিরিয়ার পুলিশ বাহিনী খুব একটা প্রশিক্ষিত নয়। তাই বিষয়টা এমন হয়েছে, তারা বিদ্রোহীদের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি।
বিদ্রোহী যোদ্ধারা যখন হামা শহরের কাছে পৌঁছান তখন সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় একে তাদের প্রতিরক্ষা লাইন “অপ্রতিরোধ্য” করতে বলেছিলেন। পরে সিরিয়াস সেনাবাহিনী বলা হয়, “বেসামরিক নাগরিকদের প্রাণ রক্ষার্থে” তারা তাদের সেনা প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
এমন দাবি মেনে নেয়া বোকামি, বিশেষ করে আসাদ সরকারের কাছ থেকে যখন এ ধরনের দাবি করা হয়।
কারণ সিরিয়ায় ১৩ বছরের বেশি সময় ধরে গৃহযুদ্ধ চলছে। যুদ্ধে হাজার হাজার বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন। বিশ্লেষকরা বলেছেন মনোবলের অভাব ও দুর্নীতির কারণে আসাদ বাহিনীর ভেতরটা ফাঁপা হয়ে গেছে।
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১৫-১২৫২৪৩