মঙ্গলবার, ০১ Jul ২০২৫, ১০:০২ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনামঃ
বর্তমান জাবি প্রশাসন ফ্যাসিবাদী হয়ে উঠেছে: অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রায় গাইবান্ধায় এনসিপির নেতৃবৃন্দ নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণের প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন ও অবস্থান কর্মসূচি ‎চালের অস্বাভাবিক মূল্য বাড়ায় বরিশালে মানববন্ধন শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে গ্রেপ্তার ২ মুরাদনগরে ধর্ষণের ঘটনায় সংখ্যালঘু নারীর বাড়িতে ছুটে গেলেন সাবেক এমপি “কায়কোবাদ” কুড়িগ্রামে জাতীয় নাগরিক পার্টির প্রেস ব্রিফিং দুমকীতে বীর মুক্তিযোদ্ধার বাসায় দুর্ধর্ষ ডাকাতি বেরোবিতে হঠাৎ বাড়ল সেমিস্টার ফি, শিক্ষার্থীদের তীব্র ক্ষোভ ও স্মারকলিপি প্রদান বাজেট ঘাটতির অজুহাতে আটকে আছে ঢাকাগামী বাস মাভাবিপ্রবি’র ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে জামায়াতে ইসলাম জুলাই অভ্যুত্থান স্মরণে মাসব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন প্রধান উপদেষ্টার শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মধ্য দিয়ে এনসিপির ‘জুলাই পদযাত্রা’ শুরু সৈয়দপুর ইউনিয়ন ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে ফলচক্র অনুষ্ঠিত মাভাবিপ্রবি’র ক্যাফেটেরিয়ায় পর্দাব্যবস্থা দাবি করে প্রশাসনের দ্বারে নারী শিক্ষার্থীরা

বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করল ভারত

ভারতীয় স্থল শুল্ক স্টেশন ব্যবহার করে বন্দর ও বিমানবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানির জন্য বাংলাদেশকে দেওয়া দীর্ঘদিনের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে ভারত। মঙ্গলবার দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে বাংলাদেশের এই সুবিধা বাতিল করেছে। খবর দ্য হিন্দুর।

ভারতের রপ্তানিকারকরা—বিশেষ করে পোশাক খাতের—প্রতিবেশী বাংলাদেশকে দেওয়া এই সুবিধা প্রত্যাহারের জন্য নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।

দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়ার (পিটিআই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এই সুবিধার ফলে ভুটান, নেপাল এবং মিয়ানমারের মতো দেশে বাংলাদেশের রপ্তানির জন্য বাণিজ্য প্রবাহ বাধাহীন ছিল। ভারত ২০২০ সালের জুনে বাংলাদেশকে পণ্য রপ্তানির এই সুবিধা দিয়েছিল।

৮ এপ্রিল জারি করা ভারতের কেন্দ্রীয় পরোক্ষ কর ও শুল্ক বিভাগের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের ২৯ জুনের জারি করা সার্কুলার বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংশোধিত এই সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে। তবে আগের সার্কুলারের প্রক্রিয়া অনুযায়ী ইতোমধ্যে ভারতে প্রবেশ করা বাংলাদেশি কার্গোকে ভারতীয় অঞ্চল ত্যাগ করার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে।

ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার এমন এক সময়ে ভারতীয় ভূখণ্ড ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানিতে বাংলাদেশকে দেওয়া সুবিধা বাতিল করল, যার কয়েক দিন আগে ভারত, বাংলাদেশসহ বিশ্বের কয়েক ডজন দেশ ও অঞ্চলের বিরুদ্ধে উচ্চমাত্রার শুল্ক আরোপ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

আগের বিজ্ঞপ্তিতে ভারতীয় বন্দর ও বিমানবন্দরগুলোতে যাওয়ার পথে দেশটির স্থল শুল্ক স্টেশন (এলসিএসএস) ব্যবহার করে বাংলাদেশ থেকে তৃতীয় দেশে রপ্তানি কার্গো ট্রান্সশিপমেন্টের অনুমতি দেওয়া হতো। ভারতীয় বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের সরকারের এই সিদ্ধান্ত পোশাক, পাদুকা, রত্ন এবং গহনার মতো কয়েকটি ভারতীয় রপ্তানি খাতের জন্য সহায়ক হবে।

বিশ্ব বাণিজ্যে পোশাক খাতে ভারতের অন্যতম বড় প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ। ভারতীয় রপ্তানিকারকদের সংগঠন ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশনসের (এফআইইও) মহাপরিচালক অজয় সাহাই বলেছেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে এখন আমাদের কার্গো পরিবহনে অতিরিক্ত সক্ষমতা থাকবে। অতীতে রপ্তানিকারকরা বাংলাদেশকে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা দেওয়ার কারণে বন্দর ও বিমানবন্দরে স্থান কম পাওয়ার বিষয়ে অভিযোগ করতেন।

ভারতের পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন এইপিসি বাংলাদেশকে দেওয়া সুবিধার আদেশ স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছিল। ওই সুবিধার ফলে দিল্লি এয়ার কার্গো ভবনের মাধ্যমে বাংলাদেশের রপ্তানি কার্গো তৃতীয় দেশে ট্রান্স-শিপমেন্টের অনুমতি পেতো।

এপিসির চেয়ারম্যান সুধীর সেখরি বলেছেন, প্রত্যেক দিন গড়ে প্রায় ২০ থেকে ৩০টি পণ্যবাহী ট্রাক দিল্লিতে আসে। যা কার্গোর চলাচল ধীর করে দেয় এবং এয়ারলাইন্সগুলো এই ধীরগতির কারণে অযৌক্তিক সুবিধা নিচ্ছে।

ভারতীয় থিঙ্ক ট্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের (জিটিআরআই) প্রতিষ্ঠাতা অজয় শ্রীবাস্তব বলেন, এই সুবিধা প্রত্যাহার করায় বাংলাদেশের রপ্তানি ও আমদানি কার্যক্রম ব্যাহত হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, পূর্ববর্তী প্রক্রিয়ায় ট্রানজিটের সময় এবং ব্যয় হ্রাস করার লক্ষ্যে ভারতের ভেতর দিয়ে একটি বাধাহীন রুটের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। এখন এই সুবিধা বাতিল হওয়ায় বাংলাদেশি রপ্তানিকারকরা লজিস্টিক বিলম্ব, উচ্চ ব্যয় এবং অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হতে পারেন। এ ছাড়া নেপাল এবং ভুটান—উভয় দেশই স্থলবেষ্টিত। বাংলাদেশের সুবিধা বাতিল করায় এই দুটি দেশ উদ্বেগ প্রকাশ করতে পারে। বিশেষ করে এই পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত হবে।

অজয় শ্রীবাস্তব বলেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) বিধি অনুযায়ী, স্থলবেষ্টিত দেশগুলোকে অন্য দেশে পণ্যের অবাধ পরিবহনের অনুমতি দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে সংস্থাটির সকল সদস্যের। এর অর্থ এই জাতীয় ট্রানজিট অবশ্যই বাধাহীন হতে হবে এবং এসব পণ্য অপ্রয়োজনীয় বিলম্ব ও ট্রানজিট শুল্ক মুক্তও থাকবে। ভারত এবং বাংলাদেশ উভয়ই জেনেভা-ভিত্তিক সংস্থাটির সদস্য।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩