শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ০২:০৯ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনামঃ
শিবচরে হত দরিদ্রদের মধ্যে বিনামূল্যে গাভী বিতরন ও গাভী পালন প্রশিক্ষন দোয়ারাবাজারের দোহালিয়ায় গণসমাবেশে কলিম উদ্দিন আহমেদ মিলন আওয়ামি লীগের লকডাউন ও নাশকতার প্রতিবাদে ঈদগাঁওতে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন এর মহড়া নবীনগর পশ্চিম ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে ইন্টারনেট সেবার চরম দুরবস্থা পঞ্চগড়ে নতুন জেলা প্রশাসকের যোগদান “ফ্যাসিস্ট গণহত্যাকারী হাসিনার কোনো লকডাউন বাংলাদেশে চলবে না” বাউফলে ড. শফিকুল ইসলাম আওয়ামী লীগের লকডাউন ও নাশকতার প্রতিবাদে এনায়েতপুরে জামায়াতে ইসলামীর মহড়া জাবিতে বাড়ানো হলো বিভাগ ভিত্তিক আসন সংখ্যা সিলেটে বিজিবির অভিযানে ১ কোটি ৩১ লাখ টাকার চোরাচালান জব্দ জাবির ১৫ নং ছাত্রী হলে নবীনবরণ, হল সংসদ অভিষেক ও বিদায় সংবর্ধনা কুবির বিজয়-২৪ হলে বিতর্ক বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত আওয়ামীলীগের ‘লকডাউন’ কর্মসূচির প্রতিবাদে, কুমিল্লা জেলা জাতীয় ছাত্র শক্তি “মশাল মিছিল” বিলাইছড়ি’র ভোরের কুয়াশা জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা দুপুর আড়াইটায় ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার রায় ১৭ নভেম্বর রাজবাড়ীতে বিষাদ সিন্ধু রচয়িতা মীর মশাররফ হোসেনের ১৭৮তম জন্মবার্ষিকী নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামীলীগের ‘ঢাকা লকডাউন’ ঘোষণার প্রতিবাদে কুবিতে বিক্ষোভ মিছিল অবহেলা আর কষ্টের প্রতিচ্ছবি: পটুয়াখালী কলাপাড়া হাসপাতালের এক অসহায় জীবন মাদকমুক্ত সমাজ গড়ার আহ্বান ইন্জিনিয়ার ফাহিম চৌধুরীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে ককটেল বিস্ফোরণ

তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে কুবিতে মশাল মিছিল

কুবি প্রতিনিধি:

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) আঞ্চলিক সংগঠন ‘উত্তরবঙ্গ ছাত্র পরিষদের’ উদ্যোগে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের বিভিন্ন দাবিতে মশাল মিছিল করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে মশাল মিছিলটি শুরু হয়ে মুক্তমঞ্চে গিয়ে শেষ হয়।

এই মশাল মিছিলে অংশ নেন কুবির উত্তরবঙ্গ ছাত্র পরিষদের বিভিন্ন শিক্ষার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থী। এ সময় তারা ‘তিস্তা বাঁচাও, দেশ বাঁচাও’, ‘আমাদের তিস্তা, বুঝে নিবো হিস্যা’, ‘বাঁচাও তিস্তা বাঁচাও দেশ, তোমার আমার বাংলাদেশ’, ‘জাগো বাহে কোনঠে সবাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

এসময় তারা দাবি জানান, নদী খনন ও প্রবাহ পুনরুদ্ধার, তিস্তার মূলধারা গভীর ও প্রশস্ত করতে হবে নদীতে পর্যাপ্ত পানি ধরে রাখার জন্য রিজার্ভয়ার বা ব্যারেজ ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ, সেচব্যবস্থার সম্প্রসারণ ও সেচনির্ভর কৃষি টিকিয়ে রাখতে তিস্তার পানি ব্যবহারের সুযোগ বাড়ানো, বন্যা ও ভাঙন নিয়ন্ত্রণের জন্য তিস্তা নদীর তীরে শক্তিশালী ও স্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মাণ, কৃষি, মৎস্য ও জীবিকা উন্নয়নে নদীভিত্তিক কৃষি, চিংড়ি চাষ, মাছ চাষ ও পর্যটন উন্নয়নকে তিস্তা মহাপরিকল্পনার অংশ করা এবং স্থানীয় কৃষকদের জন্য পানি ব্যবহারে অগ্রাধিকার দেওয়া, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য নদীর আশেপাশের চরাঞ্চলে বন ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য পানি দূষণ, বালু দখল, এবং অনিয়ন্ত্রিত নির্মাণ বন্ধ করা।

এছাড়া, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আন্তর্জাতিক তিস্তা পানিবণ্টন চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য যৌথ নদী কমিশন (JRC)-এর কার্যক্রম ত্বরান্বিত করা, সমন্বিত “তিস্তা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (Teesta River Basin Authority)” গঠন করে নদীভিত্তিক অর্থনীতি, কৃষি, শিল্প ও পর্যটন উন্নয়নের সমন্বিত মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন করা সহ বিভিন্ন দাবি জানান তারা।

নৃবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী ও কুবি শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল বাশার বলেন, ‘আমরা একটা যৌক্তিক দাবি নিয়ে এসেছি। আমাদের রাষ্ট্র ব্যবস্থায় যেই আসে, আমাদের নদী শাসনের হিস্যা বুঝিয়ে পাই না। এই বাংলার কৃষি যদি বাঁচাতে হয় তাহলে উত্তরবঙ্গের কৃষকদের বাঁচাতে হবে। তাই তিস্তা প্রকল্পের ন্যায্য হিস্যা জরুরি। আমরা শুনেছি প্রধান উপদেষ্টা আন্তর্জাতিক লেভেলের খেলোয়াড়। তবে উনার এই খেলোয়াড়ি মনোভাব এখনো দেখতে পাইনি। আমরা চাই আপনার আন্তর্জাতিক ক্ষমতা দেখিয়ে এটার হিস্যা আদায়ে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করবেন। আমরা সমগ্র শিক্ষার্থী আপনার পাশে আছি।’

কুবি শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মুস্তাফিজুর রহমান শুভ বলেন, ‘এই তিস্তা প্রকল্প শুধুমাত্র উত্তরবঙ্গের সমস্যা না, এটা আমাদের সম্পূর্ণ বাংলাদেশের সমস্যা। তিস্তার দুই পাড়ে যে উত্তরবঙ্গ অবস্থিত, সেইখানে যখন পানি লাগবে না তখন ভারতীয় আগ্রাসন পানি ছেড়ে দেয় আর যখন পানি লাগবে তখন আটকিয়ে রাখে। এটার সুরাহা করতে হবে।’

ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোঃ হারুন বলেন, ‘আমাদের উত্তরবঙ্গে এখন আগের মতো ফলন হয় না। উত্তরবঙ্গ না বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে না কারণ বেশিরভাগ জায়গায় উত্তরবঙ্গ থেকে সবজি যায়। ফসল ফলানোর জন্য পানির অভাবে কৃষক প্রয়োজনে বিষাক্ত কীটনাশক ব্যবহার করে থাকেন যেটি আমাদের পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। ফলে সবসময় উত্তরবঙ্গের তাপমাত্রা বেশি থাকে। আমাদের উত্তরবঙ্গ সবসময় অবহেলিত ছিল। উত্তরবঙ্গ মানুষের পেট যদি ভরা থাকে তাহলে তারা শান্ত থাকবে, অন্যথায় উত্তরবঙ্গের মানুষের হুঙ্কার সহ্য করতে পারবেন না।’

প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক মোঃ সাদেকুজ্জামান বলেন, ‘উত্তরের অবহেলিত এই যে জনপদ সেই উত্তরবঙ্গকে আমরা শস্যভাণ্ডার হিসেবে জেনে এসেছি। হিমালয়ের পূর্বাঞ্চলে তিস্তা এমন একটি নদী যেটি উভয় দেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়। যার কারণে যেটি আমাদের ন্যায্য হিস্যা, শুষ্ক মৌসুমে আমাদের ন্যায্য পানিটুকু পাওয়া দরকার ছিল সে পানিটুকু পাইনি। এই দাবি উত্থাপিত হয়, এটি নিয়ে আন্দোলন হয়, রাষ্ট্র পক্ষ বিভিন্ন সময়ে আমাদেরকে আশান্বিত করেন এবং বলেন এর সমাধান হবে। কার্যত আমরা এর কোনো সমাধান পাইনি। আজকে যখন আমরা দেখি বাংলাদেশের ৫টি জেলা, বিশেষ করে বৃহত্তর রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নীলফামারী এবং লালমনিরহাট দিয়ে এই নদী প্রবাহিত হয়। যার কারণে এটি কৃষি ব্যবস্থার ও মানুষের জীবনের একমাত্র অবলম্বন। সেই জায়গাটিতে যখন বার বার হস্তক্ষেপ হয়, সেই জায়গাটিতে যখন সরকারের কোনো সুনজর থাকে না তখন সে জায়গার মানুষকে আন্দোলনে নামতে হয়। আমরা চাই বর্তমান যে সরকার ক্ষমতায় এসেছে সে সরকার আমাদের এই ন্যায্য হিস্যার ব্যবস্থা করে দিবেন।’

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩