বৃহস্পতিবার, ১৭ Jul ২০২৫, ০৮:৪৪ অপরাহ্ন
আবু বকর সুজন, চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে এক মাদ্রাসায় শিক্ষাথীর জন্য দৈনিক ৭০০ কেজি চাল রান্না করেন ১১ জন বাবুর্চি। পাঠদান করেন ৪৩ জন শিক্ষক। ২০২৫ সালে দাখিল পরীক্ষায় রয়েছে শতভাগ উত্তীর্ণের কৃতিত্ব। রয়েছে সর্বোচ্চ ৭ জিপিএ-৫। ৫ তলা পাশাপাশি দুটি বিশাল ভবন। একটিতে ৩০ কক্ষ।
প্রশাসনিক কাজে ব্যবহৃত ৬টি কক্ষ, বাকি ২৬ টিতে চলে পাঠদান। অপরটি শিক্ষার্থীদের আবাসিক ভবন। বর্তমানে ৮০০ শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত প্রতিষ্ঠানটির নাম পাশাকোট দারুচ্ছুন্নাত দ্বীনিয়া মাদ্রাসা।
সরেজমিনে গুরে দেখা যায় ৮০০ শিক্ষার্থী অধ্যায়নে প্রতিষ্ঠানটিতে রয়েছে খাওয়ার জন্য আলাদা ভবন। রয়েছে ক্যান্টিন ও ৩ তলা একটি মসজিদ। যার উপরে হাফেজি পড়ানো হয় ১৯২ জন ছাত্রকে। ৫ টি ভবন ও বিশাল খেলার মাঠ নিয়ে গড়ে ওঠা মাদ্রাসাটিতে হাফেজি ছাড়াও রয়েছে নূরানী, নাজেরা ও এবতেদায়ি থেকে দাখিল পর্যন্ত পড়াশোনার সুযোগ।
প্রতিষ্ঠান পরিচালকরা জানিয়েছেন এতিম ও দুস্থদের পড়ানো হয় অবৈতনিক। রয়েছে ২০০ জন এতিম ছাত্র। সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে চলা মাদ্রাসাটির শিক্ষকদের বেতন দিতে হয় ১৩ লক্ষাধিক টাকারও বেশি। ২০২৪ সালে ৪২ জন দাখিল পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৭ জন জিপিএ-৫ সহ উত্তীর্ণ হয়েছে সবাই। সেই ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে ২০২৫ সালেও। বর্তমানে দশম শ্রেনীতে পড়ছে ৪৫ জন শিক্ষার্থী। ছাত্রাবাসে রাত ও সকালে তদারকিতে থাকেন শিক্ষকরা। আগামীতেও ভাল ফলাফলের ধারাবাহিকতা থাকবে বলে জানিয়েছেন তারা।
মাদ্রাসার এমন ফলাফলের প্রতিক্রিয়ায় প্রতিষ্ঠাতা সাবেক চেয়ারম্যান আলমগীর কবির মজুমদার বলেন, চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় এবার এই ফলাফল বিপর্যয়ের মধ্যেও মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে শতভাগ পাশের কৃতিত্ব অর্জন করেছে আমাদের মাদরাসা। ধারাবাহিক ভালো ফলাফল অর্জন সম্ভব হয়েছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কঠোর পরিশ্রমের কারণে। পাশাপাশি অভিভাবক ও এলাকাবাসীসহ মাদ্রাসার সাথে সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতাও উল্লেখযোগ্য।
ভবিষ্যতেও এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। প্রত্যন্ত অঞ্চলে মানসম্মত শিক্ষার সুযোগ সীমিত। মাদ্রাসা শিক্ষার ক্ষেত্রে তা আরো বেশি। পাশাকোট গ্রামের নিকটে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই। দ্বীনি শিক্ষার প্রসারে স্থানীয় শিক্ষার্থীদের সুবিধা অসুবিধার কথা ভেবে সর্বপ্রথম আমি ব্রিকসের টিনশেড ঘরে ১২০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে এই মাদ্রাসা কার্যক্রম শুরু করি।
আজ এতো বছরে স্থানীয় এলাকাবাসীর সহযোগীতায় আজ ৩০ কক্ষ বিশিষ্ট দুটি পাঁচ তলা ভবনে ৮০০ শিক্ষার্থীর পাঠদান চলছে। যাদের অধিকাংশই এখানে আবাসিক সুবিধা নিয়ে থাকে। আগামীতে যেন আমি সবার দোয়া ও সহযোগীতায় এই প্রতিষ্ঠান যেন বাংলার জমিনে কুরআন শিক্ষার অন্যতম প্রতিষ্ঠানে পরিণত সেই চেষ্টা করবো।
মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাসুম বিল্লাহ বলেন, ক্লাস রুম ও আবাসিক মিলিয়ে ৪৩ জন শিক্ষক দ্বারা পাঠদান চলে। অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিয় হওয়ায় প্রতিষ্ঠার কয়েক বছরের মধ্যে এই দ্বীনি মাদ্রাসা উপজেলায় সুনাম অর্জন করেছে। এবং দাখিল পরীক্ষায় বারবার শতভাগ পাশের কৃতিত্ব রয়েছে।
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩