রবিবার, ২২ Jun ২০২৫, ০৮:৩২ অপরাহ্ন
রিফাত আহমেদ, ঢাকা:
১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনে ভাইভা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও নিয়োগ সনদ না পাওয়ার প্রতিবাদে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভে বসেন চাকরি প্রত্যাশীরা। রোববার সকাল ১১টার দিকে অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা সড়ক অবরোধ করলে উত্তপ্ত হয়ে পড়ে পরিস্থিতি। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নিবন্ধনপ্রাপ্ত চাকরি প্রত্যাশীরা জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কে জড়ো হন। তাদের দাবি, লিখিত ও ভাইভা—দুই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও প্রায় বিশ হাজার প্রার্থীকে সনদ দেওয়া হয়নি। আন্দোলনকারীদের ভাষ্য অনুযায়ী, এনটিআরসিএ ইচ্ছাকৃতভাবে ফলাফলে কারচুপি করেছে এবং অনেক যোগ্য প্রার্থীকে ‘ফেল’ দেখানো হয়েছে।
আন্দোলনরত এক প্রার্থী বলেন, “ভাইভাতে টিকেও যদি চাকরি না পাই, তাহলে এত পরিশ্রম করে পরীক্ষায় বসার মানে কী? আমরা সনদ চাই, ন্যায্য বিচার চাই।”
সকাল ১১টা ২০ মিনিটের দিকে বিক্ষোভকারীরা সচিবালয়ের দিকে মিছিল নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। তখন উভয় পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ প্রথমে হালকা লাঠিচার্জ করে। পরে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হলে পুলিশ জলকামান ছোঁড়ে এবং একাধিক সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
এ ঘটনায় অন্তত ২০-২৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। আহতদের মধ্যে কয়েকজন নারীও রয়েছেন। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। একজন নারী চাকরিপ্রার্থী অভিযোগ করে বলেন, “আমি সামনে বসে ছিলাম। হঠাৎ পুলিশ এসে ধাওয়া দেয়। দৌড়াতে গিয়ে পড়ে গিয়ে পায়ে লাঠি লাগে।”
আন্দোলনকারীরা জানান, ভাইভা পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর দেখা যায়, বেশ কয়েকটি বিষয়ে পাশের হার অত্যন্ত কম। সমাজবিজ্ঞান ও আরবি বিষয়ে পাশের হার ছিল মাত্র ৫৩–৫৪ শতাংশ। তারা বলছেন, ভাইভার নম্বর প্রকাশ না করায় তারা বুঝতে পারছেন না কে কীভাবে বাদ পড়েছেন। এনটিআরসিএ’র প্রতি আস্থার বড় ধাক্কা লেগেছে বলেও মন্তব্য করেন অনেকে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার মাসুদ আলম বলেন, “প্রেস ক্লাব এলাকায় অনুমতি ছাড়া কেউ সড়ক অবরোধ করতে পারে না। বিক্ষোভকারীরা সচিবালয়ের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে আমরা বাধা দিই। তাদের শান্ত করতে বলা হয়। কিন্তু পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠায় জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করতে হয়।”
এ ঘটনায় আন্দোলনকারীদের একটি প্রতিনিধিদল সচিবালয়ে গিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। তবে সরকারের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
চাকরি প্রত্যাশীরা জানিয়েছেন, তারা পেছাতে চান না। সনদ পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা দেন তারা।
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩