শুক্রবার, ০৪ Jul ২০২৫, ০৯:৪৭ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনামঃ
চৌদ্দগ্রামে অজ্ঞাত যুবকের রহস্যজনক লাশ উদ্ধার, শরীরের বিভিন্ন অংশে একাধিক আঘাতের চিহ্ন মোকামতলা রক্তদান সংগঠনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত চৌদ্দগ্রামে ভারতীয় নাগরিক আটক এইচএসসি পরীক্ষার্থী খুন, চার বসতঘর পুড়িয়ে দিলো বিক্ষুব্ধরা চৌদ্দগ্রামে দেশী মদসহ ৪ জন আটক ইংলিশ চ্যানেল সাঁতারে ইতিহাস গড়ার পথে হাওর পাড়ের হিমেল চৌদ্দগ্রামে ফার্মেসি দোকানে নেই ফার্মাসিস্ট, চলছে ওষুধ বেচাকিনা পাঁচবিবি উপজেলা জামায়াতের উদ্যোগে শহীদদের স্মরণে দুস্থ ও ইয়াতিমদের মাঝে খাবার বিতরণ রাজাপুরে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগ সরকারি প্রকল্প কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুই দশক পর প্রথমবার পঞ্চপাণ্ডব ছাড়া মাঠে নামলো বাংলাদেশ ওয়ানডে দল চৌদ্দগ্রামে পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযান, ৫৭ মামলায় ৫৯ আটক বিয়ের প্রলোভনে একাধিকবার ধর্ষণের শিকার, আত্মহত্যার পথ বেঁচে নিলেন কলেজ শিক্ষার্থী আদালত অবমাননার দায়ে শেখ হাসিনার ৬ মাসের কারাদণ্ড ৪৪তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে প্রথম মাভাবিপ্রবির ফরহাদ হোসেন পটুয়াখালীতে সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্বে প্রাণ গেল কলেজ ছাত্রের

রাজাপুরে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগ সরকারি প্রকল্প কর্মকর্তার বিরুদ্ধে

 

মোঃ মাহিন খান, ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ

ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলায় সরকারি জমির অন্তত পাঁচটি মূল্যবান গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতাধীন উপজেলা পরিচালন ও উন্নয়ন প্রকল্পের (ইউজিডিপি) এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ডেভেলপমেন্ট ফেসিলিটেটর (ইউডিএফ) মো. ইমরান আলী নিজের ব্যক্তিগত কাজে এসব গাছ ব্যবহার করেছেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। প্রশাসনের নীরব ভূমিকায় এলাকাজুড়ে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।

স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, উপজেলা পরিষদের পেছনের একটি সরকারি খালি জায়গায় লাগানো চারটি মেহগনি ও একটি রেন্ট্রি গাছ গত বছরের মাঝামাঝি কেটে স-মিলে রাখা হয়। সময়টা ছিল ২০২৪ সালের জুলাই—দেশব্যাপী শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের উত্তাল সময়। প্রশাসন তখন নানামুখী চাপ সামলাতে ব্যস্ত থাকায় সুযোগটি কাজে লাগানো হয় বলে ধারণা স্থানীয়দের।

এরপর অভিযুক্ত কর্মকর্তা মো. ইমরান আলী পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে কর্মস্থল ত্যাগ করেন। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পুনরায় ফিরে এসে গাছগুলোর কিছু কাঠ নিজের বাড়ির জন্য ফার্নিচার বানাতে ব্যবহার করেন এবং বাকিগুলো কাউখালী উপজেলাসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে দেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

স-মিল মালিক শহিদুল ইসলাম বলেন,
“ইমরান ভাই আমাদের মিলে কাঠ রাখেন সরকারি ফার্নিচারের জন্য বলেই ভেবেছিলাম। পরে জানতে পারি তিনি ব্যক্তিগত কাজেই ব্যবহার করেছেন।”

একই ধরনের বক্তব্য পাওয়া গেছে স্থানীয় এক ফার্নিচার দোকানদারের কাছ থেকেও। তিনি জানান, “ইউডিএফ সাহেব নিজেই কাঠ এনে বলেন, তার বাসার জন্য কিছু আসবাব বানাতে হবে। পরে আবার কিছু কাঠ বিক্রিও করে দেন।”

তৎকালীন ইউএনও ফারহানা ইয়াসমিন এ বিষয়ে অবগত ছিলেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। তবে বদলির কারণে তিনি কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেননি। বর্তমান ইউএনও রাহুল চন্দ অভিযোগের বিষয়ে অবগত থাকলেও এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো তদন্ত কিংবা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মো. ইমরান আলী সাংবাদিকদের বলেন,
“আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা। আমি কোনো গাছ কাটি নাই, কাঠও নেই নাই।”

সরকারি গাছ কাটা বা বিক্রির জন্য জেলা প্রশাসন কিংবা বন বিভাগের অনুমতি না নিয়ে এ ধরনের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাহলে কীভাবে, কার অনুমতিতে গাছগুলো কাটা হলো? সেই কাঠের আর্থিক হিসাব কোথায়?

এমন প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় সচেতন নাগরিক ও পরিবেশকর্মীরা। তারা বলেছেন, “যদি একজন সরকারি কর্মকর্তা এভাবে গাছ কেটে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করেন, তাহলে পরিবেশ রক্ষার উদ্যোগ মুখ থুবড়ে পড়বে।”

ঘটনার বিষয়ে রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তার অফিসে গিয়ে দেখা না পাওয়ার পর দুইদিনে একাধিকবার মোবাইলে ফোন ও হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠানো হলেও কোনো সাড়া দেননি তিনি।

স্থানীয়দের দাবি—ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং গাছ বিক্রির অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার পদক্ষেপ নেওয়া হোক।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩