বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ০১:৩৯ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনামঃ
ইট বিছানো রাস্তা, গর্ত আর জলাবদ্ধতা-এমনই ববির প্রধান প্রবেশপথ, সংস্কারের অবহেলা ববি প্রশাসনের বিএনপির সমাবেশ থেকে ফেরার পথে ট্রাক চাপায় ৩ কর্মী নিহত বিলাইছড়ির একাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শনে ইউএনও মুহাম্মদ মামুনুল হক: শিক্ষার মান যাচাই ও শিক্ষকদের সাথে মতবিনিময় ঘোড়াঘাটে ভোটার তালিকায় তৃতীয় লিঙ্গের নাম অন্তর্ভুক্ত না থাকার কারন ব্যাখ্যা রোয়াংছড়ি জেতবন বিহারে ৫৬ তম কঠিন চীবর দান উৎসব অনুষ্ঠিত মুরাদনগরে চাচাতো ভাইয়ের হাতে ৬ বছরের আদিবার নৃশংস হত্যা ব্যারিস্টার জমির উদ্দিনের আসন পুনরুদ্ধারে ছেলে নওশাদ জমির দোয়ারাবাজারে জমিয়ত প্রার্থী মোহাম্মদ নূরুল হকের সমর্থনে শোডাউন ও পথসভা কালকিনিতে স্ত্রীকে বিষ খাইয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ স্বামীর বিরুদ্ধে নীলফামারীতে বিএনপির দুই প্রার্থীর নাম ঘোষণা বাউফলে ইঞ্জিনিয়ার ফারুখ আহমেদের পক্ষে লিফলেট বিতরণ জবিতে শুরু হলো শহীদ সাজিদ স্পোর্টস কার্নিভাল কুবিতে ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠনের লক্ষ্যে মতবিনিময় সভা ও সদস্য ফরম বিতরণ লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা বিষয়ে ঢাবিতে দিনব্যাপী কর্মশালা মাদারীপুর-১ আসনের মনোনয়ন ঘোষণা স্থগিত করল বিএনপি সকল তদন্ত কমিটি থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন অধ্যাপক হাবিব-উল-মাওলা সুনামগঞ্জ টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষকে অবাঞ্ছিত ঘোষনা পূবাইলে বৃত্তি প্রাপ্ত কৃতি শিক্ষার্থীর সংবর্ধনা নাসির নগরে ঝুঁকিপূর্ণ সেতুতে যানবাহন চলাচল, চরম আতংকে যাত্রী ও চালকরা তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নে দীপেন দেওয়ানের পক্ষে বিএনপির প্রচারণা জোরদার

রোয়াংছড়ি জেতবন বিহারে ৫৬ তম কঠিন চীবর দান উৎসব অনুষ্ঠিত

এলেক্স বড়ুয়া, বান্দরবান প্রতিনিধি:

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সকালে রোয়াংছড়ি উপজেলার কেন্দ্রীয় জেতবন বৌদ্ধ বিহারে শুরু হয় এই ঐতিহ্যবাহী দানোৎসবের আনুষ্ঠান। সকাল থেকেই বিহার প্রাঙ্গণ ভক্ত ও দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে। হাতে ছোয়ায়িং— অর্থাৎ ধর্মীয় গুরুদের জন্য রান্না করা আহার—নিয়ে আগত ভক্তরা ভিক্ষু সংঘের উদ্দেশে দান প্রদান করেন।

অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে অনুষ্ঠিত হয় বৌদ্ধ ধর্মীয় আলোচনা সভা। এতে ধর্মগুরুগণ বৌদ্ধ ধর্মের করুণাময় জীবনবোধ, শান্তি ও মানবকল্যাণের বার্তা তুলে ধরেন।

পর্বের শেষে ধর্মীয় গুরুগণ ভক্তদের দানকৃত আহার গ্রহণ করেন। এরপর উপস্থিত ভক্তরা আহার গ্রহণের মধ্য দিয়ে প্রথম পর্বের সমাপ্তি ঘটে।

দুপুরের পর শুরু হয় উৎসবের দ্বিতীয় পর্ব। দায়ক-দায়কারা নিজেদের হাতে তৈরি চীবর ভিক্ষুদের দানের উদ্দেশ্যে বিহারে উপস্থিত হন। ধর্মদেশনা প্রদান করেন ভিক্ষু সংঘের জ্যেষ্ঠ ধর্মগুরুগণ।

পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ঐক্য ও আন্তরিকতা ফুটে ওঠে হাতে বোনা চীবর দান অনুষ্ঠানে। নানা ধর্মীয় আচার ও বৌদ্ধ সংগীত পরিবেশনের পর ভিক্ষুদের হাতে ত্রি-চীবর দানের মধ্য দিয়ে উৎসবের মূল পর্ব সম্পন্ন হয়।

সন্ধ্যায় প্রদীপ প্রজ্বলন ও ফানুস উত্তোলনের মাধ্যমে উৎসবের সমাপ্তি ঘটে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কে এস মং। তিনি ধর্মীয় গুরুদের কাছ থেকে আশীর্বাদ ও দিকনির্দেশনা গ্রহণ করেন এবং চীবর দান করেন।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, বৌদ্ধ ভিক্ষু সংঘের প্রতিনিধিরা, বিহার ব্যবস্থাপনা কমিটির নেতৃবৃন্দ, এবং বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

উল্লেখ্য, কঠিন চীবর দানোৎসব বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় অনুষ্ঠান। চাকমা, মারমা, তঞ্চঙ্গ্যা, ত্রিপুরা সহ বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নারী-পুরুষ একত্রে কাজ করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ত্রি-চীবর তৈরি করেন, যা পরদিন ধর্মীয় গুরুদের হাতে দান করা হয়।

আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে শুরু হয় তিন মাসব্যাপী কঠোর ধর্মীয় অনুশীলন, যার সমাপ্তি ঘটে এই চীবর দানোৎসবের মধ্য দিয়ে।

এ উপলক্ষে রোয়াংছড়ি ছাড়াও বান্দরবান সদর, লামা, রুমা, থানচি, আলীকদমসহ বিভিন্ন উপজেলার বিহারগুলোতেও পালিত হচ্ছে অনুরূপ ধর্মীয় আচার ও উৎসব।

বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস—চীবর দান আত্মশুদ্ধি ও পরম শান্তির প্রতীক। এই উৎসব পার্বত্য চট্টগ্রামের সামাজিক সম্প্রীতি ও ধর্মীয় ঐক্যের অন্যতম নিদর্শন হিসেবে প্রতি বছর পালন করা হয় বর্ণাঢ্য আয়োজনে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩