বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:৩১ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনামঃ
জগন্নাথে প্রথমবারের মতো “শহীদ সাজিদ মেমোরিয়াল স্পোর্টস কার্নিভাল–২০২৫” বড়াইগ্রাম উপজেলা সমিতি ঢাকার উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত শিক্ষার্থীদের নিজস্ব কন্ট্রোল সিস্টেমে কুয়েটে চালু হলো অটোমেটিক ওয়াশিং মেশিন বাউফলে শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ দোয়ারাবাজারে তিনটি গ্রামীণ রাস্তার কাজে অনিয়মের অভিযোগ অষ্টম ধাপে আল মুসাইদাহ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ফ্রি চক্ষু ছানি অপারেশন সম্পন্ন লাল পরীর ঘরে ফেরা কুবিতে হল সংসদে অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের প্রার্থীতা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে কূটনৈতিক বিতর্কের ফাইনাল রাউন্ড অনুষ্ঠিত গাজীপুরে শারীরিক প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট মৈত্রী শিল্পে দুদকের অভিযান গহিন পাহাড়ি ঘাঁটিতে জিম্মি থাকা ২৪ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার জাতিসংঘের আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর ছবি মেসার্স নিহা ব্রিকস পরিচালনায় নেই আইনগত বাঁধা ট্রলারসহ ৭ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি কালকিনিতে হাতপাখার প্রার্থী মাওলানা আজিজুল হকের ব্যাপক গণসংযোগ গাজীপুরে স্বেচ্ছাসেবক নেতা আব্দুল হালিম মোল্লার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার বড়াইগ্রামে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সুপেয় পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থায় অগ্রগতি বাউফলে জামায়াতে ইসলামীর বিক্ষোভ সমাবেশ দুমকিতে যুবদলের উদ্যোগে খাল পরিষ্কার কর্মসূচি নবীনগরে যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

লাল পরীর ঘরে ফেরা

শাহারিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী,  কক্সবাজার প্রতিনিধি:

কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) মানবিক উদ্যোগে পথ হারানো অন্ধ মায়ের মেয়ে মরিয়ম ফিরে পেল তার আপন ঘর। সেই সঙ্গে পেল চোখের চিকিৎসা, নতুন জামা, নতুন জুতো— আর এক পৃথিবীভরা ভালোবাসা।

বুধবার সন্ধ্যায় কক্সবাজারের একটি সরকারি অফিসে খালি পায়ে, সবুজ জামা পরা এক ছোট্ট মেয়ে এসে হাজির হয়।

অফিসের এক কর্মচারী জানান,  একজন লোক মেয়েটিকে বাস টার্মিনাল থেকে পেয়ে আমাদের অফিসে দিয়ে গেছেন।

ভীত মরিয়ম জানায়, আমার নাম মরিয়ম, বয়স আট বছর। আমি মাদ্রাসায় থাকি। আজ ছুটি পেয়ে এক লোক বলল আমাকে বাড়ি পৌঁছে দেবে, তারপর আমি হারিয়ে যাই।

জানতে পারা যায়, মরিয়মের বাবা মারা গেছেন। তার মা ও বড় ভাই দুজনই অন্ধ, একমাত্র বোন অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে এবং সংসার সামলায়। পরিবারটি সরকারি ঘর ও অন্ধ ভাতা পায়।

বিষয়টি জানানো হয় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিমল চাকমাকে। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে সমাজসেবা অফিসার ও স্থানীয় গ্রাম পুলিশকে নির্দেশ দেন মরিয়মের পরিবারের সন্ধান নিতে।
কিছুক্ষণের মধ্যেই নিশ্চিত হয়— মরিয়মের বাড়ি পোকখালী ইউনিয়নের ঈদগাঁও এলাকায়।
খবর পেয়ে তার অন্ধ মা, বোন ও প্রতিবেশী রাতেই রওনা দেন কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে।

অফিসে অবস্থানকালে মরিয়ম জানায়, সে জন্মান্ধ নয়, ছোটবেলায় ভালো, দেখত কিন্তু টাকার অভাবে কখনো ডাক্তার দেখানো হয়নি।

ইউএনও বিমল চাকমা তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাসেল, সমাজকর্মী সুজন এবং কমিউনিটি চক্ষু হাসপাতালের ডা. বিমল চৌধুরীর সহযোগিতায় মরিয়মের চোখের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। চিকিৎসক বিনা ফিতে পরীক্ষা করে দেন চশমা ও ওষুধ।

চশমা পরে মরিয়ম হেসে বলে, এখন আগের চেয়ে কিছুটা ভালো দেখি। এরপর মরিয়মের জন্য নতুন জুতো কেনা হয়। প্রিয় রঙ জানতে চাইলে বলে, হলুদ। তারপর হেসে বলে, আমি লাল পরী হতে চাই, লাল জামা, লাল চুড়ি, লাল লিপস্টিক, আর লাল ওড়না লাগবে।

তার ইচ্ছা পূরণে ইউএনও ও সহকর্মীরা তাকে নিয়ে যান মেগামার্ট শপিং মলে।
সেখানে নিজের পছন্দে লাল ফ্রক, লাল চুড়ি, লাল ওড়না ও লাল লিপস্টিক পরে বলে, আমি এখন লাল পরী।

রাত ৯টার দিকে তার মা, বোন ও প্রতিবেশীরা অফিসে পৌঁছান। অন্ধ মা মেয়েকে কোলে নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। মরিয়ম জানায়, চশমা পরে এখন ভালো দেখি, মা! আর লাল জামা পরেছি, দেখো।

রাত ১০টার দিকে মরিয়ম পরিবারসহ বাড়ির পথে রওনা হয়। বিদায়ের সময় বলে, এই গাড়িটাও আমার জামার মতো লাল, একটা ছবি তুলবেন আমার সঙ্গে।

পরে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আ. মান্নান শিশুটি ও তার পরিবারের খোঁজখবর নেন এবং সার্বিক সহায়তার আশ্বাস দেন।

মানবতার জয়গান, অন্ধ মায়ের কোল ফিরে পাওয়া এক হারানো শিশু, চোখে নতুন আলো, মুখে হাসি ,এই দৃশ্যই প্রমাণ।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩