বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:৩২ অপরাহ্ন
মো সিয়াম আবু রাফি, জবি প্রতিনিধি:
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের মেধাবী ২০০ শিক্ষার্থীকে ‘কবি মতিউর রহমান মল্লিক মেরিট অ্যাওয়ার্ড’ দিয়েছে জবি শাখা ইসলামী ছাত্রশিবির। প্রতিটি বিভাগের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জনকারী শিক্ষার্থীদের এই স্বীকৃতি প্রদান করা হয়।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদ মাঠে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে জবির ৩৮ টি বিভাগ ও ২ টি অনুষদের ২০০ মেধাবী শিক্ষার্থীর হাতে ১ টি করে সম্মাননা স্মারক, সনদপত্র, পবিত্র কোরআন, সিরাতগ্রন্থ, উত্তরীয়, মগ, কলমদানি, নোটপ্যাড ও কলম তুলে দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ইউনিভার্সিটি টিচার্স লিংক জবির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবু লায়েক বলেন, “বর্তমান যুগে যারা প্রযুক্তি ও শিল্পবিপ্লবের পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারবে, তারাই এগিয়ে যাবে। ছাত্রশিবিরের এমন উদ্যোগ আসলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনেরই নেওয়া উচিত। স্বীকৃতি মানুষকে আরও ভালো কাজের অনুপ্রেরণা দেয়।”
নারী হল প্রভোস্ট অধ্যাপক আঞ্জুমান আরা বলেন, “সম্প্রতি আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। আগের চেয়ে পারিপার্শ্বিক পরিবেশ এখন অনেক পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। ডাকসু নির্বাচনের পর থেকে আমি ছাত্রশিবিরের কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করছি। তারা সত্যিই অসাধারণ কাজ করছে। মেধাবীদের সম্মাননা দেওয়ার মতো উদ্যোগ অন্য কোনো সংগঠনের মধ্যে দেখিনি।”
ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন বলেন, “আমরা নিজেদের পরিচয়ে গর্ব করতে পারলে জাতি হিসেবে আরও এগিয়ে যেতে পারব। অতীতে ধর্মভিত্তিক শিক্ষা থেকে অনেকেই বিশ্বে খ্যাতি অর্জন করেছেন।”
প্রধান আলোচক হিসেবে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, “কবি মতিউর রহমান মল্লিক সুস্থ সংস্কৃতি গঠনের প্রয়াস চালিয়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার মূল উদ্দেশ্য জ্ঞান অর্জন করা, কিন্তু বর্তমান ব্যবস্থা শিক্ষার্থীদের কেবল একটি সার্টিফিকেট নিয়ে চাকরির পেছনে ছোটাচ্ছে। জ্ঞানের প্রতিযোগিতার দিক থেকে আমাদের আরও অগ্রসর হতে হবে। পৃথিবীতে সবাই জ্ঞান অর্জন করে, কিন্তু উপলব্ধি করার দিকে সবাই অগ্রসর হয় না। অহংকার নয়, সততা ও আত্মনিয়োগই সাফল্যের মূল চাবিকাঠি। শিক্ষার্থীদের উচিত নিজেকে সৎ, দেশপ্রেমিক ও দক্ষ নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা।”
অহংকার থেকে দূরে থাকা প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে উদাহরণস্বরূপ শেখ হাসিনাকে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে তার একান্ত সম্পদ মনে করতেন এবং যা ইচ্ছা তাই করতেন। তার অহংকার ও জুলুমের কারণেই পতন হয়েছে।”
প্রধান অতিথি জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধর্ম ও মতের চর্চার সুযোগ থাকতে হবে, কেউ যেন বৈষম্যের শিকার না হয়। মুসলিম পরিচয়ে গর্ব করা কোনো হীনমন্যতা নয়।”
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্র হলের প্রভোস্ট মো. আসাদুজ্জামান সাদি, কৃষিবিদ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. আলী আফজাল, উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. শাখাওয়াত হোসেনসহ অনেকে।
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩