রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:৪৭ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনামঃ
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবিরের নবীনবরণ ও ক্যারিয়ার গাইডলাইন প্রোগাম স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব কিশোরগঞ্জের সভাপতি মাহিন,সম্পাদক ওয়াজিব জামায়াত কৃষ্ণ নন্দীকে প্রার্থী দিয়ে সকল ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা করেছে- মাওলানা আবদুল হালিম খালেদা জিয়ার সঙ্গে অন্যায় আচরণের শাস্তি দিল্লিতে বসে ভোগ করছেন শেখ হাসিনা- কাজী নাহিদ হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে কটূক্তির দায়ে জাবি শিক্ষার্থী আজীবন বহিষ্কার জাবিতে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় মওলানা ভাসানী হলে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত নিলেই ঢাকায় আসবে কাতারের রয়েল অ্যাম্বুলেন্স বুড়ি তিস্তা খননের প্রতিবাদে এলাকাবাসীর মশাল মিছিল ঘোড়াঘাটে বিদায়ী ওসির সঙ্গে সাংবাদিকদের সৌজন্য সাক্ষাৎ সুয়ালক দারুস সুন্নাহ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসায় ফলাফল প্রকাশ ও অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত জেড এ ভুট্টো ডিগ্রী কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ মোঃ কাঞ্চন আলী মোল্লা আর নেই উন্নয়নের ভাবনা নিয়ে কাশিমপুরে হাতপাখার প্রার্থী মাওলানা আজিজুল হকের উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত ঈদগাঁওয়ে বিলের পানিতে নিখোঁজ শিশুর মরদেহ উদ্ধার সার ডিলার ও মজুদকারীদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর অভিযান, বিপুল পরিমান ভর্তুকির সার উদ্ধার ঈদগাঁওয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নবাবাগত ইউএনও’র আধুনিক মানের বেঞ্চ বিতরন পটুয়াখালী-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী শহিদুল আলম তালুকদার শেরপুর–ময়মনসিংহ সীমান্তে বিজিবির অভিযানে চোরাচালানী মালামাল জব্দ নালিতাবাড়িতে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া ও মিলাদ অনুষ্ঠিত বাটারফ্লাই মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড-২০২৫ পেলেন জাবি প্রেসক্লাবের দুই সাংবাদিক মাদকমুক্ত সমাজ গড়ার অঙ্গীকারে নালিতাবাড়িতে আবদুল্লাহ বাদশার পথসভা

শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য গঠনে মা-বাবার ভূমিকা

স্বাস্থ্য সাধারণত দুটি ভাগে বিভক্ত: শারীরিক স্বাস্থ্য ও মানসিক স্বাস্থ্য। মাতৃগর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর থেকেই শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ শুরু হয়। এ সময় মায়ের শরীরচর্চা ও মানসিক প্রশান্তি শিশুর সামগ্রিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে।

জন্মের পর সন্তানের শারীরিক স্বাস্থ্য নিয়ে মা-বাবা যেমন সচেতন থাকেন, মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশের দিকটি তেমন গুরুত্ব পান না। অথচ উন্নত জাতি গঠনে মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব শারীরিক স্বাস্থ্যের চেয়েও অধিক। আর এই মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশের ভিত্তি গড়ে ওঠে মূলত পরিবারের পরিবেশ ও মা-বাবার আচরণের মাধ্যমে।

একটি দম্পতি যত দূরদর্শী ও সচেতন হবেন, তাদের সন্তানও তত বেশি সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে। সাধারণত মা-বাবারা সন্তানের খাবার, পোশাক বা চিকিৎসার ব্যাপারে যত্নশীল থাকেন, কিন্তু মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশের ক্ষেত্রে অনেক সময়ই তারা উদাসীন থাকেন। অথচ মানসিক বিকাশ ব্যাহত হলে সন্তান পরবর্তীতে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য বোঝা হয়ে উঠতে পারে। তাই শারীরিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের দিকেও সমান মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন।

প্রবল কৌতূহল ও অনুসন্ধিৎসা নিয়ে জন্ম নেওয়া শিশুকে আমরা প্রায়ই অবুঝ বলে হেলা করি—শুধু তার অনভিজ্ঞতা ও প্রকাশ অক্ষমতার কারণে। শিশুর শারীরিক ভারসাম্য অর্জনে কিছুটা সময় লাগলেও মানসিক স্বাস্থ্যের ভিত্তি এর মধ্যেই তৈরি হতে থাকে।

শিশু মন এক স্বচ্ছ আলোকচিত্রগ্রাহী যন্ত্রের মতো, যার মাধ্যমে সে প্রিয় মানুষদের ও আশপাশের পরিবেশের ছাপ স্থায়ীভাবে নিজের মনে আঁকিয়ে নেয়। এ অভিজ্ঞতাই তার ভবিষ্যৎ মানসিক স্বাস্থ্য গঠনে গভীর প্রভাব ফেলে।

শিশু প্রথমে মায়ের, পরে বাবার, তারপর পরিবারের অন্যান্য সদস্য, শিক্ষক ও সহপাঠীদের সংস্পর্শে আসে। এদের আচরণ, কথাবার্তা ও ব্যবহার থেকেই শিশুর মানসিক বিকাশের ভিত্তি তৈরি হয়।

যখন শিশু প্রথম কথা বলা শুরু করে, জিজ্ঞেস করে, ‘এটা কী? ওটা কী?’ তখন অনেক মা-বাবা বা অভিভাবক বিরক্ত হয়ে ধমক দেন। এতে শিশুর কৌতূহল ও জানার আগ্রহ স্তব্ধ হয়ে যেতে পারে, যা তার মানসিক বিকাশে গুরুতর বাধা সৃষ্টি করে।

শৈশবে পরিবারের পরিবেশ যদি সহনশীল, ভালোবাসাপূর্ণ ও সংযত হয়, তবে সেই শিশুই ভবিষ্যতে পরিপূর্ণ মানুষ হয়ে উঠতে পারে। সে পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র—সব ক্ষেত্রেই ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়।

শহুরে বা গ্রামীণ জীবন, যেখানেই হোক, ‘শৃঙ্খলাই জীবন’- এই প্রবাদটি মনে রেখে সন্তান পালনে অভিভাবকদের সংযমী ও দায়িত্বশীল হতে হবে।

শিশুর সামনে কোনোভাবেই হিংসা, প্রতিশোধ, ঝগড়া বা নেতিবাচক আচরণ প্রদর্শন করা উচিত নয়। সন্দেহপ্রবণ বা কলহপ্রবণ পরিবারের শিশুরা কখনোই সুস্থ মানসিক বিকাশ অর্জন করতে পারে না।

অনেক সময় মা-বাবার অজ্ঞতা বা অসাবধানতার কারণেই শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য ব্যাহত হয়। যেমন, ডাক্তার যদি বলেন, শিশুকে ঠান্ডার জন্য আইসক্রিম খেতে দেওয়া যাবে না, কিন্তু মা শিশুর আবদার মেনে আইসক্রিম দিয়ে বলেন, ‘বাবাকে বলো না, বকা দেবেন।’

কিংবা বাবা কোনো কিছু কিনে দিয়ে বলেন, ‘মাকে বলো না।’ এমন আচরণ শিশুকে অজান্তেই মিথ্যাশ্রয়ী করে তোলে। বিষয়টি সামান্য মনে হলেও এর প্রভাব গভীর, এতে শিশুর চরিত্র ও মানসিক বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

এমনকি অনেক মা শিশুর সামনে বাবার পকেট বা মানিব্যাগ থেকে টাকা নেন, যা শিশুর মনে ভুল ধারণা জন্ম দেয়। শিশুর সামনে বড়দের সর্বদা সংযত ও সততার উদাহরণ রাখতে হবে। যে পরিবারে মা-বাবার ঝগড়া, মারামারি বা হাতাহাতি নিত্যনৈমিত্তিক, সে পরিবারের শিশুর মানসিক বিকাশে তার কুপ্রভাব পড়বেই।

তেরো বছর বয়সে বাবাকে হারানো আদিব, যার মা ছিলেন কলেজের প্রভাষক, পরবর্তীতে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে এবং মায়ের প্রতি শত্রুভাবাপন্ন হয়। কারণ, শৈশবে মায়ের আচরণে ছিল নেতিবাচকতা।

অন্যদিকে নাদিয়া, এক মধ্যবিত্ত শিক্ষিত পরিবারের মেয়ে, শহরের সুযোগ-সুবিধা পেতেও শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হয়। কারণ তার বাবা-মায়ের কলহপূর্ণ দাম্পত্য জীবন। এক ভাই যখন সরকারি কর্মকর্তা, অন্য ভাই তখন হয়ে ওঠে সন্ত্রাসী। এমন উদাহরণ সমাজে কম নয়। এর মূল কারণ, শিশুকালে সুস্থ মানসিক বিকাশের ঘাটতি।

শিশুর প্রতি পিতামাতার উদাসীনতা বা মাত্রাতিরিক্ত আবেগপ্রবণতা—উভয়ই শিশুকে বিপথে নিতে পারে। তাই সন্তানের মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। শারীরিক বিকাশের মতোই, এমনকি তার চেয়েও বেশি মনোযোগ দিতে হবে মানসিক বিকাশের প্রতি।

সূত্রঃ বাসস

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩