সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ০১:৪৪ অপরাহ্ন
কুয়েট প্রতিনিধিঃ
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) সাতটি আবাসিক হলের মধ্যে পাঁচটিতেই দীর্ঘদিন ধরে তীব্র বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট ও ব্যবহার্য পানিতে উচ্চ লবণাক্ততার কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। এই সমস্যার ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে চুল পড়া, ত্বকের রোগসহ নানা ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। শুধু তাই নয়, লবণাক্ত পানির প্রভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগার ও বিভাগীয় মূল্যবান যন্ত্রপাতিও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
লালন শাহ ও খান জাহান আলী হল বাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাকি পাঁচটি হলে— অমর একুশে হল, ড. এম. এ. রশিদ হল, ফজলুল হক হল, শহিদ স্মৃতি হল ও রোকেয়া হলে— সমস্যাটি প্রকট আকার ধারণ করেছে।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, দৈনন্দিন কাজে লবণাক্ত পানি ব্যবহার করায় জীবনযাত্রা দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। গোসলের সময় মুখে লবণাক্ত পানি গেলে বমি ভাব ও অস্বস্তি হয়। রোকেয়া হলের এক শিক্ষার্থী বলেন, “চুল তো পড়েই যাচ্ছে, আয়রনের কারণে দাঁত লাল হচ্ছে। ত্বকে রযাশ ও কালচে ভাব দেখা দিচ্ছে। কাপড়ও ঠিকভাবে পরিষ্কার হয় না।”
অন্য এক শিক্ষার্থী হতাশা প্রকাশ করে বলেন, “গোসলের পর শরীর আরও অস্বস্তিকর লাগে, চুল পড়া তো নিত্যদিনের ঘটনা।” অমর একুশে হলের শিক্ষার্থীরা জানান, খাবার পানিতে শ্যাওলা ও দুর্গন্ধ কমলেও ব্যবহার্য পানি এখনও অত্যাধিক লবণাক্ত এবং এর সঙ্গে আয়রন ও ময়লা ভেসে আসে।
শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকির পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষণ ও গবেষণা কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে। লবণাক্ত পানির কারণে গবেষণাগারের মূল্যবান যন্ত্রপাতি ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে। লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রাজন কুমার রাহা জানান, “লবণাক্ত পানির প্রভাবে প্রায় ৮ লাখ টাকা মূল্যের অটোক্লেভ (Autoclave) মেশিন নষ্ট হয়েছে। এছাড়া ম্যানুফ্যাকচারিং ল্যাবের মূল্যবান যন্ত্রপাতিতে মরিচা ধরছে।”
পানির সমস্যা নিরসনে কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন হল কর্তৃপক্ষ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
অমর একুশে হলের প্রভোস্ট ড. মো. সালাউদ্দিন ইউসুফ বলেন, “খাবার পানির সমস্যা সমাধানে নতুন করে ১৭০০ ফুট পাইপ স্থাপন করা হয়েছে। অন্যান্য সমস্যা নিরসনেও কাজ চলছে।”
এ বিষয়ে কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাকসুদ হেলালী বলেন, “লবণাক্ত পানির সমস্যা আমাদের নজরে আছে। ইতোমধ্যে কিছু হলে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং বাকি হলগুলোতেও দ্রুত এই সংকট নিরসনে কাজ চলছে। হল প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, অল্প সময়ের মধ্যেই শিক্ষার্থীদের এই ভোগান্তি থেকে মুক্তি দেওয়া সম্ভব হবে।”
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩