শুক্রবার, ২৫ Jul ২০২৫, ১১:১৬ অপরাহ্ন
সাকিব হোসেন, পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ
গাঁজা ও ইয়াবার সহজলভ্যতা তরুণ প্রজন্মকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিচ্ছে। উপজেলার শতাধিক স্পটে প্রকাশ্যে চলছে মাদকের রমরমা কারবার, যা স্থানীয়দের মধ্যে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
উপজেলার হলপট্টি, পবিপ্রবি গেট, খামারবাড়ি, নতুন বাজার, সরকারি জনতা কলেজ গেট, হাসপাতাল সড়ক, টিএন্ডটি, গার্লস স্কুল ও একে স্কুলের পেছনের রোড, আনন্দ বাজার, মাদ্রাসা ব্রিজ, পাতাবুনিয়া বাজার, লাল খা ব্রিজ, তালতলির হাট, মুরাদিয়ার বোর্ড অফিস বাজার, সাবেক চেয়ারম্যান মিজান শিকদারের বাড়ির পিছনে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে মুদি দোকানের পাশে, কলবাড়ি হাট (মহিলা মাদ্রাসার কাছে), কদমতলা বাজার ও ব্রিজ, চরগরবদি ফেরীঘাট, লেবুখালী পুরাতন ফেরীঘাট পাইলিংয়ের মাথায়, পাগলা, বুদ্ধিজীবীর মোড়, মৌকরণ ব্রিজের ঢাল, পাঙ্গাশিয়ার খান মার্কেট, হাজিরহাট, ধোপারহাট, তেঁতুলবাড়িয়া খেয়াঘাটসহ অন্তত শতাধিক স্থানে মাদকের আখড়া গড়ে উঠেছে। এসব স্থানে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে মাদক কেনাবেচা।
মাদক পাচারের নিরাপদ রুট:
অনুসন্ধানে জানা গেছে, দুমকিতে মাদক পাচারে নৌ ও সড়ক পথে একাধিক নিরাপদ রুট ব্যবহার করা হচ্ছে। সড়ক পথে বরিশাল হয়ে পায়রা সেতু পার হয়ে এবং ঢাকা-চরগরবদি নৌপথে সদরঘাট, ফতুল্লা ও চাঁদপুর থেকে গাঁজার চালান আসে। এসব চালান ভোর রাতে চরগরবদি লঞ্চঘাটে পৌঁছায় এবং সেখান থেকে সড়ক পথে দুমকিতে প্রবেশ করে। নির্দিষ্ট ডিলারদের কাছে পৌঁছানোর পর তা পাইকার ও খুচরা বিক্রেতাদের হাতে ভাগ হয়ে যায়।
বিক্রির অভিনব কৌশল ও সহজলভ্যতা:
মাদক ব্যবসায়ীরা হোম ডেলিভারি, মোবাইল কল এবং ‘হাতে হাতে’ পদ্ধতিতে মাদক বিক্রি করছে। এর ফলে সহজেই মাদকসেবীরা তাদের চাহিদা পূরণ করতে পারছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সেবনকারী জানান, ২৫ গ্রাম গাঁজা ১ হাজার টাকায় এবং প্রতিটি ইয়াবা ৩০০-৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই মাদকের প্রধান ক্রেতা উঠতি বয়সি তরুণরা, যারা দ্রুত আসক্ত হয়ে পড়ছে।
তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ শঙ্কায়:
মাদকের এই ভয়াবহ আগ্রাসন দুমকির তরুণ প্রজন্মকে গভীর সংকটের মুখে ঠেলে দিয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও খেলার মাঠ ছেড়ে যুবকরা মাদকের নেশায় বুঁদ হয়ে যাচ্ছে, যা তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎকে অন্ধকারে নিমজ্জিত করছে। অভিভাবক মহল চরম হতাশায় ভুগছেন এবং প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
দুমকি থানার ওসি মো: জাকির হোসেন জানান, “আমরা নিয়মিত অভিযান চালিয়ে বহু মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীকে গ্রেপ্তার করেছি। তথ্য পেলেই তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিই।” তিনি মাদকের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা উল্লেখ করে বলেন, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন।
ওসি সমাজের সচেতন নাগরিকদের প্রতি তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন এবং পরিচয় গোপন রাখার আশ্বাস দিয়েছেন। মাদকমুক্ত দুমকি গড়তে পুলিশ ও সমাজের সম্মিলিত প্রচেষ্টা জরুরি।
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩