রবিবার, ২৯ Jun ২০২৫, ১০:৪৬ অপরাহ্ন
মোঃ রাহিমুল ইসলাম, ভূরুঙ্গামারী প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় মেয়াদ উত্তীর্ণ সোনাহাট সেতুর পাটাতন ভেঙে একটি পাথরবোঝাই ট্রাক আটকে যাওয়ায় সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে। এতে যানজট সৃষ্টি হয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রী ও স্থানীয়রা।
রোববার (২৯ জুন) সকালে সোনাহাট স্থলবন্দর থেকে পাথরবোঝাই একটি ট্রাক সোনাহাট সেতুর ওপর উঠলে পাটাতন ভেঙে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঝুঁকি জেনেও দীর্ঘ দিনের পুরানো এ সেতু দিয়ে সোনাহাট স্থলবন্দরের মালামাল বহনকারী হালকা ও ভারী যানবাহন চলাচল করে আসছিল। সকালে পাথর বোঝাই একটি ট্রাক সোনাহাট সেতুর পূর্ব প্রান্তে ওঠে। এ সময় সেতুর স্টিলের অংশে পাটাতন ভেঙে ট্রাকটি আটকে যায়।
কুড়িগ্রাম জেলা সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ নজরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ওই সেতুটি দিয়ে ভারী ও হালকা যানবাহন চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছে। এতে সেতুর দুই প্রান্তে ছোট যানবাহনের লম্বা সারি দেখা যায়। ব্রিজ থেকে ট্রাকটি সরানো কাজ চলছে। মেরামত শেষে বিকেলের মধ্যে ছোট যান চলাচল স্বাভাবিক হবে। তবে বড় যান চলবে সন্ধ্যার পর।
জানা গেছে, সেতুটি দীর্ঘদিনের পুরানো ও মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও এতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে আসছে ভূরুঙ্গামারী উপজেলার ও কচাকাটা থানার কয়েক লাখ মানুষ। বৃটিশ শাসনামলে ১৮৮৭ সালে লালমনিরহাট থেকে ভারতের গৌহাটি পর্যন্ত রেললাইন স্থাপন করা হয়। তারই অংশ হিসেবে ভূরুঙ্গামারী উপজেলার দুধকুমার নদের ওপর নির্মিত হয় ১২০০ ফুট দীর্ঘ একটি সোনাহাট রেল সেতু।
স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সৈন্যদের প্রবেশ ঠেকাতে সেতুটির একটি অংশ ভেঙে দেয়া হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সেতুটি মেরামত করে ভূরুঙ্গামারীর দক্ষিণের তিন ইউনিয়ন ও কচাকাটা থানা, কেদার, মাদারগঞ্জের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ সচল করা হয়। বৃটিশ আমলে সেতুটির আয়ুষ্কাল নির্ধারণ করা হয় ১০০ বছর। সেই মতে সোনাহাট সেতুর মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে অনেক আগেই।
নড়বড়ে সেতুটি যেকোনো সময় ভেঙে পড়ে ঘটতে পাড়ে বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা। বন্ধ হয়ে যেতে পারে সোনাহাট স্থলবন্দরের যাবতীয় কার্যক্রম।
কুড়িগ্রাম সোনাহাট স্থলবন্দর এবং ভুটানের সঙ্গে অর্থনৈতিক অঞ্চলের কার্যক্রম ব্যাহত না হয় সেজন্য ঝুঁকিপূর্ণ রেল সেতুর পাশে দুধকুমার নদের দক্ষিণে ২০১৮ সালে ৬৪৫ মিটার দৈর্ঘের একটি নতুন পিসি গার্ডার সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। ওই সেতুর নির্মাণ কাজের মেয়াদ শেষ হলেও ৪ দফা মেয়াদ এবং বরাদ্দ বৃদ্ধি করেও আজও কাজ শেষ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। তাই সেতুটির কাজ দ্রুত শেষ করার দাবি স্থানীয়দের।
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩