রবিবার, ০২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৭:০৪ অপরাহ্ন
আবু বকর সুজন, চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:
কুমিল্লা চৌদ্দগ্রামে উপজেলা জুড়ে গরু লালন পালনকারী খামারিদের মাঝ গো-খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। গত বছর স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় উপজেলায় আমন রোপন ব্যহত হয়। যার ফলে ত্রীব খড় সংকট দেখা দে । উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ছেন খামারিরা। চড়া দামেও কিনতে পাওয়া যাচ্ছে না খড়। অনেক খামারী দেশের উত্তরাঞ্চল থেকে চড়া দামে খড় কিনে আনলেও অধিকাংশ খামারী ও গৃহস্থরা বাধ্য হচ্ছেন গবাদিপশু বিক্রি করতে। যার প্রভাব পড়তে পারে আগামী কুরবানির ঈদে।
গবাদিপশুর প্রদান খাদ্য খড় ও ঘাস। গত বছরের বন্যায় জলাবদ্ধতা দীর্ঘায়িত হওয়ায় পচেঁ গেছে বাড়ির আঙ্গিনার খড় ও মাঠের ঘাস। আমন মৌসুম উঠে এলে সংকট কেটে যাবে আশা করেছিলেন খামারীরা। তবে চাহিদা বেশি হওয়ায় সংকট আরো বেড়েছে। শুধুমাত্র ভুসি, কুড়া খাইয়ে অধিক ব্যায়ে গবাদিপশু পালন অসম্ভব বলছেন মালিকরা।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্যমতে, খামার আছে ৪৫৬টি। মোটাতাজাকরণ খামার আছে ১৩৭টি, ৩১৯ ছাগলের খামার ২৯ টি, ভেড়ার খামার ৩টি।
অন্যদিকে ভুসি ও চালের গুঁড়াসহ বিভিন্ন দানাদার গোখাদ্যের দামও লাগামহীনভাবে বেড়ে চলেছে। প্রতি বস্তা ভুসি ১ হাজার ৫০০ টাকা থেকে বেড়ে ১ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চালের গুঁড়া ১ হাজার ২০০ টাকা থেকে বেড়ে ১ হাজার ৫২০ টাকা হয়েছে। ধানের গুঁড়া প্রতি বস্তা ৫৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৭৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) উজিরপুর ইউনিয়নের আদর ডেইরি ফার্মের মালিক ইলিয়াছ হোসেন জানান , যে খড় গাদা হিসেবে কিনেছেন সেই খড় স্থানীয় বাজার থেকে এবার মুঠো আঁটি হিসেবে কিনতে হচ্ছে। প্রতি আঁটি ১৫/২০ টাকা দরে কিনি। গরু প্রতি দিনে একবার অল্প করে খড় খাওয়ালে দিন ১০ আঁটি লাগে।
খামারী পৌরসভার কাউন্সিলর কামাল হোসেন জানান, ‘খড় কিনে আনি দিনাজপুর থেকে। এক ট্রাকে খড় আনতে খরচ পড়ে ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। বেশি দামে খড় কিনে খাওয়ানোর কারনে গরু প্রতি খরচও বেড়ে গেছে অনেক। যাতে করে লোকসানও গুনতে হতে পারে এবার।’
উপজেলা কনকাপৈত ইউনিয়নের চন্দ্রপুর গ্রামের জোবায়ের হোসেন জানান ‘আমার দুইটি দুধের গাভী সহ মোট ছয়টি টি গরু ছিল। খড়েরের অভাবে চারটি গরু বিক্রি করে দিয়েছি।
উপজেলা পশুসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবদুল্লাহ আল মামুন (সাগর) জানান, ‘চৌদ্দগ্রাম উপজেলা ও আশপাশের এলাকায় খড় নেই। খামারী গৃহস্থ কারো কাছে নেই। তাই উপজেলার কোনো খামারী গরু তুলছেন না খামারে। ঈদকে সামনে রেখে প্রতি বছর খামারীরা গরু সংগ্রহ করেন। এই খড় সংকটের কারনে প্রভাব পরার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে করে আগামী কোরবানি ঈদে বাজারে গরু সরবরাহ কম হতে পারে আশঙ্কা করছেন।
তিনি আরো বলেন, ‘সরকারী ও বেসরকারি উদ্যোগে বন্যা-পরবর্তীকালে গো-খাদ্য বিতরণ করা হয়।
নভেম্বরের ২৫ তারিখ ৩৬৫ জন খামারীকে ৭৫ কেজি করে গো-খাদ্য বিতরণ করা হয় ফুড এন্ড এগ্রিকালচার অর্গাইনেশনের পক্ষ থেকে। বেসরকারি ফিড ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে ২ টন গো-খাদ্য বিরতণ করা হয়।
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১৫-১২৫২৪৩