মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:১০ পূর্বাহ্ন
সানজানা তালুকদার, কুবি প্রতিনিধি:
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যলয়ের (কুবি) লোক প্রশাসন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আফরিন ও তার মায়ের হত্যার প্রতিবাদে কুমিল্লা শহরে বিক্ষোভ মিছিল শেষে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর স্মারকলিপি জমা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টার দিকে কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড় এলাকার পূবালী চত্বর এলাকা থেকে কুমিল্লা জেলা আদালত প্রাঙ্গণ পর্যন্ত এই বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভ মিছিল শেষে স্মারকলিপি প্রদান করে শিক্ষার্থীরা
বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘আমার বোন কবরে, খুনি কেনো বাহিরে’, ‘ফাঁসি চাই ফাঁসি চাই, ধর্ষকের ফাঁসি চাই’, ‘ধর্ষকের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘হত্যাকারীর দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে’, ‘আমার বোনের রক্ত বৃথা যেতে দিবো না’, ‘তুমি কে আমি কে, সুমাইয়া সুমাইয়া’, ইত্যাদি স্লোগান দেন।
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল শেষে পেশ করা স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, প্রথমে পুলিশ জানিয়েছিল সুমাইয়াকে ধর্ষণের চেষ্টা কালে তাঁর মা ঘটনাটি দেখে ফেলায় হত্যাকারী প্রথমে মাকে এবং পরে সুমাইয়াকে হত্যা করে। তবে গতকাল গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, কবিরাজ মোবারক প্রথমে সুমাইয়াকে ধর্ষণ করে পরে হত্যা করেছে, যা আগে জানানো হয়নি। এছাড়া হত্যাকাণ্ডের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রকাশে গড়িমসি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলা হয়।
স্মারকলিপিতে আরও দাবি করা হয়, দ্রুত ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রকাশের পাশাপাশি বিশেষ ট্রাইব্যুনালে মামলা রুজু করে হত্যাকারীর সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হবে। অন্যথায় কুমিল্লা শহরসহ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অচল করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেয় শিক্ষার্থীরা।
এ নিয়ে নিহত সুমাইয়ার সহপাঠী মুনিয়া আফরোজ বলেন, ‘আমাদের বান্ধবীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। যেটি আমরা জানতে পেরেছি কালকে, এখানে পুলিশের গাফিলতি আছে। পুলিশ আমাদের তদন্তের কোনো আপডেট দেয়নি। আমাদের দাবি হলো এক সপ্তাহের মধ্যে এর পিছনে আর কোনো বড় শক্তি আছে কিনা তা সুষ্ঠু তদন্ত করে উন্মোচন করতে হবে। এটি রেগুলার আদালত থেকে বিশেষ আদালতে হস্তান্তর করতে হবে। ধর্ষকের সুষ্ঠু বিচার ও ফাঁসি নিশ্চিত ব্যতীত আমরা রাজপথ ছাড়ব না।’
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খাঁন বলেন, ‘আমরা তদন্ত করছি। প্রধান আসামি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলেই আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হবে।’
এ বিষয়ে কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়সার বলেন, ‘আমি স্মারকলিপিটি পেয়েছি। রাষ্ট্রের কাজ জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। আমরা বিষয়টি দেখবো।’
উল্লেখ্য, গত ৭ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা শহরের কালোয়াজুরী এলাকার ভাড়া বাসায় হত্যাকাণ্ডের শিকার হন সুমাইয়া আফরিন ও তাঁর মা তাহমিনা বেগম। এ ঘটনায় হত্যাকাণ্ডের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন মোবারক হোসেন নামক এক কবিরাজ। এছাড়া আদালতে আসামি আরও স্বীকার করেন তিনি ধর্ষণের পর সুমাইয়া আফরিনকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন।
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩