শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১২:২০ পূর্বাহ্ন
চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে চলমান এসএসসি পরীক্ষার একটি কেন্দ্রে চলছে নকল সরবরাহ। সোমবার চৌমুহনী বাজার মুজিবুল হক উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে গণিত পরীক্ষা চলাকালিন কয়েকজন কিশোর তাঁর পরিচিত পরীক্ষার্থীকে দেয়াল টপকে নকল সরবরাহ করে। সাংবাদিকদের গোপন ক্যামেরায় বিষয়টি ধরা পড়লেও অস্বীকার করছেন কেন্দ্র সচিব নালঘর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মামুন হোসেন। ওই কেন্দ্রে নালঘর উচ্চ বিদ্যালয়, চৌমুহনী বাজার মুজিবুল হক উচ্চ বিদ্যালয়, ভাটরা কালজয়ী বিদ্যানিকেতন ও বগৈড় উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০৬ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছে।
জানা গেছে, গত ১০ এপ্রিল চলতি বছরের এসএসসি, দাখিল ও কারিগরি পরীক্ষা শুরু হয়। ২১টি কেন্দ্রের মধ্যে প্রথম দিন থেকে চৌমুহনী মুজিবুল হক উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে নকল সরবরাহ করে কতিপয় কিশোর। অন্য সব কেন্দ্রে গত ১৫ বছরের চেয়ে সন্তোষজনক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরীক্ষার দ্বিতীয় দিন চৌমুহনী মুজিবুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের দেয়াল টপকে নকল সরবরাহ করছে সন্দেহে দুই কিশোরকে ‘সামান্য’ শাস্তি দেয়া হয়।
সোমবার গণিত পরীক্ষার দিন সরেজমিন কেন্দ্র এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, চৌমুহনী বাজারের রাইট টেলিকম এন্ড ফটোকপি দোকানে কয়েক কয়েকজন বহিরাগত কিশোর ফটোকপি করতে দেখা যায়। হল থেকে একজন পুলিশ বের হয়ে রাস্তায় পর্যবেক্ষণ করা শুরু করলে পিছন থেকে দুই কিশোর বলতে শোনা যায়, দ্রুত কম্পিউটার দোকানে ফোন কর। না হয় পুলিশ গিয়ে জরিমানা করবে। এর কিছুক্ষণ পরে শিক্ষক বাবুলের নেতৃত্বে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য আবু তাহের মজুমদারসহ একটি টিম কেন্দ্র সংশ্লিষ্ট এলাকায় ফটোকপি দোকান বন্ধ রাখার জন্য অনুরোধ করে।
কেন্দ্র সচিব মামুন হোসেন বলেন, উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের মাধ্যমে দেয়াল টপকিয়ে পার হওয়ার একটি স্থিরচিত্র দেখেছি। কেন্দ্রের পশ্চিম পাশে একটি পুকুর। দেয়াল টপকিয়ে নকল বিষয়টি সত্য নয়।
সচেতন অভিভাবকরা অভিযোগ করেন, গত ১৭ বছর পরীক্ষার যে হাল ছিল, মনে করেছিলাম এবার পরীক্ষা ভালো হবে। কিন্তু এখানে শর্ষের ভেতরেই ভূত। শিক্ষকরা এমসিকিউ’র অধিকাংশই বলে দেয়। তাছাড়া প্রায় সময় দেখা যায়, কতিপয় কিশোর দেয়াল টপকিয়ে নকল সরবরাহ করছে।
হল সুপার রফিকুল ইসলাম বিএসসিকে অঙ্কের শিক্ষক হয়ে কিভাবে কেন্দ্রে অবস্থান করছেন-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি হল সুপারের দায়িত্ব পালন করেছি। অফিস কক্ষেই বসে ছিলাম। উপরের হলে যাইনি।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার একেএম মীর হোসেন বলেন, চৌমুহনী বাজার মুজিবুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ে চলমান এসএসসি পরীক্ষার অনিয়মের কিছু অভিযোগ পেয়েছি। সবে মাত্র তিনটি পরীক্ষা শেষ হয়েছে। আগামী পরীক্ষাগুলোতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জামাল হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি জানার সাথে সাথে কেন্দ্রে ম্যাজিষ্ট্রেট পাঠানো হয়েছে। দেয়াল টপকিয়ে যে জায়গা দিয়ে নকল সরবরাহের কথা বলা হচ্ছে-ওই জায়গা দিয়ে নকল সরবরাহ সম্ভব না’
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১৫-১২৫২৪৩