মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:১৫ অপরাহ্ন
ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি :
নীলফামারীর ডিমলায় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি জবরদখলের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালী একটি চক্রের বিরুদ্ধে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। বিদ্যালয়ের সম্পত্তি উদ্ধারে থানায় অভিযোগ দাখিল করেছেন বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ডিমলা উপজেলার পঁচাতনাই ইউনিয়নের কালিগঞ্জ শ্রীমন্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামে রেকর্ডভুক্ত প্রায় ৩একর ১৭ শতাংশ জমি একই এলাকার আ. ছালাম, আশরাফুল ও সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল লোক অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে গত রোববার (১ ডিসেম্বর) পেশিশক্তির জোরে দখলের চেষ্টা চালায়। এ সময় তারা বিদ্যালয়ের জমিতে লাগানো পাকা আমন ধান কেটে নিয়ে যায়। পরদিন ওই জমিতে হাল চাষ করে জবরদখল প্রতিষ্ঠার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল করিম জানান, বিদ্যালয়ের ২ একর ৭০ শতাংশ জমি পার্শ্ববর্তী বাসিন্দা জাহিদুল ইসলামসহ আরও পাঁচজনকে দুই বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক লিজ দেওয়া হয়। লিজ গ্রহীতারা সেখানে বৈধভাবে আমন ধান চাষাবাদ করেন। কিন্তু অভিযুক্ত ভূমিদস্যুরা কোনো প্রকার আইনগত অধিকার ছাড়াই ধান কেটে নিয়ে গিয়ে জমিতে হাল চাষ করে জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা করছে। বিবাদীগন জাল কাগজপত তৈরি করে বিদ্যালয়ের সম্পতি মালিকানা দাবী করে আসছিল। বিযয়টি নীলফামারীর আাদালত ভুয়া মমে রায় পদান করেন।
নীলফামারীর জেলা প্রশাসক কায্যালয়ের আরএম শাখার স্বারক নং ০৫.৪৭.৭৩০০. ০১৯.০১.০০২.২৫.১৮৯৯ তাং ১২/১১/২০২৫ সুত্রে যায়, বিজ্ঞ সহকারী জজ আদালত ডিমলা, নীলফামারীর অন্য-৭১/২০১৩ নং মোকাদ্দমা সরকার পক্ষে গত ২৭/০৮/২০২০ তারিখে বিদ্যালয়ের নামে জমির মাকিকানার রায় প্রদান করে ২০/০৯/২০২০ তারিখে ডিক্রী হয়। বিবাদীগন নীলফামারী আদালত আপিল করেন যার নম্বর অন্য আপিল৩৬/২০২০ নং মোকাদ্দমাটি গত ২১/০৫/২০২৫ তারিখে না মন্জুর করে খারিজ করে বিদ্যালয়ের নামে জমির মালিকানা বহাল রাখে।
বিবাদীগনের পক্ষে আমিনুর ইসলাম বাদী হয়ে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ, ঢাকা সিবিল রিবিশন নং -৩৫২১/২০২৫ইং তারিখে মোকাদ্দমা দায়ের করেন। মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে গত ২৬/০৮/২০২৫ং তারিখে আবেদনকারীর আবেদন গ্রহন করে আদেন দেন হাইকোর্ট বিভাগেরর বিধিমালা অধ্যায় ৪ A এর বিধি 3(6) ের অধিনে শুনানির অপেক্ষায় পক্ষগুলিকে মামলার জমির দখল এবং অবস্থানের ক্ষেত্রে তিন মাসের জন্য স্থিতাবস্থা বজায় রিখার নির্দেশ প্রদান করেন। বিষয়টি নিয়ে সহকারী কমিশনার (ভুমি) রওশন কবির বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বিবাদীদের নিয়ে বৈঠক করে উভয় পক্ষকে আদালকের প্রতি শ্রদ্থাশীল হয়ে বিদ্যালেযর জমি জবর দখল না করার নিদেশ প্রদান করেন।
কিন্তু বিবাদীগন বিষয়টি আমলে না নিয়ে বিদ্যালেযর লীজকৃত সম্পতি পুনরায় লোকজন দিয়ে কেটে নেয়। এ ব্যাপারে ডিমলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) রওশন কবির বলেন, আদালতে নির্দেশ অমান্যন করে কেহ প্রভাব বিস্তার বা পেশিসক্তি ব্যবহার করলে বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হবে।
ডিমলা উপজেলা শিক্ষা অফিসার জানান, বিদ্যালয়ের জমি জবরদখলের বিষয়টি তিনি প্রধান শিক্ষকের কাছে শুনেছেন এবং বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইমরানুজ্জামান বলেন, “শ্রীমন্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি জবরদখলের বিষয়টি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আমাকে অবহিত করেছেন। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুতর।
আইনের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ে বিদ্যালয়ের জমি অবৈধ দখলদারদের কবল থেকে উদ্ধার করা হবে।”
স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জমি এভাবে জবরদখলের চেষ্টা শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য হুমকিস্বরূপ। তারা প্রশাসনের দ্রুত ও কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল করিম জনান,বিদ্যালয়ের জমি উদ্ধারে ১০ জনকে আসামী করে ডিমলা থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করেছি। আশা করি সরকারি সম্পত্তি রক্ষায় প্রশাসন যথাযথ আইন প্রয়োগ করে উদ্ধারের ব্যবস্থা নিবেন।
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩