বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ০২:০১ পূর্বাহ্ন
নোমাইনুল ইসলাম, বাঘাইছড়ি (রাঙামাটি) প্রতিনিধি:
২০০৬ সালের ঐতিহাসিক রক্তাক্ত ২৮ অক্টোবর স্মরণে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বাঘাইছড়ি উপজেলা শাখার উদ্যোগে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টায় উপজেলার স্থানীয় জামায়াত কার্যালয়ে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা কবীর আহমদ এবং সঞ্চালনা করেন মাওলানা আফসার উদ্দিন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পৌর জামায়াত সভাপতি মাওলানা নেয়ামত উল্লাহ, উপজেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মো. আফসার হোসেন, প্রচার সেক্রেটারি ডা. সরদার আবদুর রহিম, ও টিম সদস্য মো. হানিফসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
বক্তারা বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের এক ভয়াবহ ও কলঙ্কজনক দিন। সেদিন রাজধানীর পল্টনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরীর শান্তিপূর্ণ সমাবেশে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা লগি-বৈঠা, লাঠি, আগ্নেয়াস্ত্র ও বোমা নিয়ে ভয়াবহ হামলা চালায়।
প্রকাশ্য দিবালোকে নিরস্ত্র জামায়াত ও ছাত্রশিবির কর্মীদের পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
হামলাকারীরা নির্মমভাবে লাশের ওপর নৃত্য-উল্লাসে মেতে ওঠে— যা পুরো জাতিকে হতবাক করে তোলে এবং বিশ্ববাসীকেও নাড়া দেয়।
নিহতদের মধ্যে ছিলেন ছাত্রশিবির নেতা মুজাহিদুল ইসলাম, কর্মী জসিম উদ্দিনসহ মোট ১৪ জন। আহত হন সহস্রাধিক নেতা-কর্মী।
বক্তারা বলেন, এই নৃশংস হত্যাযজ্ঞ ছিল একটি সুপরিকল্পিত ও সংগঠিত রাজনৈতিক হামলা, যার মূল উদ্দেশ্য ছিল জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বকে নিঃশেষ করা এবং ইসলামী রাজনীতিকে ভয় দেখানো।
বক্তারা স্মরণ করিয়ে দেন, ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল ২০০৬ সালের ২৭ অক্টোবর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার পরদিন।
পরদিন জামায়াতের সমাবেশের প্রস্তুতিকালে আওয়ামী জোটের নেতাকর্মীরা বিজয়নগর, তোপখানা রোড ও মুক্তাঙ্গন এলাকা থেকে লগি-বৈঠা নিয়ে সমাবেশে আক্রমণ চালায়।
তারা বলেন, “এটি ছিল বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে সহিংসতার এক জঘন্য অধ্যায়।”
তৎকালীন জাতিসংঘ মহাসচিবসহ বিশ্বের বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা এ হত্যাযজ্ঞের নিন্দা জানায়।
কিন্তু দুঃখজনকভাবে আজও পর্যন্ত এ ঘটনার বিচার হয়নি— যা জাতির জন্য এক চরম কলঙ্ক বলে বক্তারা মন্তব্য করেন।
বক্তারা বলেন, “বাংলাদেশে যদি কুরআনের আইন প্রতিষ্ঠিত হয়, তবে গুম, খুন ও দুর্নীতি চিরতরে বন্ধ হবে।”
বক্তারা প্রতিজ্ঞা করেন, ইসলামী আদর্শভিত্তিক সমাজ গঠনের লক্ষ্যে জামায়াতে ইসলামী সর্বাত্মকভাবে কাজ করে যাবে।
আলোচনা সভায় বক্তারা আগামি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান।
তারা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান— জামায়াতে ইসলামী ঘোষিত পাঁচ দফা দাবি মেনে নিয়ে জুলাই সনদের ভিত্তিতে নির্বাচনের আয়োজন করতে।
অনুষ্ঠান শেষে ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের শহীদদের রুহের মাগফেরাত, তাদের পরিবারের শান্তি ও দেশের কল্যাণ কামনায় বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া পরিচালনা করেন মাওলানা আফসার উদ্দিন।
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩