শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ০১:০৮ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনামঃ
পবিপ্রবিতে বাঁধন’র ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে কুয়েট শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল শিল্পকলায় আসছে জবি নাট্যকলা বিভাগের ‘ডিজায়ার আন্ডার দ্য এলমস’ কুবিতে জুনিয়র কর্তৃক সিনিয়র হেনস্তার অভিযোগ ৭ দফা দাবিতে কুড়িগ্রামে সওজ কর্মচারীদের স্মারকলিপি প্রদান মুন্সিগঞ্জে দুস্থদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ ড্রাম ট্রাকের চাপায় যুবক নিহত নারীদের স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে বউ-শাশুড়ি মেলা গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা ২০২৫–২৬: নেতৃত্বে ইবি ও পবিপ্রবি বাউফলে ড. মাসুদের গণসংযোগ নাসিরনগরে দিনব্যাপী সীরাতুন্নবী (সা:) মহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত পাইপ ফেটে বিষাক্ত অ্যামোনিয়া গ্যাস ছড়িয়ে ২০ জেলে আহত মাভাবিপ্রবিতে সৈনকিয়ান পূর্ণমিলনী ও নবীনবরণ অনুষ্ঠিত মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী হতে চান আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক কুড়িগ্রামে দুর্গম এলাকায় বসবাসকারী ৬ হাজারেরও অধিক শিক্ষার্থীদের পাঠদানে সহায়তা করছে ব্র্যাক বাঘাইছড়িতে জাতিগত বৈষম্যের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ ৯০ দিনে কুরআনের হাফেজ হলেন মাহদী রাজাপুরে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ উদ্বোধন ২৯৯ নং আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে দীপেন দেওয়ানকে চান বাঘাইছড়িবাসী পটিয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে দুই শ্রমিকের মৃত্যু

ফুলবাড়ীতে গরুর ল্যাম্পি স্কিন রোগের প্রকোপ, দিশেহারা কৃষক

জাহাঙ্গীর আলম , ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে দেখা দিয়েছে গরুর ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) রোগের প্রাদুর্ভাব। এ রোগে অনেক কৃষকের গরু আক্রান্ত হয়েছে। রোগাক্রান্ত গরুর চিকিৎসায় মোটা অংকের টাকা খরচ করতে হচ্ছে কৃষকদের। তারপরও ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রেহাই মিলছে না তাদের। দিন যতই যাচ্ছে ততই বাড়ছে আক্রান্ত ও মারা যাওয়া গরুর সংখ্যা। এমন পরিস্থিতিতে গরু নিয়ে দিশেহারা অবস্থা কৃষকের।

উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তরের তথ্য মতে, উপজেলায় খামারি ও প্রান্তিক কৃষকের মিলিয়ে গরুর সংখ্যা ৬৭ হাজার। উপজেলার সর্বত্র ল্যাম্পি স্কিন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। প্রতিদিনই গড়ে চার থেকে পাঁচজন রোগাক্রান্ত গবাদি পশু নিয়ে পশু হাসপাতালে আসছেন। তবে উপজেলায় কি পরিমান গরু এ রোগে আক্রান্ত এবং এখন পর্যন্ত কতটি গরু মারা গেছে তার নির্দিষ্ট কোন তথ্য মেলেনি উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় কৃষকের বাড়িতে গরু ল্যাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত। এ রোগের কবল থেকে গরু বাঁচাতে অনেকেই স্থানীয় কবিরাজ ও হাতুড়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হচ্ছেন। প্রান্তিক কৃষকরা জানিয়েছেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারে এ রোগের প্রাদুর্ভাব ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। রোগাক্রান্ত গরু মারা যাচ্ছে। আক্রান্ত গরুর চিকিৎসা চললেও দ্রুতই স্বাস্থের অবনতি ঘটছে। আর এ রোগের চিকিৎসা চলমান রাখতে খরচ হচ্ছে মোটা অংকের টাকা।

ঘোগারকুটি গ্রামের কৃষক মোঃ শরিফুল ইসলাম বলেন, “ঈদের আগে আমার গরুর ল্যাম্পি স্কিন রোগ দেখা দেয়। স্থানীয় পশু ডাক্তার ডেকে চিকিৎসা নিচ্ছি। এখন পর্যন্ত চিকিৎসায় তিন হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। তারপরও খুব একটা উন্নতি দেখছি না, দ্রতই গরুর স্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছে। এদিকে আশপাশে অনেকের গরু মারা যাচ্ছে। আমার এলাকার নজরুল ইসলামের ১টি, ফখর উদ্দিন মাস্টারের ১টি, আবুল হোসেন ১টি ও আনোয়ার হোসেনে ১টি গরু মারা গেছে। কমবেশি সবার গরু আক্রান্ত। আমার গরুটি নিয়ে আতঙ্কে আছি।”

একই এলাকার কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, তার চারটি গরুর মধ্যে দুইটি গরু রোগাক্রান্ত। স্থানীয় পশু ডাক্তারের চিকিৎসা নিয়েও গরুর তেমন একটা উন্নতি হয়নি। এখন তিনি কবিরাজের শরণাপন্ন হয়েছেন।

 

উপজেলার সদর ইউনিয়নের চন্দ্রখানা গ্রামের কৃষাণী হাছনা বেগম বলেন, “আমার মোট চারটি গরু। সপ্তাহ খানেক আগে একটি গরুর গায়ে ফোস্কা দেখা দেয়। এলার্জি হয়েছে ভেবে ডাক্তার ডাকিনি। পরে গরুর মুখে ঘা হয়, পা ফুলে যায়। অবস্থা খারাপ হলে গ্রাম্য ডাক্তার ডাকি। ডাক্তার এসে দেখে বলে এ রোগের নাম ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজ। গরুটির চিকিৎসায় পাঁচ হাজার টাকা খরচ করি। তাতেও কোন কাজ হয়নি গরুটি মরেছে। বাকি গরুগুলো নিয়ে চরম দুঃশ্চিন্তায় আছি।”
আরেক কৃষক আলী আহম্মদ জানান, তার চারটি গরুর মধ্যে দুইটি গরু ল্যাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় একটি মারা গেছে। আক্রান্ত বাকি গরুটি মুমূর্ষু অবস্থায় আছে। অপর গরু দুটি কখন যে আক্রান্ত হয় সেই শঙ্কা জেগেছে তার মনে। চিকিৎসা করেও গরু বাঁচাতে না পেরে হতাশ তিনি।

শাহ বাজার এলাকার কৃষক নজরুল ইসলাম জানান, তার পাঁচটি গরুর মধ্যে একটি বাছুর গরু ল্যাম্পি আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। ওনার প্রতিবেশি আরও দুই জনের দুটি বাছুর গরু মারেছে। তিনি আরও জানান, গরমের আগে তিনি চারটি গরুকে ভ্যাকসিন দিয়েছেন। এরপর থেকে গরুগুলো এখন পর্যন্ত সুস্থ আছে। ল্যাম্পি প্রতিরোধে সবাই যদি গরুকে ভ্যাকসিন দিত তাহলে এ রোগ এতো ছড়াতো না।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আরিফুর রহমান কনক জানান, উপজেলায় খামারিদের তুলনায় প্রান্তিক কৃষকদের গরু ল্যাম্পি স্কিন রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। রোগাক্রান্ত পশুর সুচিকিৎসায় কালক্ষেপণ ও একেবারে চরমপর্যায়ে চিকিৎসা নিতে আসায় পশু মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। এজন্য মাঠ পর্যায়ে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে কৃষকদের সচেতন করা হচ্ছে। গরুর সুচিকিৎসার জন্য উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তরে দ্রুত যোগাযোগ করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩