এ.জে. নেজাম উদ্দিন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি:
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের আয়োজনে শুরু হয়েছে সাতদিনব্যাপী “পাপেট থিয়েটার (পুতুল নাট্য)” কর্মশালা। কর্মশালায় অংশ নিচ্ছেন বিভাগের ২০১৯-২০, ২০২০-২১ এবং ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা।
কর্মশালার সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বিভাগের শিক্ষক মামুনুল হক। প্রশিক্ষক হিসেবে কর্মশালায় যুক্ত হয়েছেন বাংলাদেশের খ্যাতিমান দুই পাপেটিয়ার ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সোহেল ও আসাদুজ্জামান আশিক।
স্বপ্নীল সোহেল, নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী। তিনি দূরন্ত টেলিভিশনে শিশুদের সঙ্গে সাত বছর ধরে কাজ করেছেন। পাশাপাশি তিনি একজন পাপেটিয়ার ও ভেন্ট্রিলোকুইস্ট, আরশিনগর থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, রেডিও ও টেলিভিশন অভিনেতা এবং বাংলাদেশ পুতুল নাট্য গবেষণা ও উন্নয়ন কেন্দ্রের সদস্য। তিনি বর্তমানে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির “সুলতানাজ ড্রিম” প্রযোজনার নির্দেশক হিসেবেও কাজ করছেন।
অন্য প্রশিক্ষক আসাদুজ্জামান আশিক কাকতাড়ুয়া পাপেট থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা ও ডিজাইনার। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী।
নাট্যকলা বিভাগের ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাইফ আফ্রিদি বলেন, “পাপেট হলো যোগাযোগের এক সহজ মাধ্যম। অনেক সময় কিছু বিষয় আমরা সরাসরি বলতে সংকোচবোধ করি, কিন্তু পাপেটের মাধ্যমে তা সহজে ও গ্রহণযোগ্যভাবে বলা সম্ভব। আমি চাই বিভাগে একটি স্থায়ী পাপেট ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হোক এবং একজন পেশাদার পাপেটিয়ার স্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়া হোক।”
১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আফিয়া ইবনাত ওয়াফা বলেন, “পাপেট একধরনের ভাষা, যা চিকিৎসা, শিক্ষা ও বিনোদনসহ জীবনের নানা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। দুইজন প্রশিক্ষকই অসাধারণভাবে আমাদের এই শিল্প সম্পর্কে ধারণা দিচ্ছেন এবং শিক্ষকগণও আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করছেন। এমন একটি কর্মশালা আয়োজনের জন্য বিভাগের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।”
কর্মশালার পঞ্চম দিনে অংশগ্রহণকারীরা পাপেট তৈরি, পরিচালনা, কণ্ঠনৈপুণ্য ও গল্প বলার কৌশল সম্পর্কে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।
বিশ্বব্যাপী পাপেট থিয়েটার দীর্ঘদিন ধরে শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়, বরং শিক্ষাদান, সামাজিক সচেতনতা ও মানসিক স্বাস্থ্যচর্চায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। শিশুদের শেখার আগ্রহ জাগানো থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্কদের কাছে সামাজিক বার্তা পৌঁছে দেওয়া, সব ক্ষেত্রেই পাপেট এক কার্যকর যোগাযোগের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের এই উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল চিন্তাশক্তি ও নাট্যাভিনয়ের নান্দনিক দিককে আরও প্রসারিত করবে বলে আশা করছেন আয়োজকরা।