মোহাম্মদ সাজিদুল ইসলাম, কুয়েট প্রতিনিধিঃ
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীরা প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলনের ব্যানারে ঘোষিত তিন দফা দাবির বাস্তবায়নের দাবিতে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন।
আজ (সোমবার) সকাল ১১টার দিকে কুয়েট অডিটোরিয়াম চত্বর থেকে এক বিক্ষোভ মিছিল বের করে শিক্ষার্থীরা। পরে তারা খুলনা-যশোর মহাসড়কের ফুলবাড়ীগেট এলাকায় অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করেন।
বিক্ষোভ চলাকালে শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন — “১, ২, ৩, ৪ — ডিপ্লোমা তুই কোটা ছাড়,” “এই মুহূর্তে দরকার প্রকৌশল খাতের সংস্কার,” এবং “প্রকৌশলের সকল পদ প্রকৌশলীদের অধিকার।”
অবরোধ চলার প্রায় ৩০ মিনিট পর শিক্ষার্থীরা জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, “আমরা সাধারণ মানুষকে কষ্ট দিতে চাই না। তবে সরকার যদি প্রকৌশল খাতের সিদ্ধান্তে ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের অনৈতিক সুবিধা দিতে চায়, তাহলে আমরাও কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।”
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী রাহাতুল ইসলাম বলেন, “ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীরা যুক্তিতে পরাজিত হয়ে বুঝতে পারে তদন্ত রিপোর্ট তাদের পক্ষে যাবে না। তাই তারা দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করে। যার ফলে ১৭ দিন পর পূর্বের ওয়ার্কিং কমিটি বাতিল করা হয় এবং নতুন ৬ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু প্রায় দুই মাস পেরিয়ে গেলেও সেই রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়নি।”
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ছয় মাস ধরে দেশের প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করলেও সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
তারা বলেন, “শাহবাগে শান্তিপূর্ণ অবরোধ চলাকালে আমাদের সহপাঠীদের ওপর পুলিশের অমানবিক হামলার পর সরকার প্রহসনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করে আন্দোলনকে থামানোর চেষ্টা করে।”
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আগামী *৭ নভেম্বরের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারকে আলটিমেটাম* দিয়েছেন।
তারা সতর্ক করে বলেন, “নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে কুয়েটসহ দেশের সব প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।”
*তিন দফা দাবিঃ
১. সরকারি নবম গ্রেডে শতভাগ পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ।
২. দশম গ্রেড বিএসসি এবং ডিপ্লোমা উভয়ের জন্য উন্মুক্তকরণ।
৩. বিএসসি ডিগ্রি ছাড়া কেউ ‘ইঞ্জিনিয়ার’ পদবী ব্যবহার করতে পারবে না।
এর আগে, গত ২৮ আগস্ট শাহবাগে প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সময় পুলিশের হামলার ঘটনার পর সরকার তাদের দাবিগুলো পর্যবেক্ষণে ১৪ সদস্যের ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করেছিল।
পরে ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ১৭ সেপ্টেম্বর উক্ত কমিটি বাতিল করে ৬ সদস্যের নতুন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তবে এখন পর্যন্ত সেই কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়নি।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, “আমাদের আন্দোলন ন্যায্য অধিকার আদায়ের লড়াই। সরকারের কাছে দাবি— প্রকৌশল খাতের মান রক্ষা করতে প্রকৃত প্রকৌশলীদের মর্যাদা ও অধিকার নিশ্চিত করা হোক।”