ইমরান প্রধান, ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ সাদ্দাম হোসেন ভোটার তালিকায় তৃতীয় লিঙ্গের নাম অন্তর্ভুক্ত না থাকার কারন ব্যাখ্যা করে বলেন, সরকার ২০১৫ সালে তৃতীয় লিঙ্গের স্বীকৃতি দেয় আর ভোটার তালিকায় তৃতীয় লিঙ্গের অন্তর্ভূক্তির সুযোগ তৈরি হয় ২০১৯ সালে। আলোচিত হিজড়াদের অনেকের জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই-বাছাই করে দেখা যায় তারা সকলেই ২০১৯ সালের পূর্বেই ভোটার হয়েছেন অর্থাৎ তারা চাইলেও হিজড়া/তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে ভোটার হওয়ার সুযোগ ছিল না।
ভোটার হতে গেলে নির্দিষ্ট ফরমে আবেদন করে ভোটার হতে হয়। ফরমের একটি ঘরের তথ্যে লিঙ্গের জায়গায় কোন ব্যক্তি পুরুষ, মহিলা নাকি হিজড়া হিসেবে অন্তর্ভূক্ত হবে সেটা ভোটারের দাখিলকৃত তথ্য ও ইচ্ছার উপর নির্ভর করে। হিজড়া হওয়া সত্ত্বেও কেউ ইচ্ছে করে পুরুষ কিংবা মহিলা ভোটার হওয়ার তথ্য দাখিল করলে বা আবেদন করলে নির্বাচন অফিস তাতে বাঁধা দিতে পারে না, কারণ নির্বাচন অফিসের পক্ষে কারো লিঙ্গ যাচাই-বাছাই করা সম্ভব নয়।
তবে তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে ভোটার হতে হলে সমাজ সেবা অফিস এবং স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সমন্বয়ে ডাক্তারি পরীক্ষার মাধ্যমে হিজড়া বা তৃতীয় লিঙ্গের প্রত্যয়নপত্র লাগে। যেটা কোনভাবেই নির্বাচন অফিসের কাজের মধ্যে পড়ে না। ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময়েও ঠিক একই কাজ করা হয়। অর্থাৎ কোনব্যক্তি আবেদন না করলে, নির্বাচন অফিস নিজে থেকে স্বপ্রণোদিত হয়ে কারো তথ্য সংগ্রহ, ভোটার করণ, সংশোধন কিংবা তথ্য পরিবর্তন করার ক্ষমতা রাখে না।
তবে ভোটার জাতীয় পরিচয়পত্রে লিঙ্গের তথ্য পরিবর্তনের জন্য অর্থাৎ সংশোধন করতে গেলে বা তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে অন্তর্ভূক্ত হতে চাইলে সমাজসেবা অফিসের প্রত্যয়নপত্র ও চেয়ারম্যানের প্রত্যয়ন সংযুক্ত করে অনলাইনে আবেদন করে তথ্য সংশোধন করে নিতে পারেন।
প্রকৃত পক্ষে হিজড়া জনগোষ্ঠীর সদস্যদেরকে খুঁজে বের করে তাদের পূনর্বাসনের সার্বিক সহযোগিতা করা সমাজ সেবা অফিসের কাজ।
কিন্তু আবেদন না করলে স্ব-প্রণোদিত হয়ে কারো জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি, সংশোধন, ভোটার তালিকা হতে নাম কর্তন কিংবা স্থানান্তর করার ক্ষমতা নির্বাচন কমিশন তথা নির্বাচন অফিসের নাই। এই বিষয়গুলো হয়তো অনেকেই জানেনা । ফলে অনেকেই মনে করতে পারে, কেন ভোটার তালিকা হালনাগাদ করে তাদেরকে তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি বা হচ্ছে না।