মোঃ মহিম ইসলাম, বাগেরহাট প্রতিনিধি:
ঐতিহ্য আর ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে (৩ নভেম্বর) সোমবার থেকে শুরু হয়েছে সুন্দরবনের উপকূলবর্তী দুবলার চরের ঐতিহ্যবাহী তিন দিনব্যাপী রাস উৎসব-২০২৫।
কার্তিক মাসের পূর্ণিমা তিথিকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠিত এই উৎসবকে কেন্দ্র করে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় অবস্থিত আলোরকোল জনপদে লক্ষ লক্ষ সনাতন ধর্মাবলম্বী পুণ্যার্থীর ভিড় জমতে শুরু করেছে।
বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা অনুসারে, এ বছর ০৪ নভেম্বর, মঙ্গলবার রাত ১০টা ৩৮ মিনিট থেকে পূর্ণিমা তিথি শুরু হচ্ছে এবং ০৫ নভেম্বর, বুধবার সন্ধ্যা ৬টা ৪৯ মিনিট পর্যন্ত তিথি স্থায়ী থাকবে।
রাস উৎসবের মূল আকর্ষণ হলো পুণ্যস্নান। পুণ্যার্থীরা বিশ্বাস করেন, এই পূর্ণিমা তিথিতে সাগরের জলে স্নান করলে সমস্ত পাপ মোচন হয় এবং মনোবাঞ্ছা পূরণ হয়। ভোরের প্রথম জোয়ারের জলে স্নান শেষে ভক্তরা হাতে রাখা ফুল, ফল ও প্রসাদ সাগরে উৎসর্গ করেন। এই সময়ে ঢাক-ঢোল, কাসা ও মন্দিরার ধ্বনিতে এবং ভজন-কীর্তনে দুবলার চরের পরিবেশ মুখরিত হয়ে ওঠে।
সুন্দরবনের প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা ও বনজ সম্পদ রক্ষার্থে বন বিভাগ এবারও কঠোর অবস্থান নিয়েছে। সরকারি নির্দেশনা মেনে বিগত বছরগুলোর মতো এবারও রাস উৎসব উপলক্ষে কোনো মেলা বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়নি।
দুবলার চরের রাস পূজায় শুধুমাত্র সনাতন ধর্মাবলম্বী পুণ্যার্থীরাই অংশগ্রহণ করতে পারছেন। কোনো ট্যুরিস্ট বা অন্য ধর্মের দর্শনার্থীদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
পুণ্যার্থীদের জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) যাচাই সাপেক্ষে এবং বন বিভাগের নির্ধারিত পাঁচটি রুট দিয়ে প্রবেশ ও বের হওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।
পুণ্যার্থীদের নির্বিঘ্নে যাতায়াত ও পুণ্যস্নান নিশ্চিত করতে বন বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোর নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছে। নির্ধারিত রুটগুলোতে কোস্টগার্ড, বনবিভাগের টহল দল এবং অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা নিয়োজিত রয়েছে। হরিণ শিকার রোধ ও বনের পরিবেশ রক্ষায় বাড়তি নজরদারি চলছে।