কুয়েট প্রতিনিধিঃ
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) আইটি গেট সংলগ্ন স্থানীয় বিএনপি কার্যালয়ে দুর্বৃত্তদের বোমা ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় “ইমদাদুল হক (৪৫)” নামে এক শিক্ষক নিহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় আরও তিনজন আহত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে যোগীপোল ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইউপি সদস্য মামুন শেখ (৪৫) এবং মিজানুর রহমান নামে এক ব্যক্তি গুরুতর অবস্থায় রয়েছেন।
রোববার (২ নভেম্বর) রাত আনুমানিক ৯টার দিকে কুয়েট রোড এলাকার যোগীপোল ইউনিয়ন বিএনপির কার্যালয়ে এই হামলার ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হামলার সময় মামুন শেখ কয়েকজন স্থানীয় নেতা-কর্মীকে নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে বৈঠক করছিলেন। হঠাৎ মোটরসাইকেলে করে আসা অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা অফিস লক্ষ্য করে 'পরপর দুটি বোমা ও চার রাউন্ড গুলি ছুড়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।'
বোমা বিস্ফোরণ ও গুলির শব্দে আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আহতদের মধ্যে শিক্ষক ইমদাদুল হক ঘটনাস্থলেই গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে দ্রুত খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মামুন শেখ ও মিজানুর রহমানকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়। তাঁদের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ঘটনার পর খান জাহান আলী থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে ও আশপাশের এলাকায় টহল জোরদার করে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয় দুটি অবিস্ফোরিত বোমার খণ্ডাংশ এবং গুলির খোসা।
খান জাহান আলী থানা বিএনপির সভাপতি কাজী মিজানুর রহমান বলেন, যোগীপোল ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন শেখকে লক্ষ্য করেই এই হামলা চালানো হয়েছে। তিনি গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আমরা ঘটনার সঠিক তদন্ত ও দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।”
যোগীপোল ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মীর শওকত হোসেন হিট্টু বলেন, আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না, তবে খবর পেয়েছি দুর্বৃত্তরা অফিসে ঢুকে বোমা ও গুলি ছুড়ে পালিয়ে গেছে। আহতদের চিকিৎসা চলছে।”
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, হামলার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত চলছে। প্রাথমিকভাবে এটি "রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বা আধিপত্য বিস্তারের জের হতে পারে" বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ঘটনার পর কুয়েট ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় "চরম উত্তেজনা ও নিরাপত্তাহীনতা" বিরাজ করছে। স্থানীয়রা জানান, সাম্প্রতিক সময়ে কুয়েট রোড এলাকায় একাধিক ছোটখাটো সংঘর্ষ ঘটেছে, যা এখন বড় ধরনের সহিংসতায় রূপ নিচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ক্যাম্পাসসংলগ্ন এলাকায় এমন হামলার ঘটনায় তাঁরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।