আবু তাহের, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিঃ
সিএনজির ধাক্কায় গুরুতর আহত হয়েছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা ও পরিবেশনা বিদ্যা বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শাশ্বত গোলদার। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সিএনজি চালককে এক লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২নং গেটের ট্রামপুল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এসময় রিকশাচালক ও রিকশায় থাকা অপর যাত্রী মুহিতও আহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রিকশায় করে ত্রিশাল বাজারে যাওয়ার পথে পেছন থেকে দ্রুতগতিতে আসা সিএনজির ধাক্কায় রিকশা থেকে ছিটকে পড়ে গোলদার, মুহিত এবং রিকশা চালক। পরে সিএনজি চালক পালিয়ে যাওয়ার সময় গোলদারের হাতের ওপর দিয়ে সিএনজি চালিয়ে দেয়।
আহত শিক্ষার্থীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বর্তমানে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে রাজধানী ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২নং গেটে শিক্ষার্থীরা রাস্তা ব্লকেড করে ও ৯টি সিএনজি আটক করে। তাদের দাবি, ক্ষতিপূরণ ও বিচার না পাওয়া পর্যন্ত কোন সিএনজি মুক্ত করা হবে না। পরে শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনায় বসে ত্রিশাল থানা পুলিশ, সিএনজি মালিক সমিতি এবং প্রক্টরিয়াল বডি।
শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফারেন্স কক্ষে আবারও আলোচনায় বসে ত্রিশাল উপজেলা প্রশাসন, সিএনজি মালিক সমিতি, ত্রিশাল থানা পুলিশ, প্রক্টরিয়াল বডি এবং শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা। সভায় আহত শিক্ষার্থীর চিকিৎসা খরচ বাবদ ১ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা জরিমানা নির্ধারণ করা হয়।
এর মধ্যে অভিযুক্ত সিএনজি চালক ২৫ হাজার টাকা নগদ প্রদান করেন। আগামী রবিবার পরিবহন শ্রমিক ও মালিক সমিতি ৫০ হাজার এবং পৌরসভার জনকল্যাণ তহবিল থেকে ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে। আর অভিযুক্ত সিএনজি চালক বাকি ৭৫ হাজার টাকা আগামী বৃহস্পতিবার পরিশোধ করবেন। আর অভিযুক্ত সিএনজি চালকের সিএনজি ক্যাম্পাসে নিয়ে এসে প্রশাসনের হেফাজতে জমা রাখলে, আটককৃত সিএনজিগুলো ছেড়ে দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী গোলদার বলেন, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ডাক্তার ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) রেফার করে। এরপর বাসায় কথা বলি। এর আগেও আমার হাত ভেঙ্গেছিলো, তখন খুলনায় চিকিৎসা নিয়েছিলাম। এজন্য পরিবারের সিদ্ধান্তে প্রথমে খুলনায় চিকিৎসা নেবো।
নাট্যকলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মো. কামাল উদ্দীন বলেন, গোলদার আমাদের বিভাগের একজন মেধাবী শিক্ষার্থী। আমরা সার্বক্ষণিক তার সাথে যোগাযোগ করছি। অনাকাঙ্ক্ষিত এই পরিস্থিতি কাটিয়ে সে দ্রুতই সুস্থ হয়ে উঠবে এই প্রত্যাশা করি।
প্রক্টর ড. মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থী আহত হওয়ার ঘটনায় ত্রিশাল উপজেলা প্রশাসন, সিএনজি মালিক সমিতি, ত্রিশাল থানা পুলিশ, প্রক্টরিয়াল বডি এবং শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরাসহ আমরা আলোচনায় বসেছিলাম। আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন সড়ক বাতিগুলো সংস্কার, গতিসীমা নির্ধারণ, সাইনবোর্ড সংযোজন এবং ১ নং গেট থেকে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত রাস্তা মেরামতের বিষয়েও উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে।