মোঃ মোস্তাকিম বিল্লাহ রাজু, ত্রিশাল, (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি:
৯০দিনে কুরআনের হাফেজ হলেন ময়মনসিংহের ত্রিশালের মাহ্দী হাসান ‘মা-বাবার স্বপ্ন ছিল আমাকে আলেম বানাবে কিন্তু আমি হতে পারিনি। তাই সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগে থেকেই নিয়্যাত করেছিলাম ছেলে সন্তান হলে আলেম বানানোর চেষ্টা করবো। ‘আলহামদুলিল্লাহ অতি অল্প সময়ে কুরআনের হাফেজ হয়ে মাহদী হাসান আমাদের স্বপ্ন পূরণ করেছে’।
কথাগুলো আবেগ জড়িত কন্ঠে বলছিলেন মাত্র ৯০দিনে কুরআনের হাফেজ হওয়া ময়মনসিংহের ত্রিশাল পৌর শহরের মাহদি হাসানের পিতা রাজীব আহমেদ। মাহদী হাসান পৌর শহরের ৮নং ওয়ার্ডে অবস্থিত ইলমুল কুরআন আদর্শ মাদরাসা থেকে নূরানী, নাজেরা ও হিফজ শেষ করেছে মাত্র ৩৮০ দিনে।
পরিবার ও মাদ্রাসা সূত্র জানায়, ৯ বছর বয়সী মাহদী হাসান মাত্র ৯০ দিনে পবিত্র কুরআনের সম্পূর্ণ ৩০ পারা হিফজ করেছেন। দাদার স্বপ্ন পূরণ করতে বাবা তাকে ভর্তি করেন ইলমূর কুরআন আদর্শ মাদরাসায়। শুরুতে নূরানী বিভাগ শেষ করে মাত্র ১৫০দিনে, নাজের বিভাগ ৮০দিনে এবং ৯০দিনে পবিত্র কোরআন হিফজ করে সে। দ্রুত সময়ে হিফজ সম্পন্ন করায় আনন্দিত তাঁর পরিবার ও শিক্ষকরা।
মাহদী হাসান ত্রিশাল পৌরসহরের ৮ নং ওয়ার্ডের মোহাম্মদ রাজিব আহমেদ ও শাপলা খাতুন দম্পত্তির দ্বিতীয় ছেলে। তার আরও এক ভাই ও এক বোন রয়েছে পরিবারে। ২০১৫ সালের ৫ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করা মাহদী হাসান বাবার স্বপ্ন পূরণে ইলমুল কুরআন আদর্শ মাদরাসার ভর্তি করেন তাঁর বাবা মোহাম্মদ রাজিব আহমেদ।
হাফেজ মাহদী হাসান বলেন, ‘অল্প সময়ে হিফজ সম্পন্ন করতে পেরে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি। আমার কাছে খুব ভালো লাগছে। আমার ওস্তাদগণ আমার জন্য অনেক মেহনত করেছেন তাই ওস্তাদদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। প্রথমে ভেবেছিলাম কুরআন হিফজ করা অনেক কঠিন হবে। কিন্তু আল্লাহ আমাকে সহজ করে দিয়েছেন। বড় একজন ভাল আলেম হওয়ার জন্য সকলের নিকট দোয়া কামনা করেন।
তাঁর বাবা রাজীব আহমেদ বলেন, আমার মা-বাবার স্বপ্ন ছিল আমাকে আলেম বানাবে কিন্তু আমি হতে পারিনি ‘তাই মা-বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে আমার ছেলে মাহদী হাসানকে মাদরাসায় ভর্তি করেছি। আল্লাহ তাকে অল্প সময়ে কুরআনে হাফেজ বানিয়েছেন। মাদ্রাসার শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি ছেলের জন্য সকলের কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন।
মাহদী হাসানের মা শাপলা আক্তার বলেন, মাত্র ৯০ দিনে আমার ছেলে কুরআনের হাফেজ হয়েছে তাতে আমি অনেক খুশি। তিনি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করেন।
তাঁর দাদী মোছাম্মৎ রোকিয়া বেগম বলেন, অনেক ইচ্ছা ছিল আমার ছেলের আলেম বানাবো, কিন্তু তা পারিনি, তাই আমি ছেলের ঘরের নাতিকে মাদ্রাসায় দিতে বলেছিরাম। আলহামদুলিল্লাহ অল্প সময়ে আজ সে কুরআনে হাফেজ হয়েছে।
ইলমুল কুরআন আদর্শ মাদরাসার পরিচালক হাফেজ আবু সাইম বলেন, ‘তামিম অল্প সময় নূরানী, নাজেরা অল্প সময়ে শেষ করে হিফজ বিভাগে সবক শুরু করে। শুরু থেকে মাত্র ৯০ দিনে আল্লাহর রহমতে কৃতিত্বের সাথে পবিত্র কুরআনের ৩০পাড়া হিফজ সম্পন্ন করেছে। তামিমের এমন মেধা অর্জনে আমরা গর্বিত। আমরা আশা করছি তামিম আন্তর্জাতিকভাবেও দেশ ও জাতির জন্য সম্মান বয়ে আনবে।