নোমাইনুল ইসলাম, বাঘাইছড়ি (রাঙ্গামাটির) প্রতিনিধিঃ
রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মাহিল্যা কবিরপুর এলাকায় পাহাড়ি সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর অতর্কিত হামলায় এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ঘটনাটি ঘটেছে গত সোমবার (২০ অক্টোবর ২০২৫) রাত ১০টার দিকে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জজ মিয়ার বাড়িতে হঠাৎ সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে এবং অন্তত ২০ থেকে ২৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এসময় নারী-পুরুষ ও শিশুরা প্রাণভয়ে চারদিকে ছুটোছুটি করে নিরাপদ আশ্রয় খোঁজেন।
এ ঘটনায় আমতলী, মাহিল্যা ও কবিরপুর এলাকার সর্বত্র তীব্র উদ্বেগ ও নিরাপত্তাহীনতা দেখা দিয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে কিছু সশস্ত্র গোষ্ঠী এলাকায় অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি ও পার্বত্য অঞ্চলের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ঘটনার পরদিন মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ (বাঘাইছড়ি উপজেলা শাখা) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, পাহাড়ি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসরত পাহাড়ি ও বাঙালি জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে সম্প্রীতির পরিবেশ বিনষ্ট করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনের সভাপতি মোঃ মোক্তার হোসেন সোহেল ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবছার হোসেন প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান— হামলায় জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান এবং উক্ত এলাকায় স্থায়ী নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য।
তারা আরও বলেন, “ভবিষ্যতে মাহিল্যা, আমতলী ও কবিরপুর এলাকায় কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠী যদি পুনরায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়, তবে তার জবাব কঠোরভাবে দেওয়া হবে।” নাগরিক পরিষদের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়— “সন্ত্রাসীরা যে দলের বা সম্প্রদায়েরই হোক না কেন, আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়।”
সংগঠনটি আরও জানায়, খাগড়াছড়ি জেলার মতো কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি যাতে বাঘাইছড়িতে সৃষ্টি না হয়, সে বিষয়ে প্রশাসনকে এখনই দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
এলাকাবাসীর অভিমত, প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। আপাতত স্থানীয়রা নিরাপত্তার আশায় প্রশাসনের দিকেই চেয়ে আছে।