মো: সোহেল রানা, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:
প্রতি বছরের মতো এবারও ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ও আকচা ইউনিয়নের শুক নদীর তীরে বুড়ির বাঁধে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঐতিহ্যবাহী মাছ ধরার উৎসব। বাঁধের গেট খুলে দেওয়ার পর আশপাশের গ্রাম থেকে হাজারো মানুষ এই উৎসবে অংশ নিতে আসেন। তবে প্রত্যাশা অনুযায়ী মাছ না পাওয়ায় অনেকেই হতাশ হয়ে পড়েছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, হাতে জাল নিয়ে সারিবদ্ধভাবে পানিতে নামেন শত শত শিকারি। কেউ নৌকায়, কেউ ভেলায় চড়ে প্রতিযোগিতার মতো উৎসাহ নিয়ে মাছ ধরছেন। নারী-পুরুষ, শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ-বৃদ্ধারাও অংশ নিয়েছেন এই উৎসবে। কারও হাতে পলো, কারও চাবি জাল, খেয়া জাল বা টানা জাল—যাদের কোনো সরঞ্জাম নেই, তারাও খালি হাতে কাঁদায় মাছ খুঁজছেন।
এ আয়োজন ঘিরে বাঁধ এলাকায় বসেছে নানা খাবারের দোকান ও অস্থায়ী হাটবাজার।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৫১-৫২ সালে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে কৃষিজমিতে সেচের সুবিধার জন্য এখানে জলকপাট (সুইসগেট) নির্মাণ করা হয়। সারা বছর মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকলেও, প্রতি বছর পানি ছেড়ে দেওয়ার সময় সাধারণ মানুষকে মাছ ধরার সুযোগ দেওয়া হয়। প্রায় ৫০ একরজুড়ে বিস্তৃত বুড়ির বাঁধ এখন একটি মৎস্য অভয়াশ্রম হিসেবেও পরিচিত।
মাছ শিকারি আসলাম, রনি ও ফারুক বলেন, “প্রতি বছরই আমরা এখানে আসি, উৎসবের পরিবেশটা দারুণ লাগে। তবে এবার মাছ খুবই কম। রিং জালের কারণে সাধারণ জাল ফেলা শিকারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।”
এদিকে মাছ ক্রেতারাও জানিয়েছেন, এবারে মাছের দাম বেড়ে গেছে এবং অনেক বিক্রেতা বাইরের মাছ এনে স্থানীয় হিসেবে বিক্রি করছেন।
ঠাকুরগাঁও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী যাকারিয়া বলেন, “এই প্রকল্প স্থানীয়ভাবে মাছের চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমরা আশা করছি।”