সানজানা তালুকদার, কুবি প্রতিনিধি:
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের উদ্যোগে পাঁচটি দেশের অংশগ্রহণে ১৭৫ টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে দুইদিনব্যাপী বিএসএসসিআরের চতুর্থ আন্তর্জাতিক সম্মেলন।
১৭ এবং ১৮ অক্টোবর এই দুই দিনে আয়োজিত হয় সম্মেলনটি।
সম্মেলনের প্রথমদিন বাংলাদেশ, ভারত ও নেপাল এবং ফিলিপাইনসহ পাঁচটি দেশের ১৭০ জন প্রতিনিধির অংশগ্রহণে আয়োজিত এ সম্মেলনে বিজ্ঞান, আধ্যাত্মিকতা, সমাজ, ইতিহাস, পরিবেশ এবং প্রযুক্তিসহ নানা বিষয়ে মোট ২৯টি একাডেমিক সেশন আয়োজন এবং ১৭৫টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়েছে। গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপনে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরাও অংশ নিয়েছেন।
এরমধ্যে প্রথম দিনের (১৭ অক্টোবর) আলোচনা পর্বে “লিঙ্গ সমতা ও নারীর ক্ষমতায়ন, ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব, শিল্প ও স্থাপত্য, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন, বাণিজ্য ও প্রযুক্তি, দর্শন ও সাহিত্য, আদিবাসী সংস্কৃতি, মিডিয়া ও শাসন, স্বাস্থ্য ও লোকশিল্প এবং ভ্রমণ ও পর্যটন”—শীর্ষক সেশনগুলো অনুষ্ঠিত হয়। এদিন একাডেমিক পর্ব শেষে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা আয়োজিত হয়।
সম্মেলনের শেষদিনে (১৮ অক্টোবর) কুমিল্লার প্রসিদ্ধ বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের মধ্যে কুমিল্লা ওয়ার সিমেট্রি, ময়নামতি জাদুঘর, শালবন বিহার এবং রানী ময়নামতির রাজপ্রাসাদ পরিদর্শন করেন। পরবর্তীতে শালবন বিহারে সমাপনী পর্ব আয়োজিত হয়।
ভ্রমণকালে উপস্থিত ছিলেন বিএসএসসিআরের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক শাহনাজ হুসনে জাহান, কোষাধ্যক্ষ মোখলেছুর রহমান, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও সম্মেলনের সমন্বয়কারী সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোহরাব উদ্দীনসহ সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীবৃন্দ।
এছাড়া ভ্রমণকালে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সোহরাব উদ্দিন অংশগ্রহণকারীদের বাংলা ও বাঙালির প্রাগৈতিহাসিক ঐতিহ্য, প্রত্ননিদর্শন ও সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক সম্পর্কে ধারণা দেন। ফলে দেশি-বিদেশি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মাঠপর্যায়ে বাংলার ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পান।
এনিয়ে সম্মেলনের প্রধান সমন্বয়কারী সহযোগী অধ্যাপক ড. সোহরাব উদ্দিন বলেন, 'আমাদের বিএসএসসিআর সংগঠন মূলত সংস্কৃতি এবং ধর্ম নিয়ে কাজ করে। সেই ধারাবাহিকতায় গবেষকদের বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ভিজিটে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, যাতে তারা বাংলার সংস্কৃতি ও ইতিহাস বাস্তবভাবে অনুভব করতে পারেন।'
তিনি আরও জানান, আগামীতে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি সম্মেলনের আয়োজন করা হবে, যেখানে শুধু শিক্ষার্থীরা তাদের গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন।
উল্লেখ্য, সর্বশেষ ২০২৩ সালে দিনাজপুরে বাশেরহাটের ব্র্যাক লার্নিং সেন্টারে বিএসএসসিআরের তৃতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।