সৈয়দ মাকসুমুল হক, মোহনগঞ্জ (নেত্রকোণা) প্রতিনিধিঃ
নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার বসুন্ধরা মোড়ে এক মনোহারী দোকানের মালিক নারায়ণ চন্দ্র পাল (৪০)-কে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে নয়টা থেকে সাড়ে দশটার মধ্যে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে বলে ধারণা করছে পুলিশ। নিহতের দোকানটি মোহনগঞ্জ থানার মাত্র একশ মিটারের দূরত্বে অবস্থিত, যা এলাকায় চরম উদ্বেগ ও ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, “রাত দশটার দিকে দোকানটা হঠাৎ বন্ধ দেখতে পাই। পরে কেউ জানায় ভেতরে রক্ত দেখা যাচ্ছে। পুলিশ এসে দরজা খুলে দেখে নারায়ণ দা মেঝেতে পড়ে আছে গলা কাটা। এমন ঘটনা এই এলাকায় কখনো ঘটেনি।”
নিহত নারায়ণ পালের পরিবার জানায়, তিনি দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় দোকান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। সবার সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল ভালো, কোনো শত্রুতা বা বিরোধ ছিল না। ফলে হত্যার কারণ নিয়ে রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে।
মোহনগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে বলেন, খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছেছি। দোকানের ভেতর থেকে নারায়ণের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে, সন্দেহভাজনদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। প্রাথমিকভাবে এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে ধারণা করছি।”
এদিকে, হত্যার খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় চরম আতঙ্ক ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা রাতের বেলা দোকানপাট বন্ধ রাখছেন এবং দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করছেন।
স্থানীয় লোকজন বলেন, এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড থানার একদম কাছেই ঘটল। যদি এখানেও নিরাপত্তা না থাকে, তাহলে গ্রাম-গঞ্জের সাধারণ মানুষ কাদের ভরসায় বাঁচবে?”
মোহনগঞ্জ পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্র বসুন্ধরা মোড় সবসময় ব্যস্ত থাকে। ঠিক সেই জায়গায় এমন ঘটনা প্রশাসনের নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রশ্ন তোলে।
পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ঘটনাটি কিসের উদ্দেশ্যে করা তা এখনও বুঝা যাচ্ছে না।
নিহত নারায়ণ চন্দ্র পালের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, খুব শিগগিরই তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হবে।
এমন নির্মম হত্যাকাণ্ড আবারও দেখিয়ে দিল, দেশের শহর থেকে গ্রাম—কোথাও সাধারণ মানুষের জীবন আজ নিরাপদ নয়।